Advertisement
Advertisement
Darjeeling

লাল মাকড়শার হানায় উধাও চা বাগানের সবুজ পাতা! দুশ্চিন্তা বাড়ছে পাহাড়ে

বিপর্যয়ে উত্তরের অন্তত ৫০ হাজার চা চাষির মাথায় হাত পড়েছে।

Red spider mite attacks damage Darjeeling tea gardens

মাকড়শার আক্রমণে লাল হয়ে যাচ্ছে চা বাগান। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:July 23, 2025 6:30 pm
  • Updated:July 23, 2025 6:30 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: কিছুদিন আগে সবুজ খেকো ‘লুপার ক্যাটার পিলার’ হানা দিয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে না উঠতেই এবার লাল মাকড়শার হানা। একরের পর একর চা বাগানের পাতা কুঁকড়ে কালো হয়েছে। পুজোর আগে এমন বিপর্যয়ে মাথায় হাত পড়েছে উত্তরের অন্তত ৫০ হাজার চা চাষির।

Advertisement

চা চাষি এবং বণিকসভাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, লাল মাকড়শার উপদ্রব চা বলয়ে নতুন কিছু নয়। কিন্তু ওই সমস্যা দেখা দেয় মার্চ-এপ্রিলের গরমে। গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় লাল মাকড়শা দ্রুত বংশ বিস্তার করে। বর্ষার মরশুমে বৃষ্টির জলে ধুয়ে যায়। বংশ বিস্তার করতে পারে না। এবার ভরা বর্ষায় একটানা বৃষ্টির দেখা নেই। তার উপরে বিক্ষিপ্তভাবে যতটুকু বৃষ্টি হচ্ছে তারপরই তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় লাল মাকড়শার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাতারাতি হেক্টরের পর হেক্টর চা বাগানে গাছের পাতা খেয়ে ফেলছে। ফলে গাছের বৃদ্ধি কমতে শুরু করেছে। চা পাতা উৎপাদন উদ্বেগজনকভাবে কমে যাওয়া শঙ্কা বেড়েছে। বাজারে প্রচলিত ওষুধে তেমন কাজ না হওয়ায় উত্তর দিনাজপুর, তরাই এবং জলপাইগুড়ি জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র চা চাষিদের অনেকেই অসময়ে চা গাছ ছেটে ফেলছেন। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “এবার চা শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়েছে। ভরা বর্ষায় বৃষ্টি নেই। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এর ফলে রোগ পোকার আক্রমণে নাজেহাল দশা হয়েছে।”

বিস্তীর্ণ এলাকার চা গাছের সবুজ দুটি পাতা ও কুড়ি নেই। ঝলসে, কুকড়ে লাল হয়েছে বাগানের পর বাগান। ময়নাগুড়ির রামশাই এলাকার চা চাষি মানিক সরাকার বলেন, “এক রাত সময় দিচ্ছে না। এদিকে ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। যে পাতা এখন বাগানে রয়েছে তা বিক্রিও হবে না।”  ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার,  কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর জেলা এবং শিলিগুড়ি মহকুমায় ৫০ হাজার ছোট চা বাগান রয়েছে। সেখান থেকে বছরে গড়ে ১ হাজার ২৫০ মিলিয়ন কেজি কাচা চা পাতা উৎপাদন হয়। ওই সমস্ত বাগানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। চা পাতা উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাঁদের একাংশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফোরাম অব স্মল টি গ্রোয়ার্স’-এর চেয়ারম্যান রজত কার্জি বলেন, “এবার আবহাওয়ার জন্য চা শিল্প ভয়ঙ্কর সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছে। চা বাগানের জন্য ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং দিনে রোদ, রাতে বৃষ্টি প্রয়োজন। সেটা মিলছে না। দিনে প্রখর রোদ। বৃষ্টি নেই। তার উপর এই লাল মাকড়শার হানা। শেষপর্যন্ত কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না।”

 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement