স্টাফ রিপোর্টার, পুরুলিয়া: এক নিম্নচাপ কাটতে না কাটতেই আরেক নিম্নচাপের মুখে পশ্চিমাঞ্চল পুরুলিয়া। ফলে সেভাবে রোদ ঝলমলে নীল আকাশ না পাওয়ায় সমগ্র পুরুলিয়া জুড়ে বীজতলার কাজ ব্যাপকভাবে মার খাচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে বৃষ্টি চলছেই জেলায়। ফলে জনজীবন থমকে গিয়েছে। গত জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও ২৫ জুন পর্যন্ত ৯৪ শতাংশের অধিক বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে রবিবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান ৩১.২৩ মিলিমিটার।
পুরুলিয়ার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আদিত্য দুয়ারি বলেন, ‘‘আবহাওয়ার কারণেই বীজতলার কাজ করা যাচ্ছে না। তবে সময় এখন আছে।’’ আগের নিম্ন চাপের বর্ষণে এই জেলার কৃষকরা আশা করেছিলেন এবার হয়তো গত ২ বছরের মত পরিস্থিতি হবে না। একেবারে সময়মতো বীজতলার কাজ শেষ করা যাবে। কিন্তু পরিস্থিতি হয়ে গেল উল্টো। আবার একটি নিম্নচাপের বৃষ্টি। তাছাড়া দুই নিম্নচাপের মাঝখানে যে সাত দিন ছিল সেইকটা দিনও খামখেয়ালিপনা আবহাওয়া কৃষকরা বীজ ফেলতে পারেননি।
সাধারণভাবে প্রথমে কিছুটা বৃষ্টিতে জমি ভেজা। তারপর শুকনো আবহাওয়ায় বীজ তলার কাজ হলে ফলন ভালো হয়। এছাড়া কাদামাটিতেও বীজতলার কাজ হয়। তবে পরবর্তীকালে প্রচুর জলের প্রয়োজন পড়ে। পর্যাপ্ত জল না মিললে সেই বীজ বার হয় না। মাটি শুকিয়ে গেলে বিপদের মুখে পড়েন কৃষকরা। কাদা মাটিতে বীজগুলো উপরে থাকার কারণে পাখিরাও খেয়ে ফেলে। যারা বৃষ্টির মধ্যেই বীজতলা ফেলেছিলেন তারা এখন সমস্যায় পড়েছেন। দ্বিতীয় নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জল জমে যাওয়ায় তা রীতিমতো ফেলতে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে ভীষণই সমস্যায় তারা। গতবছর দেরিতে বর্ষা আসে। কিন্তু তারপরেও অতিবৃষ্টি।
ফলে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। আর তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩-এ বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন ব্যাপক মার খায়। তুম্বা ঝালদা গ্রামের কৃষক চিত্তরঞ্জন মাহাতো, আহাড়রা গ্রামের কৃষক অক্ষয় মাহাতো বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় রীতি রয়েছে ১৩ জ্যৈষ্ঠ রহিন পরব থেকে বীজ বপনের কাজ শুরু করেন কৃষকরা। কিন্তু সেইসময় বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলার কাজ করা যায়নি। তারপর নিম্নচাপের বৃষ্টির পর ভেবেছিলাম রোদ বার হলে ভালোভাবে বীজতলার কাজ হবে। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বীজতলার কাজ হয়নি। আর তার মধ্যে আবার নিম্নচাপ। জানি না এবার কি হবে।’’ অর্থাৎ বর্ষা আগে এসেও শান্তি নেই। বীজতলার কাজ না হওয়ায় চারা কবে রোপণ হবে তা বুঝতে পারছেন না কৃষকরা। এদিকে দেরিতে চারা রোপন হলে ফলনে মার খাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.