সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: একেই বোধহয় বলে কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষমাস। অসময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে গোটা রাজ্যেই প্রায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে, ঝরে গিয়েছে আমের মুকুল৷ তবে খুশির হাওয়া আনারস চাষিদের মধ্যে। বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের কুড়ি হাজার হেক্টর জমিতে বাড়তি আনারসের আশা করছেন অন্তত ৪০০০ কৃষক৷
শিলিগুড়ি উদ্যানপালন আধিকারিক প্রিয়রঞ্জন ষণ্ণিগ্রাহীও বলেন, “আনারসের পরিপুষ্টির ক্ষেত্রে এই বৃষ্টি খুবই উপযোগী। পাশাপাশি অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রেও তা সমান কার্যকরী। বৃষ্টির জেরে বাড়তি পুষ্টি পাবে গাছ।” উত্তরবঙ্গের আনারস চাষিদের সংগঠন নর্থবেঙ্গল পাইনঅ্যাপেল গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরুণ মন্ডল বলেন, “এই সময় সাধারণত শুকনো আবহাওয়া থাকে। এটি আনারস গাছ লাগানোর সময়। ফলে প্রতি বছর পাম্পের সাহায্যে জলসেচ করে গাছের পরিচর্যা করতে হয়। তবে মাটির নিচের জল গাছকে ততটা পরিপুষ্ট করতে পারে না, যতটা বৃষ্টির জলে সম্ভব। তাছাড়া এই মুহূর্তে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত আনারস গাছের বৃদ্ধিতে যেমন সহায়ক হবে, তেমনি এরপর যে ফল বেরোবে সেটিও প্রাকৃতিকভাবেই বেশি রসালো হবে। গুণগতভাবে আনারসের মান বৃদ্ধি পাবে। অন্য চাষের ক্ষেত্রে যেমন এই সময় বৃষ্টি ক্ষতি করে আনারস চাষের ক্ষেত্রে ঠিক উলটো। হঠাৎ বৃষ্টির ফলে যেমন একদিকে জলসেচের পরিশ্রম বাঁচবে, তেমনই খরচও অনেকটাই কমবে। তাই এই দফায় আনারস চাষ করে বেশি লাভ করা সম্ভব হবে।’’
এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে কুড়ি হাজার হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হচ্ছে। শিলিগুড়ির বিধাননগরে আনারস চাষ হচ্ছে চার হাজার হেক্টর এলাকায়। কৃষকদের ধারণা, এ বছর ছ’হাজার মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন করতে পারবেন তাঁরা। গত বছর সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি আনারস উৎপাদন হয়েছিল। এবারে ফল পাকার সময় যদি কোনওরকম অঘটন না ঘটে, তাহলে হিসেব মতো ফল মিলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.