রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: মাত্র ১০ টাকা নিয়ে ফুলের চাষ শুরু করেছিলেন। এখন পুঁজি ১০ লক্ষ টাকা। কোনও লটারি বা কারও সহযোগিতা নয়। শুধু পরিশ্রম করে নিজের ভাগ্য ফিরিয়েছেন আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের ডাঙাপাড়া গ্রামের ফুল চাষি নৃপেন্দ্র দাস। ডাঙাপাড়া এলাকাটি বর্তমানে ফুলপাড়া নামেই পরিচিতি পেয়েছে। জানা গিয়েছে, এই গ্রামের প্রায় দেড়শো পরিবার ফুল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু নৃপেন্দ্রবাবুর জীবন সংগ্রামের কাহিনি একটু অন্যরকম।
এক সময় অন্যের নার্সারিতে কাজ করতেন। কিন্তু ২৫ বছর আগে নিজের কাজ করার মজুরি থেকে সংসার খরচ করে ১০ টাকা জমিয়েছিলেন। সেই ১০ টাকা দিয়ে ডাঙাপাড়ার বাড়ির উঠোনের এক কোনে রক্তগাঁদা ফুলের চাষ করেছিলেন। সেই ১০টাকা পুঁজি নিয়ে চাষ করা রক্তগাঁদা ৪০ টাকা বিক্রি করতে পেরেছিলেন নৃপেন্দ্রবাবু। কঠোর পরিশ্রমের প্রথম ফল পাওয়ার পর আর পিছনের দিকে তাকাতে হয়নি তাঁকে। বর্তমানে তিন ছেলে, স্ত্রী নিয়ে বড় সংসারের সকলের আয়ের উৎস এই ফুলের চাষ। নৃপেন দাস বর্তমানে গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী-সহ নানা বাহারি দেশি, বিদেশি ফুলের চাষ করে থাকেন। নৃপেনবাবু বলেন, “আমি সামান্য ১০ টাকা দিয়ে ফুলের চাষ শুরু করেছিলাম। এখন ১০ লক্ষ টাকার চারা সব সময় আমার কাছে থাকে। পাঁচ কাঠা জমি কিনেছি। এই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাড়াও নেপাল, ভুটানে আমার চাষ করা ফুল রপ্তানি করা হয়। সততাকে হাতিয়ার করে ২৫ বছরে আমি সাফল্য পেয়েছি।” ফুল চাষে নৃপেন্দ্র দাসের এই সাফল্য এলাকার বাসিন্দাদের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস। ফুল চাষে উৎসাহ বাড়ছে এলাকাবাসীর।
নৃপেন্দ্র দাসের সফলতায় খুশি আলিপুরদুয়ার মহকুমা উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক সন্দীপ মহন্ত। তিনি বলেন, “আলিপুরদুয়ারের উদ্যান পালন বিভাগ এখনও জেলা স্তরে উন্নীত হতে পারেনি। তাই ফুলচাষিদের আমরা খুব বেশি সহায়তা প্রদান করতে পারিনি। তবে সত্যি নৃপেন্দ্রবাবু আমাদের সকলকে গর্বিত করেছেন। ভবিষ্যতে অবশ্যই ওই এলাকার ফুলচাষিদের পাশে আমরা কীভাবে থাকতে পারি তা দেখছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.