Advertisement
Advertisement

অভিনয়ের জোরেই বাজিমাত ভিন্ন ঘরানার ছবি ‘পার্সেল’-এর

চিত্রনাট্য বার বার পথ হারিয়েছে কাহিনী।

Read the review of Indrasish Acharya's movie Parcel
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:March 14, 2020 10:34 am
  • Updated:March 14, 2020 10:34 am   

নিরীক্ষিত: পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য ‘পিউপা’ ছবিতে বাঙালি মধ্যবিত্ত সংসারের যে জীবননিষ্ঠ ছবি এঁকেছিলেন, তাঁর নতুন ছবি ‘পার্সেল’ তা থেকে শত যোজন দূরে। তিনি কি ব্যবসা পাওয়ার জন্য সমঝোতার পথে হাঁটতে চাইছেন এখন? ‘পার্সেল’ যেন সেই ইঙ্গিতই দিল। একটা মোটা দাগের গল্প আছে এই ছবিতে। হ্যাঁ, ডাক্তারি পেশার ঝুঁকি ঝকমারিও দেখিয়েছেন তিনি। আবার নন্দিনী ও শৌভিকের দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েনও এনেছেন। কোনটাকে সঠিক ফোকাস করবেন, বোধহয় স্থির করতে পারেননি। ফলে চিত্রনাট্য বার বার পথ হারিয়েছে কাহিনীর চেয়ে উপকাহিনীর শাখাপ্রশাখায়। দর্শকও বিভ্রান্ত হচ্ছেন গল্পের শুরু ও শেষ খুঁজতে।

Advertisement

নন্দিনীর জন্মদিনের সেলিব্রেশন থেকে উটকো ‘পার্সেল’ আসতে থাকে বাড়িতে। কী থাকে পার্সেলে? ওর পুরোনো ছবি। কে পাঠায়, কেন পাঠায় পরিষ্কার করেন না পরিচালক। ধোঁয়াশা তৈরি হয় দর্শকের মনে। পার্সেল প্রায় প্রতিদিনই আসতে থাকে। এটা নিয়ে মৃদু ভুল বোঝাবুঝিও হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। এই পার্সেল আসা নিয়ে ওঁদের উঠতি বয়সের কিশোরী সন্তান সাজুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এটা নন্দিনী-শৌভিকের আশঙ্কা। অমূলক নয়। কিন্তু সেটা বন্ধের জন্য ওদের কোনও চেষ্টা নেই কেন? ওদের পুরোনো বন্ধুরা কি কোনওভাবে ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে? সেটাও স্পস্ট নয়। নাটকের এই জটিলতার সঙ্গে ইন্দ্রাশিস মিশিয়ে দিয়েছেন ওদের পেশাদারি সমস্যাও। কিন্তু দুটো ব্যাপারের সঙ্গে যোগ কোথায়?

[ আরও পড়ুন: আপনাকে যতটা হাসাবে, ততটাই কাঁদাবে ইরফান খানের ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ]

গল্পের প্রেক্ষিতে এসেছে নন্দিনীর পারিবারিক কিছু সমস্যাও। কিন্তু এতগুলো উপকাহিনীর শাখা ছড়িয়ে তিনি দর্শককে বিভ্রান্ত করে দিলেন নাকি! এবং শেষ পর্বে এসে দেখা গেল ওরা দু’জনেই শহর ছেড়ে যেতে প্রস্তুত। তার আগে মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে একটু ‘ছুটি’ কাটিয়ে আসতে চায়। যায়ও। কিন্তু সেখানেও তাদের পিছনে তাড়া করে ‘পার্সেল’। এটা কেন? অথচ পরের শটেই দেখা যায় মা-মেয়ে ছাদে এক্কা-দোক্কা খেলছে। নির্লিপ্ত ভাব। তাহলে? এত সব পার্সেলের আসা-যাওয়া কেন? ইন্দ্রাশিস কি বাস্তব থেকে কল্পনার দিকে যেতে চাইলেন? কিন্তু দর্শকদের তো সঙ্গে নিতে পারলেন না।

যাই হোক, তবুও বলবো, ‘পার্সেল’ এখনকার জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা ঘরানার বাইরের ছবি। এককথায় ‘হটকে’ ধারার। এটাই এই ছবির ইউএসপি। আর রয়েছে প্রধান দুই চরিত্রের শিল্পী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যয়ের সংযত ও বাস্তব অভিনয়। দু’জনেই পাল্লা দিয়ে কাজ করেছেন। মানসিক বিপর্যস্ত দু’জনেই। যদিও চিত্রনাট্যের তেমন ব্যাকিং না পেয়েও দু’জনেই দেখিয়েছেন নিজেদের জোশ। আবহ নির্মাণে জয় সরকারের বুদ্ধিমাখা মিনিমালিস্ট কাজ কানে ধরে, বিশেষ করে ভায়োলিনের সুন্দর ব্যবহার। অন্যান্য ছোট চরিত্রে শ্রীলা মজুমদার, অনিন্দ্য, দামিনী বসু, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়ে খুব স্বাভাবিক। আসলে ইন্দ্রাশিসের ছবি মানে প্রত্যাশা অন্যরকম, কিন্তু সেটা পূরণ হল না।

[ আরও পড়ুন: পৌরহিত্য-পিরিয়ডস নিয়ে প্রথাগত বিশ্বাসে কুঠারাঘাত শবরী ঋতাভরীর ]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