১৩৬টি রান্নার রেসিপি রয়েছে সালভাদোর দালি-র ‘লে ডিনের দে গালা’ বইয়ে। ১২টি ভাগে বিন্যস্ত। রান্নার কথা বলতে বসার আগেই দালি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রাসঙ্গিক-অপ্রাসঙ্গিক স্মৃতির জাবর কেটেছেন। কখনও তা হাড় হিম করা, কখনও নির্লিপ্ত, কখনও অসম্ভব প্যাশনেট, আবার কখনও নেহাতই অবান্তর। লিখছেন ঋত্বিক মল্লিক।
ধরুন, আপনি ফিরে গিয়েছেন ১৯৪১ সালের কোনও একটি দিনে। আর আপনি আছেন ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হোটেলে। ‘হোটেল ডেল মন্ট’। সেখানে প্রবাদপ্রতিম শিল্পী সালভাদোর দালি-র আমন্ত্রণে আপনি যোগ দিয়েছেন একটি ডিনার পার্টিতে। নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন যেসব ইউরোপীয় শিল্পী, তঁাদের জন্য অর্থসংগ্রহের উদ্দেশ্যেই এই পার্টির ডাক দিয়েছেন তিনি। দালি-র আমন্ত্রণ, শৈল্পিক আপ্যায়নের আশা আপনার মন জুড়ে আছে নিশ্চয়।
নানাবিধ কল্পনা মনের মধ্যে বুনতে বুনতে আপনি বসলেন ডিনারে, আর দেখলেন আপনার সামনে প্লেটের ওপর রাখা আছে একেবারে জ্যান্ত সবুজ চকচকে মসৃণ একটি ব্যাং, আর একটু হলেই যে লাফিয়ে ঝঁাপ দিয়ে পড়তে পারে আপনার স্যুপের বাটিতে। এমন গা ঘিনঘিনে উভচর খাওয়ার বাসনা ছেড়ে আপনি হয়তো একটু নিরাপদ ডিশের দিকে হাত বাড়ালেন, চেয়ে বসলেন মাছেরই কোনও একটা পদ, আপনার টেবিল পর্যন্ত এসেও গেল সেটা।
কিন্তু আপনার গাছে উঠে পড়া দুই চক্ষু সার্থক করে সেই পদটি প্লেটের বদলে আপনাকে খেতে দেওয়া হল মেয়েদের হাই হিল স্টিলেটো-র মধ্যে ভরে। ঈশপের গল্পের সেই শেয়াল, না সারস, কোনটা হওয়া এই মুহূর্তে বাঞ্ছনীয়, ভেবে উঠতে না-পেরে হয়তো ভয়ে-ভয়ে একটু এদিকে-ওদিকে তাকালেন আপনি, আর অমনি চোখ পড়ে গেল আপনার ঠিক পাশে বসে থাকা দালি-র স্ত্রী গালা-র দিকে। তিনি তখন তঁার পোষ্য বনবেড়াল ‘বাবোউ’-কে ভদকা খাওয়াচ্ছেন! বুঝতেই পারছেন, একটু শিল্পসম্মত খাবারের আশায় এসে আপনাকে নিশ্চিত খালি পেটেই ফিরতে হবে, তবে আপনার মন ভরে উঠবেই এহেন নানা ‘ভিজ্যুয়াল শক’-এ। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? এই ডিনার পার্টির গল্পটা একেবারে কাল্পনিক ঠেকছে, মনে হচ্ছে এসব অবাস্তব অবান্তর ঘটনা? কিন্তু ঠিক এমনটাই ঘটেছিল আমেরিকার অভিনেতা বব হোপ-এর সঙ্গে। তবে এইসব সাংঘাতিক খাবারের অভিঘাত সামলে উঠে যদি আপনার মনে সামান্যও কৌতূহল জাগে সেদিনের রান্নাবান্না নিয়ে, তাহলে আপনি হাতে তুলে নিতেই পারেন সালভাদোর দালি-র তৈরি রান্নার বই ‘Les Diners de Gala’।
দালি বয়স যখন মাত্র ছয়, তখন থেকেই পাকা রঁাধুনি হওয়ার স্বপ্ন ছিল তঁার। যে-কথা তিনি স্বীকার করেছেন এই বইয়েরই ভূমিকায়। খাবারের প্রতি তঁার আকর্ষণ এবং ভালবাসা সেই ছোট্টবেলা থেকে শুরু, অতিপ্রিয় অবসর যাপনের উপায় ছিল উৎকট সব রান্না করা, আর সেসব একেবারে হাতেকলমে, থুড়ি, স্বাদেগন্ধে পরখ করার জন্য মাঝেমধ্যেই তিনি এমন সব ডিনার পার্টি আয়োজন করতেন, যেখানে তঁার অঁাকা ছবির মতোই উদ্ভট, আশ্চর্য, বেখাপ্পা সুররিয়াল রকমের সব খাবার পরিবেশন করা হত। এমন ১৩৬টি রান্নার রেসিপি রয়েছে এই বইয়ে। মোট ১২টি ভাগে বিন্যস্ত এসব রান্না। সেখানে যেমন আছে ভাইকিং জড়িবুটি সহকারে মাংসখেকো ক্রে-মাছ রান্নার রেসিপি, তেমনই আছে “অ্যাফ্রোডাইট’স পিউরি”-র মতো চমকে দেওয়া নামের বাহারওয়ালা পদ।
