সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার সিঙ্গাপুরে মৃত্যু হয় জুবিন গর্গের। রবিবারই অসমে পৌঁছেছে গায়কের নিথর দেহ। চোখের জলে ভূমিপুত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন তাঁর হাজারো অনুরাগী। মঙ্গলবার সাতসকালে জুবিনের শেষকৃত্যেও তেমনই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হল। গায়কের কফিনবন্দি দেহ দেখে ভেঙে পড়েছে আট থেকে আশির প্রজন্ম। চোখের জল বাঁধ মানছে না অসমবাসীর। বিগত তিন দিন ধরে কার্যত অচল অসম! মঙ্গলবার জুবিনের শেষকৃত্যের জন্য গুয়াহাটির জাতীয় সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল। আর গায়কের এই শেষকৃত্যের এহেন জনসমুদ্রই বিশ্বের সর্ববৃহৎ চতুর্থ জমায়েত হিসেবে নাম লেখাল ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডে’।
মঙ্গলবার কাকভোরে এইমসে ময়নাতদন্তের পর নির্ধারিত সময়ে কামারকুচি এনসি গ্রামে জুবিনের শেষকৃত্য শুরু হয়। এদিন অর্জুন বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে জুবিনের শববাহী গাড়ি পৌঁছয় শেষকৃত্যস্থলে। একুশ তোপে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হল গায়ককে। সেখানেও অসমের বাদশাকে চোখের জলে বিদায় জানাতে যেন জনঅরণ্য! সেই ভিড়ে একদল যখন ‘মায়াবিনি রাতির বুকুত’ জনপ্রিয় গান ধরেছেন, আরেকদিক থেকে শয়ে শয়ে মানুষ স্লোগান তুললেন ‘জয় জুবিনদা।’ শুধু তাই নয়, শেষকৃত্যের সময়ও বাজানো হল ‘মায়াবিনি’ গানটি, ঠিক যেমনটা বছর দুয়েক আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন জুবিন যে- আমি মরলে গোটা অসমজুড়ে এই গানই বাজবে। সেটাই যেন কামারকুচির শেষকৃত্যে অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। পঞ্চভূতে বিলীন হলেন গায়ক জুবিন গর্গ। শেষকৃত্যে কান্নায় ভেঙে পড়লেন জুবিনপত্নী। গরিমা সাইকিয়াকে সান্ত্বনা দিতে গেয়ে চোখের জল বাঁধ মানল না উপস্থিত কারও।
সুষ্ঠভাবে যাতে গায়কের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়, পরিবার এবং প্রসাসন, উভয়ের তরফেই সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মন্ত্রী এবং অসম গণপরিষদের (এজিপি) কার্যকরী সভাপতি কেশব মহন্ত জানিয়েছেন, কামারকুচির শেষকৃত্যস্থলে জুবিন গর্গের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য ১০ বিঘা জমি নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী অতুল বোরার মন্তব্য, “গায়কের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই স্মৃতিসৌধ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। গোটা অসম জুবিনকে ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। জুবিনের বিপুল জনপ্রিয়তার জন্যেই অসমের পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষ এখানে এসেছেন।” প্রসঙ্গত, প্রয়াত গায়কের শেষ স্মৃতি আঁকড়ে রাখতে তাঁর পায়ের ছাপ নিয়ে মোম দিয়ে পাদুকা তৈরি করেছেন শিল্পী দিগন্ত ভারতী। নেটপাড়ার ভাইরাল সেই ছবি দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন অনুরাগীরা।
সিঙ্গাপুরের নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালে ২০ এবং ২১ সেপ্টেম্বর পারফর্ম করার কথা ছিল জুবিনের। কিন্তু তার আগে ১৯ তারিখই তিনি সুরের সফর ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিলেন। শোনা যাচ্ছে, জুবিনের মৃগী রোগের সমস্যা ছিল। জলের তলদেশে স্কুবা ডাইভিং করতে নেমে তা উসকে ওঠায় প্রাণ হারান তিনি। তবে আসল কারণ জানতে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.