Advertisement
Advertisement
Shruti Das

‘এখন আমি পুরো গিন্নি’, পুজোর চারদিন কী করবেন শ্রুতি? নিজেই জানালেন প্ল্যান

'আমার কাছে পুজোয় বাইরে যাওয়ার বিষয়টা এখন আর নেই। তার জন্য আমার কোনও আক্ষেপও নেই'- অকপট শ্রুতি।

Celebrity Durga Puja: actress Shruti Das shared her puja plan of this year
Published by: Arani Bhattacharya
  • Posted:September 11, 2025 1:21 pm
  • Updated:September 12, 2025 2:51 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়েব সিরিজ ও বড়পর্দায় কাজ করার পর সম্প্রতি ছোটপর্দায় ফিরেছেন অভিনেত্রী শ্রুতি দাস (Shruti Das)। জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘জোয়ার ভাটা’তে দর্শক নতুন ধাঁচের চরিত্রে দেখছেন তাঁকে। বহুদিন পর তাঁর ছোটপর্দায় প্রত্যাবর্তনে বেজায় খুশি শ্রুতির অনুরাগীরা। পুজোর মুখে নতুন ধারাবাহিকের ব্যাঙ্কিংয়ের চাপ সামলে কীভাবে এই বছরের পুজো প্ল্যান করছেন অভিনেত্রী শ্রুতি তা জানতেই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। ফোনের ওপার থেকে এবারের পুজোর প্ল্যান জানালেন অভিনেত্রী।

Advertisement

শ্রুতি বললেন,’সারাদিন বাড়ির পুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকি। গতবছর যেহেতু পুজোর সমস্ত তিথি রাতে পড়েছিল তাই কোথাও বেরোতে পারিনি। তবে এই বছর ইচ্ছা আছে সারাদিন পুজো সামলে, সমস্ত অতিথি আপ্যায়ণ সেরে রাতে একটু বেরোব। স্বর্ণেন্দু একেবারেই ভিড় পছন্দ করে না। তাই ও যাবে কিনা জানি না, তবে মা-বাবাকে নিয়ে বেরোব। কিন্তু হ্যাঁ, এইবছর আমি আমার জেঠুকে হারিয়েছি মাত্র কয়েকদিন আগে। তাই এই বছর কালাশৌচ চলছে। এই কারণে তাই পুজোর কোনও নিয়মেই আমি সেভাবে যোগ দিতে পারছি না। যেহেতু আমার এখনও সামাজিকভাবে বিয়েটা হয়নি, এবং গোত্রান্তর হয়নি তাই এটা এই বছর আমাকে মানতে হবে। এই কারণে মনটাও বেশ খারাপ। সেই জন্য বিশেষকিছু শপিংও করিনি। কিন্তু যদি বুঝি রাতে বেরোতে পারছি তাহলে শেষ মুহূর্তে হয়তো কিনব।”

Actress Shruti Das got married to Swornendu Samaddaar

কাটোয়ার পুজো কীভাবে কাটত শ্রুতির, তা জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, “কাটোয়াতে আমি খুব বেশি পুজো কাটাইনি। আমার যেহেতু কলকাতায় মামাবাড়ি তাই ছোট থেকেই পুজোটা কলকাটাতেই কাটিয়েছি। তবে হ্যাঁ, দশমীতে কাটোয়ায় ফিরে যেতাম। ঠাকুর বিসর্জন থেকে সিঁদুর খেলা, ধুনুচি নাচ সবটাই উপভোগ করতাম। এখন সেটা আর হয় না তাই পুরো বিষয়টাই খুব মিস করি। কলকাতায় কাজের সূত্রে চলে আসার পর থেকে কাটোয়ার পুজো দেখতেও আর যাওয়া হয় না। প্রায় ছ’বছর হয়ে গিয়েছে। স্বর্ণর সঙ্গে সম্পর্কের পর থেকে আর সেভাবে ওখানকার পুজো দেখতে যেতে পারিনি। কাটোয়ার পুজোর একটা নিজস্বতা আছে। যদিও কলকাতার মতো এত জাঁকজমকপূর্ণ নয় তবে সেখানকার পাড়ার পুজো ও আশপাশের বনেদি বাড়ির পুজোর একটা আলাদা আমেজ রয়েছে।” একইসঙ্গে ছোটবেলার পুজোর নস্ট্যালজিয়া ভাগ করে নিতে গিয়ে শ্রুতি বলেন, “ছোটবেলার পুজোর নস্ট্যালজিয়া বলতে যেটা মনে পড়ে তা হল অনেক বছর আগে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে গিয়ে জানতে পেরেছিলয়াম যে, ম্যাডক্স স্কোয়ারে সেই সময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘দুর্গা’র নায়িকা ও খলনায়িকা দু’জন আসছেন বিশেষ অতিথি হিসাবে। অর্থাৎ সন্দীপ্তা দি ও স্বাগতা দি। তাঁদের একঝলক দেখার জন্য মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাডক্স স্কোয়ার পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেদিন অত মানুষের ভিড়ে আমিও মিশে ছিলাম। আজ মনে পড়লে মনে হয় ভগবান কোথাও গিয়ে আমার মনের ইচ্ছা বুঝেছিলেন। তাই আমাকেও সেই জীবনটা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর আজ আমি নিজে একজন অভিনেত্রী। আজ আমি যখন কোথাও অতিথি হিসাবে আই আমার সেসব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। ছোটবেলার পুজোর নস্ট্যালজিয়া বলতে আমার এটাই সবথেকে বেশি মনে পড়ে”

