Advertisement
Advertisement
শেষ থেকে শুরু

চিত্রনাট্যের অতিনাটকীয়তায় তেমন উপভোগ্য হল না ‘শেষ থেকে শুরু’

৫০ তম ছবিতেও জিতের সেই একই ভাবলেশহীন মুখ৷

Read the review of actor Jeet starrer Shesh Theke Shuru
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:June 6, 2019 12:45 pm
  • Updated:June 6, 2019 9:59 pm  

চারুবাক: ছবির মুখবন্ধে বলা হয়েছে (নাকি শোনানো হয়েছে) ‘কোনও গল্পই শেষ হয় না।’ শেষ থেকে আবার এক নতুন গল্পের শুরু। এটা জানিয়ে নায়ক জিৎ কি ‘শেষ থেকে শুরু’-র সিক্যুয়েল তৈরির রাস্তাটি খোলার রাখতে চাইলেন? হাফ দার্শনিক, হাফ ব্যবসায়িক এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিলে পৃথিবীর কোনও গল্প উপন্যাসই শেষ হইয়াও শেষ হয় নাই। অনন্তকাল চলিতেছে, চলিবে। যেমন জিৎ তাঁর এই পঞ্চাশতম ছবিতেও একই রকম আছেন। অ্যাকশন মুহূর্তে, আবেগের দৃশ্যে পাথুরে ভাবলেশহীন মুখ নিয়ে।

Advertisement

ছবির নায়কের নাম মাহিদ। সুতরাং একমুখ দাড়ি রেখে এক্সপ্রেশন ঢাকার চেষ্টাও নজর এড়াবে না দর্শকদের। শেষ থেকে নয়, কেরিয়ারের শুরু থেকেই জিৎ সংখ্যাগুরু দর্শকের মনোরঞ্জনে নিবেদিতপ্রাণ। প্রয়োজনের বাইরে নাচ-গান, অহেতুক আবেগ, অযৌক্তিক ঘটনা নিয়ে অতিনাটকের ঘ্যাঁট বানাতে তিনি প্রায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাতেই নাকি বক্স অফিসের ঝনঝনানি শোনা যায়। এবার পূর্ব প্রমাণিত মশলাপাতির সঙ্গে ঢাকা এবং লন্ডনের প্রবাসী বাঙালির জীবন ঘিরে যে পারিবারিক ‘ঘ্যাঁট’ পাকিয়েছেন, সেখানে এক শ্রেণির দর্শকের হাততালি গ্যারেন্টেড। খিচুড়ি মার্কা পূর্ববঙ্গীয় উচ্চারণে বাংলায় সংলাপ বলা কানে অস্বস্তিকর লাগলেও এই রাজ্যের সীমান্ত জেলাগুলোয় ও ওপার বাংলায় ব্যবসা ভালই করতে পারে।

[ আরও পড়ুন: ‘কিডন্যাপ’-এ নজর কাড়লেন রুক্মিনী, তবে ছবি জমল কি? ]

আরে বাবা, সিনেমা মানে তো জনসেবা নয়। আত্মসেবা। সুতরাং ঢাকার শেখ আর মোল্লা পরিবারের বন্ধুত্ব আর বিরোধকে নিয়ে লন্ডন-ঢাকা ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করতে হয় মাহিদ-সহ দুই পরিবারের সদস্যদের। মাঝখানে এসে পড়ে কলকাতার হিন্দু মেয়ে পূজারিণী। বিমানে প্রথম দর্শনেই ফিদা দু’জনে। প্রেমের পথ বেয়ে সন্তান আসে পূজারিণীর গর্ভে। মুসলমান ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেয়ের প্রেম! না, কোনও পক্ষই মেনে নেয় না। এই অসম সম্পর্ক যেটা আজকের দিনে অনেকটাই সম্ভব।

কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তাস নিয়ে খেললে যে ‘বেওসা’ চলে না! সুতরাং অবাস্তব ঘটনা আর অঘটনের এক জগাখিচুড়ি পাকানো হয়। যদিও বলা হয়, ‘ভালবাসার কোনও ধর্ম হয় না।’ কিন্তু সেই ধর্মই তো ভালবাসার পথে এখানে ‘ভিলেন’ হয়ে দাঁড়ায়। অগত্যা পূজারিণীর সন্তানপ্রসব। নায়কের মৃত্যুতে সাম্পদায়িক সম্প্রীতির দুর্দান্ত এক সমাধান করে দিলেন চিত্রনাট্যকার পরিচালক। জানি না, জিৎ-নির্ভর এখন চিত্রনাট্যে পরিচালক হিসেবে রাজ চক্রবর্তীর করণীয় কতটুকু ছিল! শুধুমাত্র গানের দৃশ্যগুলির কম্পোজিশনে হয়তো তিনি কারুকাজ করে থাকবেন।

[ আরও পড়ুন: ‘আদর্শ পুরুষ’ হয়ে কামব্যাক সলমনের, বক্স অফিসে ঝড় তোলার পথে ‘ভারত’ ]

ইদের পুণ্যলগ্নে ছবির মুক্তি। তাই এই পর্বটিকে ছবির দু’তিনটি অংশে সুন্দরভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই পরিচালকই সিনেমাটিক লাইসেন্সের নামে লন্ডনের এক বহুতল বাড়িতে আলো দিয়ে লিখেছেন, ‘উইল ইউ ম্যারি মি!’ নাটকীয়তার জন্য।

অভিনয়ে জিৎ এই ছবিতে কমেডি টাচ প্রায় রাখেননি। ছিপছিপে চেহারায় মারামারির দৃশ্যে আগের মতোই তিনি দাপুটে ও সাবলীল। রোম্যান্টিক দৃশ্যগুলোয় কোয়েলের সঙ্গে রসায়ন সংখ্যাগুরু দর্শক উপভোগ করবেন। ঋতাভরী হয়েছে ফারহানা মাহিদের বিজনেস ডিলের স্ত্রী কাম ভ্যাম্প। মন্দ নন। তুতোভাই ভিলেনের চরিত্রে শৌভিক কিন্তু বেশ ভাল। ত্রিধা বা সায়ন্তিকার উপস্থিতি কোনওভাবেই নজরে পড়ে না। আসলে সব নজর তো প্রযোজক-নায়ক জিৎ-ই টেনে নিয়েছেন। নায়িকা কোয়েলকে এড়ানো সম্ভব ছিল না। তাছাড়া তাঁর ইউএসপি-ই বা কম কীসে?    

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement