Advertisement
Advertisement
Celebrity Der Durga Puja

সম্পর্ক টিকবে কিনা, পুজোয় সবথেকে ভালো বোঝা যায়: অনুষা-আদিত্য

পুজোর প্রেম থেকে আড্ডা, নস্ট্যালজিয়া এবং এবারের পরিকল্পনা নিয়ে অকপট অনুষা-আদিত্য।

Durga Puja 2025: Anusha Biswanathan, Aditya Sengupta shares durga puja plans

নিজস্ব চিত্র

Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:September 25, 2025 7:48 pm
  • Updated:September 25, 2025 7:49 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোর সঙ্গে প্রেমের যেন বরাবরের নিবিড় যোগাযোগ! সঙ্গীর পাশে দাঁড়িয়ে অষ্টমীর অঞ্জলি হোক কিংবা দুষ্টু-মিষ্টি চাহনিতে ভোগ বিতরণ বা দশমীর সিঁদুরখেলায় লুকিয়ে রাঙিয়ে দেওয়া সিঁথি…, আলতো স্পর্শ, হালকা হাসি আর ইতস্তত চোখাচোখিতেই কিছু বন্ধুত্ব বাঁক নেয় প্রেমের মোড়ে। সিগন্যাল ‘ওকে আছে’ না ‘নেই’? সেটা বোঝার মোক্ষম সময় নাকি পুজো! এমনটাই মত অনুষা বিশ্বনাথনের। পুজোর প্রেম থেকে আড্ডা, নস্ট্যালজিয়া এবং এবারের পরিকল্পনা সংবাদ প্রতিদিন-এর সঙ্গে ভাগ করে নিলেন আদিত্য সেনগুপ্ত এবং অনুষা বিশ্বনাথন।

Advertisement

পুজো পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন যেতেই অনুষা জানালেন, “কোনও একটা দিন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গেট-টুগেদার মাস্ট! সাধারণত আমার বাড়িতে প্রতিবার সপ্তমীর আড্ডা বসে। স্কুল-কলেজ সব মিলিয়ে আমার বন্ধুসংখ্যা অনেক। নাচ-গান, আড্ডায় বাড়িতে দারুণ জলসা জমে। তবে এবার সপ্তমী বাদে অন্য কোনও দিন সেই গেট-টুগেদারের আয়োজন করব। যাতে অষ্টমীর সকালে উঠে অঞ্জলি দিতে পারি।” অন্যদিকে আদিত্য বলছেন, পুজোয় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোই এবার তাঁর মূল লক্ষ্য। কেন? অভিনেতা বলছেন, “কারণ এর আগে অনেকগুলো পুজো কেটে গিয়েছে যেগুলো বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটানো হয়নি। কলেজে পড়ার সময়ে বাইরে ছিলাম। তাছাড়া সাধারণত বন্ধুদের সঙ্গেই পুজোয় বেশি সময় কাটানো হয়। তাই এবার ঠিক করেছি মা-বাবাকে বেশি সময় দেব। পুজোর কোনও একটা দিন বাড়িতে প্রজেক্টার চালিয়ে সপরিবারে, সবাহনে (দুই পোষ্য) সিনেমা দেখব।”

অনুষা জানালেন, “শৈশবের মতো পুজো কাটানো এখন হয় না ঠিকই। কারণ বড় হওয়ার পর প্রতিবার কোনও না কোনও কাজ থাকে এসময়ে। ঈশ্বরের আশীর্বাদে এভাবেই ব্যস্ত থাকতে চাই। ছোটবেলায় দেশপ্রিয় পার্ক, ট্র্যাঙ্গুলার পার্কের মেলায় যেতাম দাদুর হাত ধরে। গাড়িতে করে সপরিবারে পুজো পরিক্রমায় যেতাম। এবং রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে যতগুলো ঠাকুর দেখতাম, সেগুলিকেও ‘আমার দেখা পুজো’র তালিকায় ঢুকিয়ে দিতাম। এখন অবশ্য কাজের সূত্রেই পুজো পরিক্রমা হয়। তাছাড়া শৈশবের মতো বড় পুজো প্যান্ডেলগুলিতে লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখার মতো এনার্জি আমার নেই এখন। তবে বছরখানেক আগে পর্যন্ত প্যান্ডেল হপিং করতে যেতাম।” পুজোর সময়ে আলোয় আলোয় তিলোত্তমা যেন মায়াবী রূপ ধারণ করে। সেপ্রসঙ্গ টেনেই আদিত্য জানালেন, “আমার মা-বাবা খুব ভালোবাসেন আলোয় মোড়া কলকাতা দেখতে। সেকথা ভেবেই মা-বাবা আর দুই পোষ্যকে নিয়ে বেরনোর প্ল্যান করেছি। প্যান্ডেল হপিং আমরা খুব একটা করি না। তবে বাড়ির কাছের দু’-একটা ঠাকুর দেখি।” তবে খেয়ালীপুত্রর আক্ষেপ, এখন আর অঞ্জলি দেওয়া হয় না তাঁর। কেন, বাদ সাধল কীসে?

