Advertisement
Advertisement
The Kerala Story

‘কেরালা স্টোরি’র জাতীয় সম্মান নিয়ে বিতর্ক, কেন পুরস্কৃত ‘প্রোপাগান্ডা ছবি’? মুখ খুললেন জুরি চেয়ারম্যান

জুরি বোর্ড কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই মুখ খুললেন চেয়ারম্যান আশুতোষ গোয়ারিকর।

Jury Chairman Reveals REAL Reason Why The Kerala Story Won 2 National Awards
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 2, 2025 12:44 pm
  • Updated:August 2, 2025 12:44 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার ৭১তম জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র নাম ঘোষণা হতেই নেটভুবনজুড়ে বিতর্কের স্ফুলিঙ্গ! আপত্তি তুলেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। ২০২৩ সালে মুক্তির থেকেই সুদীপ্ত সেন পরিচালিত এই ছবির নামের পাশে ‘প্রোপাগান্ডা সিনেমা’র তকমা সাঁটা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠেছে, মিথ্যাচারে ভরা এই প্রোপাগান্ডা ছবিকে কেন জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হল? বিতর্কের পালে হাওয়া লাগতেই এবার ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র জাতীয় পুরস্কার পাওয়া নিয়ে মুখ খুললেন জুরি চেয়ারম্যান তথা পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর।

Advertisement

চলতি বছর জোড়া জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। প্রথমত, এই ছবির জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে পুরস্কৃত হলেন সুদীপ্ত সেন। দ্বিতীয়ত, সেরা সিনেম্যাটোগ্রাফির জন্য প্রশান্তানু মহাপাত্রর ঝুলিতে এসেছে পুরস্কার। আর সেই জোড়া জাতীয় পুরস্কার নিয়েই হইচই নেটপাড়ায়। অনেকেরই ভ্রুযুগলই আন্দোলিত হয়েছে! চলতি বিতর্কের মাঝেই বোর্ডের জুরি চেয়ারম্যান হিসেবে আশুতোষ গোয়ারিকর জানালেন, “দ্য কেরালা স্টোরির সিনেম্যাটোগ্রাফির কাজ ভীষণই রিয়ালিস্টিক। অসাধারণ। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, গোটা সিনেমায় ক্যামেরার কাজ গল্পকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। আসল বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তুলেছে খুব বাস্তবভাবে। সেই প্রেক্ষিতেই আমরা দ্য কেরালা স্টোরিকে সাধুবাদ জানাই।” তাঁর সংযোজন, “একটা কঠিন বিষয়কেও সিনেমায় গল্পের ছলে যেরকম স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছ, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।” গোয়ারিকরের মন্তব্য, “দ্য কেরালা স্টোরি ছবিটিকে পুরস্কৃত করা নিয়ে আমাদের জুরি বোর্ডের মধ্যেও নানা আলোচনা হয়েছিল। তবে শেষমেশ সর্বসম্মতিক্রমে ছবিটিকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়।”

Ghoomer and The Kerala Story feature among entries sent to the Film Federation of India for Oscar selection

এদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সোশাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘কেরল বরাবর সাম্প্রদায়িক অশান্তি রুখে দেওয়ার মাটি। শিক্ষার আলো পর্যাপ্ত এরাজ্যে। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমায় কেরলের তরুণ সমাজকে যে আলোয় দেখানো হয়েছে, তা একেবারেই ভ্রান্ত। রাজ্যের ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা। এটা শুধু মালয়ালিদের অপমান নয়, দেশের সম্প্রীতির প্রতি আস্থা ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। এমন সিনেমাকে যাঁরা পুরস্কৃত করেছেন, তাঁরা নিশ্চিতভাবে সংঘ পরিবারকে খুশি করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন’, বলে দাবি বিজয়নের।
একই সুরে বক্তব্য পেশ করেছেন কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল। তাঁর মতে, ‘জাতীয় পুরস্কার নয়, এই সিনেমাকে আবর্জনাস্তূপে ফেলে দেওয়া উচিত। ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’কে বদনাম করার এ এক ষড়যন্ত্র।’ সবমিলিয়ে, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তিতেও বিতর্কই সঙ্গী হল সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র। সেই প্রেক্ষিতেই বোর্ডের তরফে মুখ খুললেন জুরি চেয়ারম্যান তথা পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর।

প্রসঙ্গত, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিতে দেখানো হয়েছে, এদেশের তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম ধর্মে পরিবর্তিত করার পর জেহাদের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করা হয়। প্রেমে জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেই সম্পর্ক থেকে বেরতে পারে না এবং অন্তিমত বেছে নেয় জঙ্গি-জীবন। হয়ে ওঠে সন্ত্রাসবাদী। কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে (ISIS) এর নেপথ্যে দায়ী করা হয়েছে সিনেমায়। ২০২৩ সালে সিনেমা মুক্তির পরও দেশজুড়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন এর বিষয়বস্তু নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এধরনের ছবি দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উসকানি দিতে পারে। তাই অবিলম্বে তার প্রদর্শন বন্ধ করা হোক। এমনকী বাংলাতেও এহেন উসকানিমূলক সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধের দাবি উঠেছিল। শেষমেশ অবশ্য আইনি জট কাটিয়ে সিনেমাটি দেখানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন সিনেমাহলে। এবার সেরা পরিচালনার জন্য তার ঝুলিতে এল জাতীয় পুরস্কার।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