Advertisement
Advertisement
Saralakkha Holmes film review

শার্লক হোমস যদি বাঙালি হতেন…! কেমন হল ‘সরলাক্ষ হোমস’? পড়ুন রিভিউ

বাঙালিদের শার্লক ফ্যান্টাসিকেই বড়পর্দায় আনলেন ঠিকই, কিন্তু জমল কতটা?

Rishav Basu starrer Saralakkha Holmes film review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 29, 2025 6:53 pm
  • Updated:August 30, 2025 10:21 am   

চারুবাক: শার্লক হোমস যদি বাঙালি হতেন, কেমন হত? স্যর আর্থার কোনান ডয়েলের আইকনিক গোয়েন্দা চরিত্রকে ঘিরে বাঙালি গোয়েন্দাপ্রেমীদের ফ্যান্টাসিও কম নয়। বাঙালিদের নিজস্ব সত্যান্বেষী ‘ফেলুদা’, ‘ব্যোমকেশ’ রয়েছেন ঠিকই, তবে শার্লক হোমসকে একজন ছাপোষা মধ্যবিত্ত বাঙালি গোয়েন্দা হিসেবে কেমন লাগবে? সেই কল্পনার জাল সম্ভবত মনে মনে অনেকেই বুনেছেন। আর বাঙালিদের সেই শার্লক ফ্যান্টাসিকেই এবার বড়পর্দায় এনে বাস্তবায়িত করলেন সায়ন্তন ঘোষাল।

Advertisement

আর্থার কোনান ডয়েলের লেখা ‘দ্য হাউন্ড অফ বাস্কারভিলস’ উপন্যাস নিয়ে এর আগে বাংলায় হয়েছে ‘জিঘাংসা’ নামের ছবি, হিন্দিতে ‘বিশ সাল বাদ’, দুটিই বানিজ্যিকভাবে সফল ছবি। দীর্ঘদিন বাদে এবার ধানুকা ফিল্মসের ব্যানারে তরুণ পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল সেই একই কাহিনি নিয়ে তৈরি করলেন ‘সরলাক্ষ হোমস’। মলাট রোলে ঋষভ বসু। এমন এক্সপেরিমেন্টের অনেক ঝক্কি আছে। ঠিক মিলল কি না, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন সাহিত্যপ্রেমী দর্শক। তবে পরিচালক সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। এবার প্রশ্ন, কতটা জমল এই গোয়েন্দা ছবি?

Rishav Basu shares Saralakkha Holmes experience

সায়ন্তনের ফ্রেমে কোনান ডয়েলের ‘শার্লক’ হয়ে উঠেছেন বাঙালি ‘সরলাক্ষ’। তেমনিই তাঁর সহকারী ওয়াটসন বদলে গিয়েছেন আর্য সেনে। স্যর হেনরির পরিবার হয়েছে ‘চৌধুরী’ পরিবার। চট্টোপাধ্যায়, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী, শতাফ ফিগার, রাজনন্দিনী পাল, প্রিয়া কারফা সকলে এক্কেবারে ‘বং চরিত্র’ এই গোয়েন্দা কাহনে। তাঁদের সঙ্গে কোনান ডয়েলের লেখা স্যর হুগো, স্যর চার্লস, মর্তিমের, জন, এলাইজা বেরিমোর, লরা কাউকেই ঠিকভাবে চিহ্নিত করা মুশকিল। পরিচালক আসলে শার্লক হোমসকে বাঙালি অবয়ব দিতে গিয়ে এক্সপেরিমেন্টের ছলেই গল্প সাজিয়েছেন। কিন্তু মুশকিলটা হয়েছে, নিম্নমানের চিত্রনাট্য নিয়ে! পদ্মনাভ দাশগুপ্ত এত দুর্বল ও ঘোলাটে চিত্রনাট্য এর আগে লিখেছেন বলে মনে করতে পারছি না। আর পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল এর আগেও থ্রিলার ছবি তৈরি করেছেন। কিন্তু এমন অদক্ষ ছাপ রাখেননি তিনি।

ছবিতে লন্ডন শহর ও শহরতলীর চোখজুড়নো সবুজ লোকেশন দেখতে মন্দ লাগে না। ‘ওইটেই’ ছবির ইউএপসি। রাতের অন্ধকারে সেই লোকেশনের রোমহর্ষক অনুভূতি। উপরি পাওনা স্টেশনের অনতিদূরে রেল ইয়ার্ডে ছবির ফাইনাল অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং। বাস্কার ভিলসের হিংস্র কুকুরের ব্যাপারটা নিয়ে মূল লেখক যেভাবে যুক্তি ও কুসংস্কারের দ্বন্দ্ব তুলে এনেছিলেন, সায়ন্তনের বঙ্গীকরণে তার চিহ্নমাত্র ফুটে ওঠেনি। ছবির নির্মাতারা হয়তো ভেবেছিলেন লন্ডন দেখিয়েই বাজিমাৎ করা যাবে। তবে সেটি হয়নি। ঘোলাটে চিত্রনাট্যের পাঁকে পড়লেও নিজেদের মতো করে ভালো পারফরম্যান্স দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সাহেব চট্টোপাধ্যায়, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, রাজনন্দিনী পাল,গৌরব চক্রবর্তীরা। তবে সবথেকে বেমানান লাগে গোয়েন্দা সরলাক্ষের চরিত্রে ঋষভ বসুকে! চরিত্রটিকে কৌতুককর করে তুলেছেন তিনি। তাঁর অভিনয়ে গোয়েন্দার তুখড় বুদ্ধির চাইতে দর্শককে হাসিয়ে আনন্দ দেওয়ার বিষয়টাই যেন প্রাধান্য পেয়েছে। আসলে বঙ্গীকরণ করতে গিয়েই যত গোলমাল! এক্ষেত্রে পরিচালক আরেকটু সতর্ক হতে পারতেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