সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেড় মাসের মধ্যে আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার পুনারবৃত্তি ঢাকায়। সেবার বিমান ভেঙে পড়েছিল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর। এবারে ক্লাস চলাকালীন স্কুলের উপরে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ বায়ুসেনার বিমান। শেষ প্রাপ্ত খবরে, সোমবারের দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৭। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড়শোর বেশি। তবে উল্লেখ্য, নিহত ও আহতের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। পঠনপাঠনের মধ্যেই বেঘোরে প্রাণ গেল পড়ুয়াদের। ঝলসে যায় প্রায় শ’দুয়েক ছাত্র। ধ্বংসস্তূপের সেই আতর্নাদ কানে বাজছে জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরিদের। শোকপ্রকাশ করেছেন স্বনামধন্য পরিচালক তথা বাংলাদেশের তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রকের উপদেষ্টা মোস্তাফা সরওয়ার ফারুকী।
সোমবার স্কুলের ক্লাস তখনও শেষ হয়নি। কোনও কোনও শ্রেণীকক্ষে তখন সেদিনের মতো শেষপর্যায়ের ক্লাস চলছে। আচমকাই এক বিকট শব্দে স্কুলের উপর ভেঙে পড়ল বিমানটি। তৎক্ষণাৎ বিস্ফোরণ। দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু স্কুল ভবনের একাংশ। একসঙ্গে ঝলসে যায় প্রায় শ’দুয়েক ছাত্র। ওই স্কুলের যে ভবনে বিমানটি ভেঙে পড়ে সেখানে প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হত। তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কক্ষের সামনে বিমানটি ঢুকে যায়। সেই সময়ে ওই দুই শ্রেণিকক্ষেই ক্লাস চলছিল। অনেক দূর থেকেও সেই কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছে। বিমানের আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের আটটি ইঞ্জিন। ঘটনার বিধ্বংসীরূপ বিবরণেই ঠাহর করা যায়। ধ্বংসস্তূপ থেকে শুধুই কচিকাচাদের কান্না, আর্তনাদ! মুহূর্তের মধ্যে প্রায় শ্মশানে পরিণত ওই শ্রেণিকক্ষ! সেসব খবর শুনে টেভির পর্দায় চোখ রাখতে পারছেন না জয়া আহসান। ‘ডিয়ার মা’-এর প্রচার এবং ‘অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিংয়ের জন্য প্রায় একমাস ধরেই কলকাতায় রয়েছেন অভিনেত্রী। এমতাবস্থায় ঢাকার জন্য প্রাণ কাঁদছে জয়ার। অভিনেত্রীর মন্তব্য, “আমি টেলিভিশনের দিকে তাকাতে পারছি না। এতগুলো কচি কচি বাচ্চার এমন দুর্ভাগ্যজনক বিদায়, কীভাবে মেনে নেওয়া যায়! আহারে, এই বাচ্চাদের মা-বাবারা তাঁদের শূন্যতার ভার কীভাবে বইবেন? তাঁদের মনে শক্তির সঞ্চার ঘটুক। যে বাচ্চারা আহত হল, তারা যেন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, সেই প্রার্থনাই করি।”
জয়ার মন খারাপের আঁচ তাঁর সোশাল মিডিয়াতেও। প্রোফাইলে ধ্বংসস্তূপে ছবি। কখনও বা উদ্ধারকারীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছেন জয়া আহসান। নিহত পড়ুয়াদের জন্য নিয়তির কাছে জবাব চাইলেন চঞ্চল চৌধুরি। বিধ্বংসী আগুনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া স্কুলের উপর ব্যাগ কাঁধে কচিকাচারা যেন পরপারে চিরছুটিতে যাচ্ছে, এমনই একটি হৃদয়বিদারক প্রতীকী ছবি শেয়ার করে শোকপ্রকাশ করলেন অভিনেতা। চঞ্চল লিখছেন, ‘চোখ বন্ধ করলেই পাখিদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে। অথবা, আজ আমাদের কোন হোমওয়ার্ক নেই! বুকটা ভেঙে যাচ্ছে। মনের অজান্তেই চোখ ভিজে যাচ্ছে বারবার। এগুলো দুঃস্বপ্ন হলে বেঁচে যেতাম। হায়রে নিয়তি। এগুলোই সত্যি, এগুলোই বাস্তব।’ শোকে মুহ্যমান ফারুকীর মন্তব্য, “এমন মর্মান্তিক ঘটনা। অনেকের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক! তাদের বেশিরভাগই ছোট বাচ্চা।” পরিচালক বেশকিছু সরকারি বিবৃতিও শেয়ার করেছেন। যেখানে জানানো হয়েছে, “রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রত্যেকের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। নিহতদের প্রত্যেকের নাম-পরিচয় যাচাই ও তালিকা করা হচ্ছে। যেসব মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছে না, সেগুলো ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা হচ্ছে। ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে আহতদের সুচিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.