ইন্ডাস্ট্রিতে দশ বছরের জার্নি থেকে সাহিত্য নির্ভর নতুন ছবি ‘ভূতপূর্ব’তে কাজ নিয়ে আড্ডায় অভিনেত্রী অমৃতা চট্টোপাধ্যায়। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
অমৃতাকে কি ভূতে ধরল?
…এরকম ভূত ধরুক না (হাসি)। সুন্দর সুন্দর সিনেমার ভূত ধরলে কোনও অসুবিধা নেই।
ভূত নিয়ে একবার আলোচনা শুরু হলে তো শেষ হওয়ার নয়। আপনি কি ভূতে বিশ্বাস করেন?
…যারা আমরা বাংলা সাহিত্য এবং শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় পড়ে বড় হয়েছি ভূতে বিশ্বাস করতে আমাদের ভালোই লাগে। মিষ্টি ভূত, ভালো ভূত বা ভূতের ছবিতে যেমন ভূত দেখতে পাই ভালোই লাগে। তবে ‘কনজিউরিং’-এর ধরনের ভূত আমার পছন্দ নয়। ওই সব ছবি দেখলে চার রাত্তির ঘুমতে পারব না।
ভূতপূর্ব’ ছবিটা তিনটি গল্পের সমাহার। ‘মণিহারা’ অংশে আপনি রয়েছেন, সত্যম ভট্টাচার্যর সঙ্গে। এই শুটিংয়ের সঙ্গে ভূতের কোনও যোগ ছিল?
…না, আমরা খুব ব্যস্ত ছিলাম কাজ করতে। তেঁনারা বুঝতেই পেরেছিলেন, যে পাত্তা পাবেন না। তাই বোধহয় আমাদের গল্পে ওঁরা বিরক্ত করেননি থ্যাঙ্কফুলি। (হাসি)
একদিকে আপনার অভিনীত ‘ভূতপূর্ব’ রিলিজ হচ্ছে শুক্রবার। অন্যদিকে ‘দর্শু’ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নতুন কাজ আসছে ‘সন্ধে নামার পরে’। দুটোতেই কি রহস্য যোগ?
…‘সন্ধে নামার পরে’ ক্রাইম থ্রিলার। দুটো রিলিজের সামনে দাঁড়িয়ে ভালো লাগছে। এক্সাইটেড বলব। কাকতালীয়ভাবে এই মাসে আমার তিনটি রিলিজ হল। ‘চাবিওয়ালা’-র থার্ড উইক হল। ‘ভূতপূর্ব’ আসছে। মনের কাছের কাজ দুটোই। আর ‘সন্ধে নামার পরে’-ও আসছে। পর পর কাজ এলে ভালোই লাগে।
প্রায় দশ বছর হয়ে গেল ইন্ডাস্ট্রিতে। এবার কি মনে হচ্ছে স্বীকৃতি মিলছে একটু একটু করে?
…মিললে তো ভালোই। আমরা তো কাজ করি মানুষের কাছে আরও বেশি পৌঁছনোর জন্য। যাতে একটা কাজ দেখে আরও অনেক কাজ আসে। আমার ক্ষেত্রে যেটা থ্রু আউট হয়ে এসছে, একটা কাজ থেকেই আরেকটা কাজ এসেছে। কাজেই এক-একটা কাজ রিলিজ করা, মানুষের কাছে পৌঁছনো এবং ফ্রেটারনিটির মানুষের কাছে পৌঁছনো জরুরি। কারণ, কাজ না দেখলে লোকে কীভাবে কাস্ট করবেন। আর ‘ভূতপূর্ব’ সাহিত্য ভিত্তিক কাজ, ফলে প্রত্যাশা আছে। কাজ থেকে কাজ পাওয়ার কথা যেটা বললেন একদম ঠিক। আবার এটাও তো সত্যি টলিউডে কাজ পেতে অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে।
অ্যাবসোলিউটলি।
একটা থাকে লবির বিষয়। অন্যটা শোনা যায় আপস করার প্রসঙ্গ। এমন কিছুর মুখোমুখি হয়েছেন কখনও?
…মানে ভুলভাল প্রস্তাবের কথা বলছেন? সেটা আমার মনে হয় দু’টো কারণে হয়নি। এক তো, বাবা সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত এবং এত সিনিয়র জার্নালিস্ট। আমি চাই কি না-চাই সবাই জেনে গিয়েছিল যে আমি অমুকের মেয়ে। অতএব তাকে তো অফিসেই ডাকতে হবে, সুইস হোটেলে না ডেকে (হাসি)। দ্বিতীয়ত, সম্ভবত দ্য ওয়ে আই ক্যারি মাইসেলফ, দেখে হয়তো মনে হয়, ডিফিকাল্ট টু অ্যাপ্রোচ। অনেকের সেটা মনে হয় শুনেছি। না হলে চাপ হত আমার।
আর লবির বিষয় ফেস করেছেন কখনও?
…এইটা ফিগার আউট করার চেষ্টা করতে হয়, যে কে কার লবিতে। এটা সিঁড়ি ভাঙার অঙ্কের মতো। সেই যে আমরা অঙ্ক শিখেছিলাম, ‘বদমাস’ (BODMAS) দিয়ে। ইন্ডাস্ট্রি সেই ‘বদমাস’-এর অঙ্কের মতো। যেটা সল্ভ করতে করতে যেতে হবে। এক সময় তুমি দেখবে যে, তুমি ছাড়া সবাই লবির অংশ (হাসি)। হয়তো যে সবচেয়ে বেশি কাজ করছে, তারও মনে হয় আমি যদি আরও বেশি কাজ পেতাম, আর ভালো কাজ পেতাম। আমরা তো সকলেই ভালো সুযোগ চাই।
বাবা সাংবাদিক বলে একটা দিক থেকে যেমন প্রোটেক্টেড ফিল করেন, তেমন অনেকে মনে করতে পারে এটা আপনার কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাডভান্টেজ। তাই না?
…বলতে পারেন। কিন্তু সবকিছুর অনেকগুলো ক্রাইটেরিয়া হয়। বাবা যে ধরনের সাংবাদিকতা করেছেন অনেক বছর ধরে, বাবা নিজের কাজের ক্ষেত্রেও কাউকে কোনওদিন ম্যানিপুলেট করেননি। কারও থেকে বাড়তি সুবিধা নেননি। কারও থেকে উপহারও নেননি। সেক্ষেত্রে বাবা ম্যানিপুলেট করবেন বা চারজন ফাইনান্সার অন বোর্ড নিয়ে আসবেন, এই ক্ষমতা আমার বাবার থাকলেও প্রয়োগ করেননি। বা নেই হয়তো। অনেকের আছে, তারা ব্যবহার করেন। এবার তোমার কোন ক্ষমতা তুমি ব্যবহার করবে বা করবে না, সেইটা আপনারই সিদ্ধান্ত। তবে এটা শুনতে হয়েছে, ‘ও বাবা ও তো সাংবাদিকের মেয়ে। ওকে কাস্ট করব না। সাংবাদিকের মেয়ে অভিনয় করতে এসছে, সাংবাদিক হল না কেন! আমি ওকে কাস্ট করব না।’ এটা আড়ালে শুনেছি আমি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.