সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিনেমা তো সমাজের আয়না। তবে শিল্পের রঙে রাঙানো। সেই রং যদি আবার শিল্পসম্মত না হয়ে বাস্তবতা থেকে অনেকটা দূরত্বের হয়, তাহলে তা নিয়ে সমালোচনা তো হবেই। যেমনটা হয়েছিল সুদীপ্ত সেন পরিচালিত সিনেমা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে। ধর্মান্তরণ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি নিয়ে বহু সমালোচনা হয়েছিল। ছবিতে কেরলের তরুণ সমাজ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ উঠেছিল। এহেন বিতর্কিত ছবিই জিতে নিয়েছে ৭১ তম জাতীয় পুরস্কার। সেরা পরিচালনা ও সেরা সিনেমাটোগ্রাফির শিরোপা উঠেছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মাথায়। আর এই সাফল্যকে সম্মান নয়, চূড়ান্ত অবমাননাকর বলেই মনে করছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এই সিনেমাকে সেরার শিরোপা দেওয়ায় বিচারকদের কার্যত তুলোধোনা করেছেন বাম শাসিত দক্ষিণী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
কেন বিজয়নের এত আপত্তি, ক্ষোভ, তা বুঝতে হলে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র কাহিনির কথা উল্লেখ করতে হবে। ছবিতে দেখানো হয়েছে, এদেশের তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম ধর্মে পরিবর্তিত করার পর জেহাদের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করা হয়। প্রেমে জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেই সম্পর্ক থেকে বেরতে পারে না এবং অন্তিমত বেছে নেয় জঙ্গি-জীবন। হয়ে ওঠে সন্ত্রাসবাদী। কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে (ISIS) এর নেপথ্যে দায়ী করা হয়েছে সিনেমায়। ২০২৩ সালে সিনেমা মুক্তির পরও দেশজুড়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন এর বিষয়বস্তু নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এধরনের ছবি দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উসকানি দিতে পারে। তাই অবিলম্বে তার প্রদর্শন বন্ধ করা হোক। এমনকী বাংলাতেও এহেন উসকানিমূলক সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধের দাবি উঠেছিল। শেষমেশ অবশ্য আইনি জট কাটিয়ে সিনেমাটি দেখানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন সিনেমাহলে। এবার সেরা পরিচালনার জন্য তার ঝুলিতে এল জাতীয় পুরস্কার।
আর এখানেই আপত্তি তুলেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সোশাল মিডিয়া পোস্টে তাঁর বক্তব্য, কেরল বরাবর সাম্প্রদায়িক অশান্তি রুখে দেওয়ার মাটি। শিক্ষার আলো পর্যাপ্ত এরাজ্যে। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমায় কেরলের তরুণ সমাজকে যে আলোয় দেখানো হয়েছে, তা একেবারেই ভ্রান্ত। রাজ্যের ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা। এটা শুধু মালয়ালিদের অপমান নয়, দেশের সম্প্রীতির প্রতি আস্থা ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। এমন সিনেমাকে যাঁরা পুরস্কৃত করেছেন, তাঁরা নিশ্চিতভাবে সংঘ পরিবারকে খুশি করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি বিজয়নের।
অবশ্য একই সুরে বক্তব্য পেশ করেছেন কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল। তাঁর মতে, জাতীয় পুরস্কার নয়, এই সিনেমাকে আবর্জনাস্তূপে ফেলে দেওয়া উচিত। ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’কে বদনাম করার এ এক ষড়যন্ত্র। সবমিলিয়ে, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তিতেও বিতর্কই সঙ্গী হল সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র।
The Kerala Story movie deserves to be in the dustbin. It peddles a rotten agenda and maligns my beautiful state of Kerala.
This movie getting the national award is the most perfect example of how the BJP sponsors and promotes hate from the highest echelons of government.…
— K C Venugopal (@kcvenugopalmp)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.