শহরের বুকে টিমটিম করে বেঁচে থাকা রিকশা চালকদের গল্প বলবে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘রিকশাওয়ালা’। রামকমল মুখোপাধ্যায়ের প্রথম বাংলা শর্ট ফিল্ম। লিখছেন সোমনাথ লাহা।
বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শহর তিলোত্তমা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে হাতে টানা রিকশা। কলকাতার অলিগলি কিংবা রাস্তাঘাটেও আর সেভাবে দেখা যায় না তাকে। অত্যাধুনিকতার শহরের অন্যতম এক মিসিং লিংক হাতে টানা রিকশা। আর এই রিকশা হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালকরাও।
রুজি রোজগারের তাগিদে তাঁরা বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। ফলে মহানগরীর বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রিকশাচালকদের নানা গল্প। ‘কেকওয়াক’ ও ‘সিজনস্ গ্রিটিংস’-এর মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যর হিন্দি ছবি সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার পর এবার সাংবাদিক কাম পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায় তৈরি তাঁর প্রথম বাংলা শর্ট ফিল্ম নিয়ে। যেটির নাম ‘রিকশাওয়ালা’। শহর তিলোত্তমার বুকে টিম টিম করে বেঁচে থাকা এই রিকশাচালকদের গল্পই এবার বলতে চলেছেন রামকমল। কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে বড় হওয়া এই বাঙালির স্মৃতিতে এখনও জ্বলজ্বলে হাতে টানা রিকশার ছবি।
প্রসঙ্গত, এই ছবির জন্য শহরের নির্দিষ্ট এলাকায় চলা হাতে টানা রিকশাচালকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন পরিচালক। তবে এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সঠিক শিল্পীর সন্ধান পাচ্ছিলেন না তিনি। বিগত একমাসের অনুসন্ধানের পর অবশেষে রামকমল খুঁজে পেয়েছেন তাঁর ছবির চরিত্র ‘রিকশাওয়ালা’ মনোজকে। এই চরিত্রটিতে দেখা যাবে বহুল প্রশংসিত ভোজপুরি ছবি ‘নাচানিয়া’ খ্যাত অভিনেতা অবিনাশ দ্বিবেদীকে। থিয়েটারের ছাত্র অবিনাশ বিজ্ঞাপন দুনিয়ার পরিচিত মুখ।
তাঁর সম্পর্কে রামকমল জানান, “যখন আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম ঠিক সেসময় আমার এক বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রথম অবিনাশকে দেখি। ওকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল মনোজ চরিত্রের জন্য অবিনাশ একদম যথাযথ।” অবিনাশের কথায়, “আমি রীতিমতো হতচকিত হয়ে পড়েছিলাম যখন রামকমলদা আমায় এই বাংলা ছবির কথা বলে। আমি আমার জীবনের সামান্য কিছু সময় বাংলায় কাটিয়েছি। কিন্তু, বাংলা ছবিতে কাজের সুযোগ কোনও দিনই পাইনি। কফি খেতে খেতে রামদা যখন আমার এই ছবির গল্পটা শোনায় আমি রীতিমতো আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম তাঁর বলার ধরন শুনে। এই চরিত্রটি শারীরিক ও মানসিকভাবে ফুটিয়ে তোলা বেশ কঠিন।”
অবিনাশ ছাড়াও ছবিতে দুটি অন্যতম চরিত্রে রয়েছেন কস্তুরী চক্রবর্তী ও নবাগতা সঙ্গীতা সিনহা। কস্তুরীকে দেখা যাবে অবিনাশের বিপরীতে। তাঁর ভালবাসার মানুষ হিসেবে। অন্যদিকে সঙ্গীতাকে দেখা যাবে এক বাঙালি বাড়ির গৃহবধূ রূপে। এই চরিত্রটি একটি খারাপ বিয়ের শিকার। ছোটপর্দার পরিচিত মুখ কস্তুরীকে ইতিমধ্যে দর্শকরা দেখেছেন ‘নটী বিনোদিনী’ ধারাবাহিকে। নান্দীকার থেকে থিয়েটার ট্রেনিংপ্রাপ্ত কস্তুরী কাজ করেছেন রাজা ঘোষের শর্ট ফিল্ম ‘উড়ান’ ও বাংলাদেশি ছবি ‘হঠাৎ তুমি’-তে। অপরদিকে বর্ধমানে চন্দন সেনের থিয়েটার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত সঙ্গীতা ২০১৯-এ জিতেছেন মিসেস এশিয়া গ্র্যান্ড ইউনিভার্সের সম্মান।
অ্যাসর্টেড মোশান পিকচার্স ও এসএস ১ এন্টারটেনমেন্টসের ব্যানারে নির্মিত এই ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছেন অরিত্র দাস, সর্বাণী মুখোপাধ্যায় ও শৈলেন্দ্র কুমার। কাহিনি ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক স্বয়ং। চিত্রনাট্য লিখেছেন প্রবাতপ্রতিম অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাতনি গার্গী মুখোপাধ্যায়। তাঁকে চিত্রনাট্য লিখতে সহায়তা করেছেন সৈকত দাস, সিনেমাটোগ্রাফার মধুরা পালিত। আবহাওয়ার বিষয়টিকে মাথায় রেখেই জুলাই থেকেই এই ছবির শুটিং শুরু করবেন রামকমল।তাঁর মতে, “গ্রীষ্ম ও বর্ষা এই দুই ঋতুই আমার প্রয়োজন এই ছবির জন্য। আশা করছি আমরা দুটো সময়কেই ছবিতে ঠিক মতো তুলে ধরতে পারব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.