আদিত্য জানালেন, “ছোটবেলায় যে পাড়ায় আমি বড় হয়েছি, সেখানকার পুজোয় প্রতিবার নিয়ম করে অঞ্জলি দিতাম। শুধুমাত্র অষ্টমী নয়, প্রতিদিন অঞ্জলি দেওয়ার রেওয়াজ ছিল আমার। বাকি বছর হয়তো অত পুজোআর্চার মধ্যে না থাকলেও দুর্গাপুজোর সময়টা আমি খুব ভক্তি করে পুজো দিই। শৈশবে পুজোর নিত্যদিন অঞ্জলি দেওয়াটাকে খুব মিস করি। নতুন পোশাক পরে সকাল ৯টার মধ্যে তৈরি হয়ে যেতাম। আর সকাল দশটার মধ্যে প্যান্ডেলে। ওখানে ভোগ-প্রসাদ খেতাম। পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, গুরুজনদের সঙ্গে কুশলমঙ্গল বিনিময় হত। এখন যেহেতু পাড়া পরিবর্তন হয়েছে, তাই শৈশবের ওই স্মৃতিগুলো খুব মিস করি। তাছাড়া বর্তমানে যেখানে থাকি, সেই পাড়ায় খুব একটা বড়পুজো হয় না। অঞ্জলিও আর এখন দেওয়া হয় না তাই। তাই ছোটবেলার পুজোর ‘ভাইব’টা মিস করি। তবে প্রতিবার নিয়ম করে অষ্টমীর দিন ভোগ আসে আমাদের বাড়িতে। ইচ্ছে আছে এবার অঞ্জলি দেব।”

কথাপ্রসঙ্গেই অনুষা জানালেন, “আমাদের আড্ডায় আদিত্য যা দুষ্টুমি করে…! একবার তো বন্ধুদের পাণীয়ে আমার লেন্সের সলিউশন মিশিয়ে সকলকে খাইয়ে দিয়েছিল। যদিও দু-একফোঁটা দেওয়ায় কারও কিছু হয়নি। এবং এসব রসিকতা ওর কারণ ছাড়াই চলতে থাকে।” সাংঘাতিক! তারপরও প্রেম টিকল? অভিনেত্রীর রসিকতা, “একটা সম্পর্ক টিকবে কিনা, সেটা পুজোয় সবথেকে ভালো বোঝা যায়, এটা আমার বিশ্বাস। আমার আর আদিত্যর প্রেমও পুজো রিলেটেড।” একে-অপরের জন্য কী শপিং করা হল? আদিত্য বলছেন, “অনুষাকে শাড়িই দিই। কারণ ওকে শাড়িতে দেখতে আমার ভালো লাগে। তবে এবার তালিকায় গয়না, অ্যাকসেসরিজ যোগ হয়েছে।” অনুষা? অভিনেত্রী বলছেন, “পাঞ্জাবি, শর্ট কুর্তা এগুলোই উপহার দিই আদিত্যকে।” নিজেদের জন্য কী কেনা হল? আদিত্য বললেন, “আমার জন্মদিন আর পুজো খুব কাছাকাছি পড়ে প্রতিবার। তাই ছোটবেলা থেকেই জন্মদিন আর পুজো জামাকাপড় একসঙ্গে পেয়ে যেতাম। আগে মা-বাবা পছন্দ করে হয়তো পাঁচটা জামা এনে দিতেন। আমি তাতেই সন্তুষ্ট। এখন আমি একা কিংবা অনুষাকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে যাই। পুজোয় আমার পছন্দ ট্র্যাডিশনাল পোশাক।” অনুষার সংযোজন, “কেনাকাটির ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের দিকে খুব একটা ঝোঁক নেই আমার। যা মানায়, সেটাই আমরা কিনি এবং পরি।”

আর পুজোর খাওয়া-দাওয়া? ভোজন রসিক আদিত্যর আগেই রন্ধন পটিয়সী অনুষার উত্তর, “এইসময়ে আমরা রেস্তরাঁগুলিতে খুব একটা যাই না। আমার এক বন্ধুর রেস্তরাঁ রয়েছে, সেখানেই আগে থেকে অর্ডার দিয়ে দিই। আমি রান্না করতে খুব ভালোবাসি, তবে পুজোর দিনগুলোয় রান্না করার একদম সময় পাই না।”

পোশাক : অভিষেক রায়, রয় ক্যালকাটা
অলঙ্কার : অভিষেক রায়, জলসাঘর
মেকআপ :প্রীতম দাস

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