স্টাফ রিপোর্টার: টলিউডের শিল্পী-কলাকুশলীদের নির্বাচিত বৃহত্তম সংগঠন ফেডারেশনের বিরুদ্ধে ১৩ জন বিক্ষুব্ধ পরিচালকের মূল মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, মামলাকারী পরিচালকদের নানা অযৌক্তিক ও তথ্যহীন দাবি উড়িয়ে দিয়ে বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, ‘এই সমস্যার সমাধান এখানে সম্ভব নয়’। স্বভাবতই ফেডারেশনের বিরুদ্ধে পরমব্রত, সুদেষ্ণা রায়রা যে মামলা দায়ের করে প্রায় দশ হাজার টেকনেশিয়ানের রুটিরুজিকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছিলেন, এই রায়ের জেরে সেই ধোঁয়াশা কেটে গেল। আদালতের রায় নিয়ে এদিন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “সত্যের জয় হল। মামলা শুরুর প্রথমদিন থেকে আমরা হাই কোর্টের উপর আস্থা বিশ্বাস রেখেছিলাম। মহামান্য বিচারপতি সবদিক বিবেচনা করে, আমাদের বক্তব্যকে যুক্তিযুক্ত মনে করে এই ‘বাংলা বিরোধী’দের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। আদালতের কাছে তাই এই দশ হাজার টেকনিশিয়ান-শিল্পীরা কৃতজ্ঞ।”
ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনে হাই কোর্টে মামলা করেন টলিপাড়ার ১৩ জন বিদ্রোহী পরিচালক। এঁরা হলেন– পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, বিদুলা ভট্টাচার্য, আশিস সেনচৌধুরি, সুদেষ্ণা রায়, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরি, সুমিত দাম, কিংশুক দে, সুব্রত সেন, প্রসেনজিৎ মালিক, অভিষেক সাহা, সৌরভ ভট্টাচার্য, দেবেশ চক্রবর্তী। ফেডারেশনের অভিযোগ, এই ১৩ জনের মধ্যে ৬ জন কোনওদিন ছবি বা সিরিয়াল পরিচালনার কাজ করেননি। আবার এই ৬ জনের মধ্যে দু’জন ক্যাটারিংয়ের কাজ করেন। প্রশ্ন উঠেছে, ছবি পরিচালনা না করে, ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা করে কীভাবে ডিরেক্টরস গিল্ডের কার্ড পেলেন? নেপথ্যে কে বা কারা, এমন অনৈতিক-দুর্নীতিতে মদত দিলেন? মামলা নিয়ে কয়েক দফা শুনানি শেষে দু-পক্ষকেই রিভিউ কমিটির জন্য বিশেষজ্ঞদের নাম আদালতে জমা দিতে বলেন।
গত সপ্তাহে আদালতে জমা পড়া তালিকায় দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ পরিচালকরা কমিটির জন্য যাঁদের নাম দিয়েছেন, তাঁরা অধিকাংশই অবাঙালি ও ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। যে দু-একজন বাঙালির নাম আছে, তাঁরা কেউই এখন বাংলায় থাকেন না। স্বভাবতই বাংলা ও বাঙালিকে ব্রাত্য করে জমা দেওয়া কমিটির তালিকা দেখে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন টলিপাড়ার ১০,০০০ শিল্পী-কলাকুশলীরা। এদিন শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিক্ষুব্ধ পরিচালকদের মামলা খারিজ করে দেন। অন্য যে দুটি আদালত অবমাননার মামলা রয়েছে, তা নিয়ে ১৭ নভেম্বর হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের তরফে ২৭ জনের নাম নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বিচারপতির মন্তব্য, “সবাই নেতৃত্ব দিতে চাইছেন? এটা কীভাবে হয়? প্রত্যেকটি পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধি দিন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.