দালি-র এই রেসিপি বইয়ের প্রচ্ছদ থেকেই শুরু– খাবারের সঙ্গে সুররিয়ালের একেবারে দালিসুলভ যাত্রা। প্রচ্ছদের মাঝবরাবর একটি আধখানা মুখের ছবি, চোখের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে এক চাকার একটি সাইকেল, চালকের শুধু মুখের একটা পাশের আধখানা মাত্র দেখা যাচ্ছে, উপরে যেন একটা ট্রফি আর এই সমস্ত চরিত্র একযোগে এগিয়ে চলেছে বিশালকায় একটা লাল চিংড়ি মাছের দিকে। প্রচ্ছদের একেবারে নিচে একটা টানা কমিক স্ট্রিপ– সেখানে একটি ব্যাং ক্রমাগত লাফিয়ে উঠতে চাইছে একটা বাক্সের ভিতর থেকে, আর তার সামনে ছোট্ট একটা ছেলে বসে আছে হাতে ছুরি নিয়ে।
একটা রান্নার বই যে কত দূর উদ্ভট হতে পারে, সেই কল্পনার সর্বশেষ সীমা ছাড়িয়ে যাবে, যদি একবার উঁকি দেন মাংসের রেসিপির অধ্যায়টিতে। সেখানে বিভিন্ন প্রাণীর মাথা, ঘিলু, ফুসফুস আর জিভের ছড়াছড়ি। কোনও খাবারের নাম হয়তো ‘অ্যাভোকাডো টোস্ট’, নাম দেখে আপনি দিব্যি ভাবলেন যে সবজে সাদা অ্যাভোকাডো আসতে চলেছে আপনার খয়েরি টোস্টের উপরে পেষাই হয়ে, কিন্তু তারপরেই আপনি সভয়ে আবিষ্কার করবেন, আসলে ভেড়ার কঁাচা ঘিলু দিয়ে তৈরি হয়েছে আপনার সাধের অ্যাভোকাডো টোস্ট! ভেড়ার কথাই যখন উঠল, তখন আর-একটা রেসিপির কথাও একটু বলি– ‘লেগ অফ ল্যাম্ব শট উইথ মাদেইরা’। নিশ্চয় ভাবছেন যে, ল্যাম্ব লেগ পাওয়া যাবে মদিরা সহযোগে, কিংবা ভেড়ার পায়ের মাংস রান্না করা হবে মদ ঢেলে? কিন্তু দালি অত সহজ লোক নন। এখানে ভেড়ার পা আপনার সামনে রেখে, খানেওয়ালার একেবারে চোখের সামনে একটি ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে সেই পায়ের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে ‘মদিরা’!
যে কোনও রান্নার কথা বলতে বসার আগেই দালি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রাসঙ্গিক-অপ্রাসঙ্গিক নানা স্মৃতির জাবর কেটেছেন। কখনও হাড় হিম করা, কখনও নির্লিপ্ত, কখনও অসম্ভব প্যাশনেট, আবার কখনও নেহাতই অবান্তর সেসব বর্ণনা এ বইয়ের প্রাণ। যেমন, ক্রে-মাছের একটি রেসিপি লিখতে বসে দালি ইতিহাস খুঁড়ে তুলে এনেছেন ১৫ শতকের এক শিশু হত্যাকারীর নাম। আগাগোড়া ভয়াবহ সেই বর্ণনা: ‘The Crayfish of Paracelsus has to be served along with the heads, or torsos, of small hot-bloodied martyrs as a homage to Gilles de Rais whose most delightful ejaculations were brought about by gazing at the dying faces of his smooth-cheeked and innocent beheaded little ones, the virginal purity of whom could only have been compared to that of his former comrade at arms, The Maid of Orleans.’
