Advertisement
Advertisement
Saralakkha Holmes

হলিউডের অ্যাকশন কোরিওগ্রাফারের কাছে স্টান্ট শিখেছেন ‘সরলাক্ষ হোমস’ ঋষভ

'আমাকে সাপোর্ট করার মতো আর্থিক সচ্ছলতা পরিবারের অতটাও ছিল না...', কী জানালেন ঋষভ বসু?

Rishav Basu shares Saralakkha Holmes experience
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 29, 2025 4:16 pm
  • Updated:August 29, 2025 4:16 pm  

‘সরলাক্ষ হোমস’-এর মলাট চরিত্রে ঋষভ বসু। তাঁর মুখোমুখি বিদিশা চট্টোপাধ্যায়। 

Advertisement

২৯ আগস্ট মুক্তি পেল ‘সরলাক্ষ হোমস’। আপনি নামভূমিকায়। এর আগে ‘শ্রীকান্ত’, ‘ভটভটি’, ‘ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন’– সবকটাতেই আপনি টাইটেল রোলে। এবং সব কটা কাজই স্বতন্ত্র।
– নিজেকে ভাগ্যবান বলব। এত স্বল্প সময়ে এত ধরনের ছবিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজের সুযোগ পেয়েছি। এবং এই প্রজন্মের পরিচালকদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি। অভিনেতা হিসেবে এটা চ্যালেঞ্জিং। ‘ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন’ ছবিতে একটা স্টাইলাইজড ব্যাপার আছে আবার ‘সরলাক্ষ হোমস’ খুবই কমার্শিয়াল। অভিনেতা হিসেবে বোর হচ্ছি না কখনও।

এই ছবিটা শুনলাম ‘হাউন্ড অফ বাস্কারভিলস’-এর অনুপ্রেরণায়। বাংলায় এবং বাঙালি চরিত্র নিয়ে এই গল্প কীভাবে এগোবে?
– গল্পের যে এসেন্স সেটা একই রাখা হয়েছে। এবার চরিত্রগুলোর ব্যাকড্রপ আমাদের বাংলার মতো করে দেওয়া হয়েছে। আর নির্মাতারা চেয়েছিলেন এমনভাবে তৈরি করতে যাতে ছোটরাও সিনেমা দেখে গল্পের বইটার প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেটা ভেবেই তৈরি করা। সরলাক্ষ স্বঘোষিত ডিটেক্টিভ না হলেও, কেস সলভ করা ওর কাছে ড্রাগের নেশার মতো। কেস হাতে না থাকলে খুব ডিস্টার্বড হয়ে যায়, ছটফট করে। অনেকটা বর্ডারলাইন একসেনট্রিক।

বিবিসির শার্লক-এও তেমনটাই দেখানো হয়েছিল।
– হ্যাঁ, অরিজিনাল গল্পেও তাই ছিল। এখানে অর্ণদা (মুখোপাধ্যায়) আর্য সেন, ওয়াটসনের চরিত্রে। শার্লক হোমসের মূল গল্প ‘স্টাডি ইন স্কারলেট’-এ ওদের আলাপ হয়। এখানে এই গল্পে আমাদের প্রথম আলাপ দেখানো হচ্ছে। যেখানে আমরা একসঙ্গে অ্যাপার্টমেন্ট শেয়ার করছি। আর ‘শার্লক হোমস’ নিয়েই আমার ডিসারটেশন পেপার ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করার সময়। পেপারের বিষয় ছিল শার্লককে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে পপুলার কালচার কীভাবে ভক্তরা যুগে যুগে অনুপ্রাণিত হয়েছে। শার্লক-ওয়াটসনের মধ্যে সমপ্রেম-এর থিওরি নিয়েও কাজ হয়েছে।

এখানে সেই দৃষ্টিকোণ আছে?
– না, এই ছবিতে নেই। তবে যেহেতু কোনও নায়িকা নেই, তাই এই ছবিতে আমার আর অর্ণদার মধ্যে জুটির মজাটা পাবে। সেই কেমিস্ট্রিটা আছে।

