বাবুল হক, মালদহ: এ যেন উলটপুরাণ! আমের জেলায় আমের দর কেজি প্রতি ১৫০ টাকা! তা-ও মরশুমের শেষবেলায়। না, এই আম কিন্তু দক্ষিণ ভারত থেকে আসছে না। এই আম খোদ মালদহেরই। ‘আশিনা’ প্রজাতির আম। মরশুমের পরও গাছে থাকে ‘আশিনা’। আমের মরশুম শেষে এখন একাই ‘রাজা’। মালদহের আমবাগানে এই মুহূর্তে ফজলি, হিমসাগর কিংবা আম্রপালির দেখা মিলবে না। পরের বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এখনও মালদহের বাজারে উঁকি দিচ্ছে মালদহেরই ‘আশিনা’ আম। ঝুলছে আমবাগানেও। কিছু কিছু গাছে এখনও ‘আশিনা’ আম, যা নিয়ে চাষিদের যেন পোয়াবারো। পাইকার, ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি নয়, চাষিরা নিজেরাই রোজ এক-দুই ঝুড়ি করে ‘আশিনা’ আম বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।
যা বিক্রিও হচ্ছে চড়া দামে। ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। তাতে কী! কিনে নিতে কেউ কার্পণ্য করছেন না। সিজনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আম চান আমজনতা। ইংরেজবাজারের গৌড়বঙ্গ, পর্বত্যা, রামচন্দ্রপুর, ফুলবাড়িয়া, পীরগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকার বাগানে বাগানে এখনও ‘আশিনা’ আম রয়েছে। রতুয়া এবং কালিয়াচকেও গাছে গাছে ঝুলছে এই ‘আশিনা’। ফুলবাড়িয়ার আমচাষি ছিদাম মণ্ডল বলেন, “সব আম ফুরিয়ে যাওয়ার পর বহু গাছে ‘আশিনা’ আম রয়ে যায়। আমরা এভাবেই চাষ করি। আমের সিজন দেড়মাস আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার বাজারে একাই ‘আশিনা’। সোনার দরে বিক্রি হচ্ছে।”
গৌড়ের পর্বত্যার সুকুমার মণ্ডল বলেন, “ছিটেফোঁটা যেটুকু আম দেখছেন, সেটা বিক্রি করেই সারা বছরের উপার্জন হয়ে যাবে। মরশুমে আমের দর ছিল ২৫-৩০ টাকা কেজি। ‘আশিনা’র পাঁচগুণ দর পাচ্ছি।” মালদহ শহর ছাড়াও গ্রামীণ এলাকা সুজাপুর, মিলকি, চাঁচোল, সামসি বাজারেও শেষবেলায় আশিনার চড়া দাম। যেন আম আর আপেল একদর। আপেলও বিকোচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, “এবার জেলার প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এই বছর জেলায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়ে হয়েছে। প্রত্যেক বছরই শেষ মুহূর্তে ‘আশিনা’ আম বেশি দাম দিয়ে কিনে খেতে হয়। এবার দামটা আরও বেশি। একশো থেকে দেড়শো টাকা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.