কেন এরকম করেন দালি– নিজেকে অতিরিক্ত জাহির করার জন্য? এ প্রসঙ্গে আর-একজন সুররিয়ালিস্ট শিল্পী জেনিয়া সেফ অবশ্য অন্য কথা বলেন। তঁার ধারণা, দালি মানুষকে বোকা বানাতে ভালবাসতেন। যদি এই রেসিপি বইটি খুব গভীর মনোযোগের সঙ্গে আপনি পরখ করে দেখেন, খুঁটিনাটি সমস্ত বর্ণনা ছানবিন করে পড়তে থাকেন, তাহলে, ‘…you become the victim of a bad joke.’ দালি-র ছবির মতোই এ বইও আসলে ‘sort of art performance’, বস্তুত, এ হল এমন এক ‘সত্য’; যা ‘special surrealist truth.’ দালি-র ছবির মধ্যে যে উদ্ভট কৌতুক স্পষ্ট হয়ে থাকে, যা কোনওভাবেই বানিয়ে তোলা গালগল্প নয়, মিথ্যে নয়, অনেকটা সেই ধঁাচেই লেখা আলোচ্য এই রেসিপি বইটি।
দালি-র অঁাকা ছবিতে এ বই ভরে আছে। একে অবশ্য বই না বলে প্রদর্শনীও বলা যায়। খাবারের প্রদর্শনী, না কি ছবির– সেই প্রশ্ন অবশ্য পাঠকের জন্য তোলা থাক। স্বাভাবিকভাবেই, খাবারের ছবিতে এসেছে দালিসুলভ বৈশিষ্ট্য। কোথাও একটা আস্ত চিকেন রোস্টের পিঠের দিকটা যেন হয়ে উঠেছে মানুষের মাথার খুলি, যার সামনে ঝুলছে দু’-পাটি দঁাত। সূচিপত্রের পাতায় অঁাকা একটা বড় একখণ্ড মাংস, যা আসলে একইসঙ্গে একটা চপিং বোর্ড, আবার, দালি-র সেই বিখ্যাত গলে-যাওয়া ঘড়ি।
দালি-কে যঁারা কাছ থেকে কখনও-না-কখনও দেখেছিলেন, কিংবা শুনেছিলেন দালি-র শৈশব থেকে বেড়ে ওঠার সব উদ্ভট গল্প, তঁারা কিন্তু বারবারই বলেছেন, দালি-র যে এই নানা বিচিত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার ধারাবাহিক বিপর্যয় চিরকাল মুগ্ধ করে রেখেছে তঁার ভক্তদের, এর মধ্যে কোথাও কিন্তু অতিরেক নেই, এমনকী, খুব অবাক হওয়ারও কিছু নেই। সবই দালি-র কাছে অতি স্বাভাবিক, অতি সাধারণ। খাদ্য, যৌনতা আর মৃত্যু: দালি-র কাছে বারবার একই সুতোয় গঁাথা কয়েকটি গভীরতর আবেগের অনুষঙ্গে ঘুরেফিরে এসেছে। বেশ ছোটবেলায়, দালি একবার নিজের এক অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে একটা ব্রিজ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিলেন। এই অবধি শুনে সবাই থমকে যেতে পারেন ঠিকই, কিন্তু তার পরের ঘটনাটা আরও অদ্ভুত।
বন্ধুকে ফেলে দেওয়ার পর দালি শান্ত মনে চুপচাপ হেঁটে গিয়ে একটা কোনায় বসে পড়েছিলেন। পকেটে আগে থেকেই ভর্তি করা ছিল একগাদা চেরি। নিবিষ্ট মনে একটা-একটা করে চেরি বের করে টপাটপ মুখে পুরছিলেন তিনি। পরে, যৌবনে তিনি নিজে অনেকবার বলেছিলেন যে, তঁার স্বপ্ন তিনি নিজেই কোনও দিন নিজেকে সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে ফেলে দেবেন! স্ত্রী গালা, যিনি প্রাথমিকভাবে ছিলেন তঁারই বন্ধু পল এলুয়ারের স্ত্রী, তঁার প্রেমে যে কেন দালি পড়েছিলেন, সেও আর-এক আশ্চর্য গল্প। গালা নাকি তঁাকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে এত ভালবেসে ফেলেছি, যে কোনও দিন একেবারে মেরে ফেলতে পারি তোমাকে।’ এই ভয়ানক কথা শোনার পর আর দ্বিতীয়বার ভাবেননি দালি, একেবারে জীবনসঙ্গী করে নেন গালা-কে। সত্যিই, এমন নিখুঁত উদ্ভট জুড়ি পৃথিবীতে আর ক’টাই-বা হয়?
