ছবি: ইনস্টাগ্রাম
‘আমার পরিচিতি কাজ পেতে সাহায্য করেনি’, দশ বছর অপেক্ষার পর ছবির প্রধান নারীচরিত্রে দেবলীনা কুমার। সাক্ষাৎকার শম্পালী মৌলিক-
এতগুলো বছর সিনেমা-টেলিভিশনে নাগাড়ে কাজের চেষ্টা করে যাওয়া এবার কার্যকরী হচ্ছে মনে হচ্ছে?
… আমি মাঝখানে দু’বছর টেলিভিশন চেষ্টা করেছিলাম। শহর এবং দেশের বাইরে এত অনুষ্ঠানের চাপ থাকে আমার যে কারণে ইচ্ছে থাকলেও নিয়মিত কাজ করতে পারি না টিভি-তে। আর কলেজে পড়ানোর চাপও থাকে। যেটা কার্যকরী হয়েছে, এত বছর ধৈর্য ধরে থাকা। সম্প্রতি নির্মলদা (চক্রবর্তী) আমাকে একটা ছবি পাঠালেন, আমার ‘জয়ী’ বলে যে শর্ট ফিল্মটা হয়েছিল প্রথম, উইন্ডোজ-এর, যার দশ বছর পূর্ণ হল। এটা দেখে মনে হল, নাহ্ অনেকটা পথ কাটিয়ে ফেলেছি। পেশেন্স হ্যাজ পেড অফ। আমি কখনওই চটজলদি কিছুতে বিশ্বাস করি না। আমার ক্ষেত্রে সেটা ঘটেও না। সে আমার পিএইচডি হোক বা ছবি। চেষ্টা করেছি একশো শতাংশ দিয়ে কাজ করার, বাকিটা দর্শক বলবে।
‘রাস’ ছবিতে প্রথমবার বড়পর্দায় প্রধান নারীমুখ আপনি। আজ ছবির মুক্তি। এর উত্তেজনা বা চাপ কতটা?
…চাপটা বেশি, উত্তেজনা আছে হয়তো ভেতরে। সেটা খুব একটা অনুভব করছি না। যখন শুনেছিলাম তথাগতদা এরকম একটা ভাবছে, খুব আনন্দ হয়েছিল, সেই সঙ্গে একটা ভয়-ও ছিল, এরকম কি সত্যিই হবে! শুটিংয়ের সময়েও ভালোই লাগছিল। তবে আমরা তো কখনওই এরকম বলতে পারি না, ফাইনালি কবে রিলিজ হবে। এবং মাঝখানে যুদ্ধের আবহ ছিল, ফলে কিছুটা সংশয়ে ছিলাম। এবার রিলিজ, টেনশনই বেশি।
ছবিতে আপনার চরিত্রটা কেমন?
… চরিত্রটা একদম ‘দেবলীনা’-র মতোই (হাসি)। একটু ডানপিটে, স্পষ্ট কথা বলে, প্রেমিকা ‘রাই’ তবে টিপিকাল নায়িকাদের মতো নয়। বাস্তব জীবনে দেবলীনা যেমন প্রেম করে, বন্ধুত্বপূর্ণ প্রেম। এই চরিত্রটাও তেমনই প্রেমেই বিশ্বাসী।
ট্রেলারে দেখলাম লাঙল চালাচ্ছেন, সাইকেলও, প্রস্তুতি কেমন ছিল?
…আমি নিজে যেহেতু নৃত্য পরিচালনা করি, অনুশীলনেই বিশ্বাস করি। কিন্তু কখনও অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিইনি শুরুতে। পরে বেণীদির কাছে অভিনয় শিখেছি, থিয়েটার করেছি। ক্যামেরা কী করে ফেস করতে হয় সেই প্রশিক্ষণ ঘটেনি। সেই প্রশিক্ষণটা তথাদা হাতে গড়ে দেখিয়েছে। এবং আমরা প্রায় দু’-আড়াই মাস রিহার্সাল করেছি। সংলাপ কীভাবে বলব, কী চাইছে জানতে হত। কারণ, আমি একেবারে দক্ষিণ কলকাতার মেয়ে। ছবির মেয়েটি মফসস্লের, ফলে তার সারল্য রয়েছে। পরিচালক কেমন চাইছে জানা দরকার ছিল। আর কোনও কিছুতে স্ট্রিক্টলি আটকে দেয়নি তথাদা। তাতে খুব সুবিধা হয়েছে।
অনির্বাণ চক্রবর্তী, অনসূয়া মজুমদার, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কর দেবনাথ-এর মতো ভালো অভিনেতারা রয়েছেন। চ্যালেঞ্জ ফিল করেছেন?
… আমার এমনিই মনে হয়, অভিনয়টা চেষ্টা করছি হয়তো, আগের চেয়ে বেটার হয়েছে হয়তো, অনেকটাই শেখার বাকি আছে। কিন্তু এরা এতটাই ভালো, এদের পাশে চ্যালেঞ্জটাও বড় শব্দ আমার কাছে।
বিধায়ক দেবাশিস কুমার আপনার বাবা, অনেকেই মনে করেন প্রভাব খাটিয়ে আপনার যাত্রাপথ মসৃণ হয়েছে? কী বলবেন?
… সেটা তো এই দশ বছরের প্রমাণ। যদি সত্যিই খুবই এই পরিচয় ব্যবহার করতে পারতাম…কী আর বলব। আমি খুব ছোটখাটো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও, হয়তো কোনও অনুষ্ঠানে আমার নাচ আগে আছে, সেটা পরে করে দেওয়া হল, সেখানেও বলে উঠতে পারি না। যে আমার অনুষ্ঠানটা একটু আগে করা যাবে? হয়তো আমার বাবা সেই ক্লাবের সেক্রেটারি। ছবি তো অনেক বড় ব্যাপার। আমার কাছে কোনও খারাপ প্রস্তাব কখনও আসেনি ঠিকই। আমার পরিচিতি অনেকে বেশি ঠিকই, কিন্তু সেটা কাজ পেতে সাহায্য করেনি। সাহায্য করলে দশ বছর অপেক্ষা করতে হত না। বিশ্বাস করি ইন্ডাস্ট্রির ইনসাইডাররা সেটা এত বছরে জেনে গেছে। কিন্তু বাইরের মানুষ তো জানবে না।
গৌরব চট্টোপাধ্যায় আপনার স্বামী, বড়পর্দার বড় কাজ নিয়ে কী বলছেন?
… ও খুবই এক্সাইটেড। খুবই সাপোর্টিভ। আমাদের দুজনেরই খুব ইর্যাটিক শেডিউল। ও খুবই এনকারেজিং আমার কাজের ক্ষেত্রে। আমাদের টিজারও পোস্ট করেছে। ট্রেলার দেখে ভালো বলেছে। তবে ও কখনও বেশি বলে না। জিজ্ঞেস করাতে বলল, ‘পুরোটা দেখে তবে বলব’।
কারণে-অকারণে আপনাকে ট্রোলড হতে হয় সোশাল মিডিয়ায়। কীভাবে হ্যান্ডেল করেন?
… এখন একটু পরিণত। যদিও আমার মন ততটা কঠিন নয়। এটা গৌরবের থেকে শিখেছি, যেহেতু আমরা পাবলিক লাইফে থাকি, আমাদের সব সময় অত কমেন্ট পড়তে নেই। তা হলে আমাদেরই কষ্ট বেশি হবে। এখন জানি যেখানে নেগেটিভ কমেন্ট আসতে পারে, এড়িয়ে যাই। তাও তেমন কিছু চোখে পড়লে কষ্ট হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.