Advertisement
Advertisement
Citizenship

গণতন্ত্রের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনে সুপ্রিম হস্তক্ষেপ

এ ব‌্যাপারে দেশের শীর্ষ আদালত এখনও কোনও রায় দেয়নি।

SC sternly reminded commission that it is not their job to verify the citizenship of voters

ফাইল ছবি

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:July 12, 2025 1:52 pm
  • Updated:July 12, 2025 1:52 pm   

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা কমিশনকে কড়াভাবে স্মরণ করালেন, ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে ভোটারদের নাগরিকত্ব যাচাই তাদের কাজ নয়।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীন অস্তিত্ব না থাকলে যে দেশের গণতন্ত্র এতদিনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ত তার প্রমাণ ফের মিলল। বিহারে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে যেভাবে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করল, তা এককথায় দেশের দীর্ঘ সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। এ ব‌্যাপারে দেশের শীর্ষ অাদালত এখনও কোনও রায় দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে অারও শুনানি চলবে। কিন্তু প্রথম শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টের মহামান‌্য দুই বিচারপতি যেভাবে তঁাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তাতেই প্রাথমিক কাজটুকু হয়ে গিয়েছে।

বিহারে বিধানসভা ভোটের মাত্র তিন-চার মাস অাগে কমিশনের অাচমকা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন করতে চাওয়ার উদ্দেশ‌্য কী– তা সুপ্রিম কোর্টের মহামান‌্য দুই বিচারপতির করা সওয়াল-জবাবে অনেকটাই উন্মোচিত হয়ে গিয়েছে। ভোটার তালিকার এই বিশেষ নিবিড় সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অাপত্তি জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দে‌্যাপাধ‌্যায়। বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে কেন্দ্র ঘুরপথে দেশে নাগরিকপঞ্জি তথা এনঅারসি তৈরির উদে‌্যাগ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নোটবন্দি চালু করেছিলেন তখনও তৎক্ষণাৎ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মমতা। পরে বোঝা গিয়েছিল কেন তঁার প্রতিবাদ সঠিক ছিল। এ বারও একই ঘটনা ঘটল। সুপ্রিম কোর্টের মহামান‌্য বিচারপতিরা খুব কড়া ভাবে কমিশনকে এই কথা স্মরণ করিয়ে দিতে বাধ‌্য হয়েছেন যে ভোটার তালিকা সংশোধন করার নামে ভোটারদের নাগরিকত্ব যাচাই কমিশনের কাজ হতে পারে না।

সংবিধানের ৩২৬ ধারায় কমিশনকে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির অধিকার দেওয়া। তালিকায় যে শুধু ভারতীয় নাগরিকরাই স্থান পাবে, বলাই বাহুল‌্য। সংবিধানে কোথাও বলা নেই যে কমিশন ভোটারদের কাছ থেকে নথি দেখে নাগরিকত্ব বিচার করবে এবং তাও মাত্র এক মাসে! অতীতে কখনও তারা এই কাজ করেনি। ১০ বছর অন্তর কমিশনের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন করার কথা। বিহারে শেষবার তা হয়েছিল ২০০৩ সালে। তা হলে ১০ বছর পর কেন সেই কাজ করা হয়নি? কেন হঠাৎ বিধানসভা ভোটের তিন-চার মাস অাগে এর দরকার পড়ল?

মমতা বন্দে‌্যাপাধ‌্যায়ের অভিযোগ, বাংলার বিধানসভা ভোটকে নিশানা করে কমিশনকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রে বিজেপি কিছু ভোটারের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে। অাধার, ভোটার বা রেশন কার্ডের মতো সর্বগ্রাহ‌্য পরিচয়পত্রগুলি কেন সংশোধনের কাজে বিবেচ‌্য হচ্ছে না তার কোনও সদুত্তর প্রাথমিকভাবে কমিশন কোর্টে দিতে পারেনি। কমিশনের তালিকায় থাকা নথি যে অধিকাংশ গরিব মানুষের পক্ষে অল্প সময়ে জোগাড় করা অসম্ভব তা বিচারপতিরা জানিয়ে দিয়েছেন। কমিশনের বিলি করা ফর্ম পূরণ না করতে পেরে যে অসংখ‌্য পরিযায়ী শ্রমিক ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে তাও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