দালি যে এই নানারকম রান্নাবান্না নিয়ে বিচিত্র সব কসরত করতেন, এখানেও তঁার সঙ্গী ছিলেন গালা। দু’জনে মিলে আবিষ্কার করতেন অত্যদ্ভুত সব রান্না, কিংবা হয়তো অতি সাধারণ রান্না, কিন্তু তার পরিবেশনার মধ্যে থাকত হাড় কঁাপিয়ে দেওয়া অভিনবত্ব। নিজের লেখা কুকবুকের যে-অধ্যায়টিতে নানারকমের মাংসের পদ নিয়ে লিখে রেখেছেন দালি, তার গোড়ায় তিনি লিখছেন, ‘মৃত্যুর এই যে ছায়া আদতে অপূর্ব স্বাদের মায়া তৈরি করার ক্ষমতা রাখে, রসনার আকাঙ্ক্ষায় রসসিক্ত করে তোলে মানুষের মন, ঠিক এই কারণেই জ্যান্ত প্রাণীকে হত্যা করে, তাকে রেঁধেবেড়ে গলাধঃকরণ করার মতো একটা আপাত নৃশংস প্রক্রিয়াই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বাদবাসনার সূক্ষ্মতম নজির হয়ে আছে।’ দালি-র কাছে, মৃত্যু থেকে খাদ্য হয়ে ওঠার এই পর্যায়গুলো প্রত্যেকটাই আসলে এক-একটি ভয়াবহ সৌন্দর্যের রূপচিত্র। যে-প্রাণীটিকে খাওয়ার জন্য মেরে ফেলা হচ্ছে, তার বঁাচা থেকে মরা, আর মরা থেকে প্লেটে চালান হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকটি ধাপ দালি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন অসম্ভব অভিনিবেশের সঙ্গে। তঁার কাছে এই সমস্ত পর্যায় নিজের জীবনের স্তরের সঙ্গে মিলে যেত, এই বইয়ের পৃষ্ঠার-পর-পৃষ্ঠা জুড়ে সেই দার্শনিকতার কথা লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন দালি। এ প্রসঙ্গে মনে পড়বে ফাউস্টের কথাও, যিনি বলতেন, ‘…digestion was a combustion leading to death!’
পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, পৃথিবীর যাবতীয় কুকবুকের থেকে এ বই নানা কারণে স্বতন্ত্র ঠিকই, কিন্তু বাকিদের থেকে এ বইয়ের সবচেয়ে বড় পার্থক্য– বই লেখার উদ্দেশ্যর মধ্যেই। কোনও রঁাধুনি, বা রন্ধনবিদ, বা খাদ্যবিশারদ যখন কোনও রান্নার বই লেখেন, নিশ্চিতভাবেই তিনি চান, তঁার হাতের জাদু যেন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে পাঠকদের রসুইঘরে। কিন্তু দালি-র নিশ্চিত এহেন কোনও আশা ছিল না! এসব বিবমিষা উদ্রেককারী, দৃশ্যতই ভয় ধরিয়ে দেওয়া রান্না কেউ কখনও নিয়মিত নিজের পাকঘরে কষিয়ে রঁাধবেন, এ-কথা ভেবে তো আর দালি বই লেখেননি!
তাই ভাবছিলাম, সবার সব হিসাব উল্টে দেওয়া দালি-র নিজের হিসাবটা একটু উলটে দিলে কেমন হয়? বইটা না হয় এবার আপনারাও পড়েই ফেলুন, তারপর বাছাই করে ফেলুন উদ্ভট কয়েকটা রেসিপি। সেখানে থাকতে পারে ‘ক্যাসানোভা ককটেল’, থাকতেই পারে অতিথিদের সামনেই আস্তে আস্তে হঁা-মুখ খুলে দেওয়া ঝিনুক “দ্য মুসল্’স সারপ্রাইজ”, আপনি পেতে পারেন টেবিল ছাড়িয়ে দু’-পাশে ঝুলতে-থাকা সামুদ্রিক বান মাছ ‘কংগার অফ
দ্য রাইজিং সান’, কিংবা ‘থাউজ্যান্ড ইয়ারস ওল্ড এগস’! এ শহরেরই কোনও এক বর্ষণমুখর সন্ধ্যায়, এমন একটা ভোজের আয়োজন যদি করে উঠতে পারি, আপনি আসবেন কি?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.