প্রথম দুই সিজনে দর্শকমহলে সাড়া ফেলার পর সম্প্রতি হইচই-তে মুক্তি পেল ‘ইন্দু ৩’। কেমন হল সিরিজ? লিখছেন জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।
২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল অবধি মানুষ যেমন অপেক্ষা করেছিল, কেন কাটাপ্পা বাহুবলীকে মেরেছিল তার উত্তর জানার জন্য, তেমনই ‘ইন্দু’র
প্রথম সিজনের পর থেকেই দর্শকদের মনে প্রশ্ন ছিল, বাড়িতে যে রহস্যময় ঘটনা ঘটছে, ইন্দু কি সেই বাড়ির বউ হয়ে গোয়েন্দার মতো সবকিছুর সত্য উন্মোচন করতে পারবে? প্রথম সিজনেই ইন্দু জনপ্রিয় হয়েছিল, কারণ সেটি শুধু গল্প নয়, এক জমজমাট অভিজ্ঞতা। এরপর ২০২৩ সাল
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে দ্বিতীয় সিজনের জন্য, যেখানে রহস্য আরও গভীর হয়েছে– ইন্দু বিধবা হল, সৌগত মারা গেল। দর্শকরা ভেবেছিলেন সমাধান মিলবে, অথচ অপেক্ষা আরও বেড়ে গেল। অবশেষে ২০২৫ সালে এসে মুক্তি পেল অয়ন চক্রবর্তী পরিচালিত ‘ইন্দু সিজন ৩’ যেখানে সমস্ত রহস্যের জট খুলে গেল।
একটার পর একটা খুন, কখনও ধুতরার বিষ, কখনও বিশেষ তেল ব্যবহার এই সব কিছুর পিছনে কে ছিল, কেন ছিল, কী উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড? সব প্রশ্নের উত্তর মিলল এই সিজনে। ইন্দু অবশেষে শুধু নিজের সত্য নয়, দর্শকদের কাছেও উন্মোচন করল সেই রহস্য। স্পয়লার দেওয়ার কোনও মানে নেই, কারণ এটি নিখাদ থ্রিলার। প্রতিটি চরিত্রের নিজস্ব গুরুত্ব আছে কেউ বিভ্রান্ত করেছে, কেউ আবার পাশে দাঁড়িয়েছে। ফলে প্রথম এপিসোড থেকে সপ্তম এপিসোড পর্যন্ত টানা দেখে ফেলা যায় সহজেই, গ্রিপিং টেনশন আর ভয়ঙ্কর মোড়ে ভরপুর এক যাত্রা।
অভিনয়ের কথায় আসা যাক। নিঃসন্দেহে সুহোত্র মুখোপাধ্যায় নজর কেড়েছেন, চরিত্রকে ধাপে ধাপে উন্মুক্ত করার ভঙ্গি অসাধারণ। কেন্দ্রচরিত্রে ইশা সাহা অত্যন্ত সাবলীল। তিনটি সিজন ধরেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন তিনিই। এর পাশাপাশি বহু বছরের অভিনেতা মৃদুল চন্দ্র সেন এই সিজনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছেন এবং দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। পায়েল দে, মানসী সিনহা কিংবা যুধাজিৎ সরকার সবাই নিজেদের জায়গায় শক্তিশালী। বিশেষ করে যুধাজিৎ, যাঁর চরিত্র প্রথমে ভিলেন বলে মনে হলেও শেষে অন্য রূপে ধরা দেয়।
যদি একটুখানি প্রশ্ন থেকে যায়, তা হল বাড়ির অনেকেই শুরু থেকে অনেক কিছু জানত। তাই মনে হতে পারে ইন্দুকে এতদিন অন্ধকারে রাখার মানেটাই বা কী? দর্শকদের কাছেও সেটা খানিকটা ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। তবে আসলে এটাই নির্মাতাদের সবচেয়ে বড় কৌশল রহস্যকে টেনে নিয়ে যাওয়া, প্রত্যাশা জাগানো এবং দর্শকদের আগ্রহে শেষ পর্যন্ত বেঁধে রাখা। পরিচালনা, অভিনয়, ক্যামেরা, আর্ট ডিরেকশন– সবদিক থেকেই ‘ইন্দু সিজন ৩’ এককথায় চমকপ্রদ।একবার দেখা শুরু করলে শেষ না করে ওঠা সম্ভব নয়। এই পুজোয় চার- চারটে বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছে, তার ভিড়েও ইন্দু নিজের আলাদা জায়গা করে নেবে নিশ্চিতভাবেই। কারণ রহস্য-থ্রিলারের সত্যিকারের স্বাদ দর্শক এখানে পেতে চলেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.