আপনার ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ১০ বছর হয়ে গেল!
– ২০২৬ সালে ১০ বছর হবে। ২০১৬-তে অনীকদার (দত্ত) সঙ্গে প্রথম কাজ করেছি, ‘মেঘনাদবধ রহস্য’। তার আগে ছোটখাট কাজ করেছি। খেলাধুলো করতাম। রেডিও জকি হতে চেয়েছিলাম। তারপর এক দিদির সঙ্গে সিরিয়ালের সেটে গিয়ে, ভাগ্যের চাকা বদলে গেল বলা যায়। থিয়েটারে ঢুকলাম, অভিনয় শেখার জন্য। কলেজে পড়ার সময়ই আমি থিয়েটার জয়েন করি। এনএসডি-তে সুযোগ পেয়েও চারমাস পড়াশোনার পর আমাকে আর্থিক কারণে ফিরে আসতে হয়। ড্রপ আউট বলতে পারো।

এই যে নন-ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে, দশবছর ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে যাওয়ার পর কী মনে হয় এখন?
– হয়তো ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড হলে প্রথম কয়েকটা সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু টিকে থেকে কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটা ম্যাটার করে বলে আমার মনে হয় না। আমাকে সাপোর্ট করার মতো আর্থিক সচ্ছলতা পরিবারের অতটাও ছিল না। স্কুলে চাকরি করে, থিয়েটার করে, অভিনয়টা চালিয়ে
নিয়ে যেতে পেরেছি এবং এত সুযোগ পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ! বুম্বাদা প্রযোজক হয়ে আমাকে তাঁর ছবিতে সুযোগ দিয়েছেন। আমার খুব বড় পাওয়া। যেহেতু আমি স্পোর্টস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। লড়াই করার মানসিকতাটা আমার আছে।

আপনি তো ফুটবল খেলতেন?
– হ্যাঁ, আগে পেশাদার ফুটবল খেলতাম। এখনও সুযোগ পেলে ছোট ছোট টুর্নামেন্টে খেলি, ‘আইএসএল’-এ সুযোগ পেলে খেলি। ফুটবল আমার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং শেষ প্রেম।

আর ব্যক্তিগত জীবনে, প্রেম, বিয়ে?
– না, আমি বিয়ে করিনি, বিয়ে করতেও চাই না!

সে কী!
– বিয়ে তো একটা ইনস্টিটিউশন, তো এই ইনস্টিটিউশনে আমার মতো স্টুডেন্টের জায়গা নেই।

মানে ভর্তি হলেও, ড্রপ আউট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
– (হাসি) হ্যাঁ, বিয়ে করলে, ভীষণভাবে ড্রপ আউট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে আমি প্রেমে আছি এইটুকু বলতে পারি।

‘সরলাক্ষ হোমস’ হয়ে লন্ডনের রাস্তায় অ্যাকশন সিন শুট করার অভিজ্ঞতা কেমন?
– দারুণ দারুণ সব স্মৃতি আছে। এই ছবির অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার কেভিন স্মিথ, তিনি ইউকের। কেভিন প্রচুর হলিউড ছবিতে কোরিওগ্রাফ করেছেন। আর আমাদের ছবিটার জাস্ট আগেই, তিনি বলিউডে টাইগার শ্রফকে অ্যাকশন দৃশ্যে কোরিওগ্রাফ করেছেন। আমি খুবই টেনশনে ছিলাম। ঠিক মতো পারব তো! কিন্তু কেভিনের সঙ্গে কথা বলার পর একেবারে ডান্স মুভমেন্টের মতো করে অ্যাকশন করেছি। ট্রেনের ভিতর খুব ইন্টারেস্টিং অ্যাকশন দৃশ্য আছে। বডি ডাবল রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকটা স্টান্ট নিজে করেছি। আই ওয়াজ ভেরি হ্যাপি। এই ছবিটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবার আমাকে নিয়ে একটা ‘বয় নেক্সট ডোর’, ব্যথা পাওয়া রোম্যান্টিক হিরো– এমন একটা ইমেজ আছে। ‘সরলাক্ষ হোমস’ সেই ইমেজটা বদলে দেবে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement