সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা পরবর্তী অধ্যায়ে ‘বদলের বাংলাদেশে’ একাধিক কর্মকাণ্ড দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে সভ্যসমাজের। লাগাতার ভারতবিরোধী মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে নতুন বাংলাদেশ। কখনও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটে, ইন্ধিরা গান্ধীর নামাঙ্কিত গ্রন্থাগার কখনও বা পাবনার ‘রমা’ সুচিত্রা সেনের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির উপর আঘাত হেনেছে ইউনুস সরকারের। এবার বদলের বাংলাদেশে ধূলিস্যাৎ হওয়ার পথে সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) পৈতৃক ভিটে। ময়মনসিংহের যে বাড়িটি কিংবদন্তী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারতীয়দের একাংশ। এবার বিতর্কে পড়ে ইউনুস সরকারের সাফাই, ময়মনসিংহ শহরের যে বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তার সঙ্গে রায় পরিবারের কোনও সম্পর্কই নেই।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করার পরই ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আর্জি জানানো হয়েছিল, উপেন্দ্রকিশোরের স্মৃতিবিজড়িত সত্যজিৎ রায়ের ওই পৈতৃক ভিটে যেন ভাঙা না হয়। বরং এই বাড়িটির পুনর্নিমাণ ও সংরক্ষণে পাশে থাকার আশ্বাস দেয় ভারত সরকার। জানা যায়, পদ্মাপাড়ের সংস্কৃতিমনস্কদের প্রতিবাদে সেদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও রিপোর্ট তলব করে পাঠায়। এরপরই বাড়ি ভাঙার কাজ স্থগিত হয় বলে খবর। এবার সেই প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে যে, “রায় পরিবারের সঙ্গে ওই বাড়ির কোনও সংযোগ নেই। বুধবার একটি জরুরি বৈঠক হয় এই বিষয় নিয়ে। সেখানেই ওই বাড়ির সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে ভেঙে ফেলা বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে নয়। ওই বাড়ি আদতে স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরির তৈরি করা। ‘শশী লজ’ নামে ওই জমিদার তাঁর বাংলোর পাশে অতিরিক্ত ওই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন পরিচারক, কর্মীদের থাকার জন্য। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের শিশু অ্যাকাডেমি সেই বাড়িটি ব্যবহার করা শুরু করে সরকারি কার্যালয় হিসেবে।”
Detailed inquiry into archive/records in reconfirm: the building being demolished in district has no historical/familial link to iconic Bengali filmmaker Ray or his ancestors.
— Ministry of Foreign Affairs (@BDMOFA)
বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি জারির পরই ওয়াকিবহলমহলের একাংশ এই পদক্ষেপকে ড্যামেজ কন্ট্রোল হিসেবেই দেখছে। বাংলাদেশের সংবাদমধ্যমগুলির প্রতিবেদনে দাবি, শতাব্দী প্রাচীন একতলা বাড়িটি ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমি ব্যবহার করা শুরু করে। ২০০৭ সালের পর থেকে বাড়িটি অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। পরিত্যক্ত বাড়িটি ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনায় কাজ শুরু করছে শিশু অ্যাকাডেমি। জানা যাচ্ছে, শিশু অ্যাকাডেমিই বাড়িটি ভেঙে বহুতল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে বাড়িটির সামনের অংশের প্রায় পুরোটাই ভাঙা হয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.