Shruti and Swornendu

আজ স্বর্ণেন্দুঘরনি শ্রুতির পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে প্রেমের পর প্রথম পুজো কীভাবে কেটেছিল জানতে চাইলে বলেন, “২০১৯ -র পুজোর আগে আমাদের সম্পর্ক শুরু। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসেই শুরু হয় আমাদের প্রেম। তখন খুব টেনশনেই দিন কাটত। মনে পড়ে ওইবছর সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম দু’জন। বাড়িতে জানিয়ে আসতাম ঠিকই কিন্তু তাও তখন খুব রেস্ট্রিকশনে দিন কাটত। তখন আমাদের বিষয়টা এত সহজ ছিল না। ওর বাড়ির পুজোটা আগে ওর ইন্সটিটউটে হত। এখন সেই পুজোয় সপরিবারে গেলেও সেদিন আমি একাই গিয়েছিলাম। সেখানে ও বেশ কিছুজনকে আমার সঙ্গে পরিচয় করে দিচ্ছিল। পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলছিল যে, ‘আমার গার্লফ্রেন্ড’। তখন আমাদের প্রেমে একটা লুকোছাপা ছিল, চাপা উত্তেজনা ছিল, সেই মিষ্টি বিষয়গুলি এখন মিস করি খুব। এখন তো পুরো গিন্নি হয়ে গিয়েছি। তবে পুজো প্রেম বলে আমার কাছে আলাদা করে কিছু নেই। এমনকি বিশেষ দিনের প্রেম বলেও আমার কাছে কিছু নেই। এত আমি বুঝি না। আমার কাছে প্রেম মানে একসঙ্গে থাকা। যে কথাটা দুই অক্ষরের কিন্তু গভীরতা অনেক। যে মানুষটা এই গভীরতা বোঝে তার সঙ্গেই প্রেম করা উচিত।”

Shruti Das

বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো আর পেটপুজো প্রায় সমার্থক। ভূরিভোজ ছাড়া বাঙালির দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ। শ্রুতির কাছেও কি একই? এই নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, “বাইরের খাবার এখন খুবই কম খাই। একসময় ভীষণ খেতাম। তবে বাড়ির পুজোতে আমাদের নানা রকমের খাবার রান্না হয়। সেই দিয়েই আমাদের ভূরিভোজের পর্ব চলে। সঙ্গে নবমীর দিন মাটন মাস্ট। নবমীতে বাড়িতে বিশাল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন থাকে। কয়েকদিন পুজোয় নিরামিষ খাওয়ার পর সেইদিন আমিষ খাই আমরা। বাইরের খাবার খেয়ে পুজোর ভূরিভোজ হয় না আমার আর। আমার কাছে পুজোর ভূরিভোজ মানে নবমীর মাটন ভাত আর বাকি দিনগুলো নানারকমের নিরামিষ খাবার। কোনওদিন পোলাও, কোনওদিন খিচুরি, কোনওদিন ফ্রায়েড রাইস। সবটাই খুব মজা করে করি। ওই কদিন বাড়ির অতিথিদের আমি নিজে হাতে খাবার পরিবেশন করি। এটা আমার কাছে সবথেকে প্রিয় বিষয়। আমার কাছে পুজোয় বাইরে যাওয়া, মজা করার বিষয়টা এখন আর নেই। তার জন্য আমার কোনও আক্ষেপও নেই। কারণ মা তাঁর বাড়িতেই আসেন যাঁর অনেক সৌভাগ্য। আমি নিজেকে তাঁদের মধ্যে একজন বলে মনে করি। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