Advertisement
Advertisement
Duars

যুদ্ধবিরতি হলেও পুজোর আগে ইরানে চা রপ্তানি সম্ভব নয়! প্রবল ক্ষতিতে দুশ্চিন্তা ডুয়ার্সে

প্রভাব পড়তে পারে আগামী পুজো বোনাসেও।

Tea export to Iran not possible before Puja Duars worried over heavy losses
Published by: Suhrid Das
  • Posted:July 5, 2025 4:21 pm
  • Updated:July 5, 2025 4:21 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: মধ্যপ্রাচ্যে আপাতত যুদ্ধবিরতি। বিপুল ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কায় খুব তাড়াতাড়ি বাণিজ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এমন আশার আলো দেখছে না তরাই-ডুয়ার্স সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা বলয়। ইরান এবং সংলগ্ন উপসাগরীয় দেশগুলিতে ভারতীয় চা প্রায় এক তৃতীয়াংশ রপ্তানি হয়। সেখানে মূলত যায় অর্থডক্স চা। ইরান, ইজরায়েলের মধ্যে সংঘাতের কারণে ইরানে চা রপ্তানিতে স্থগিতাদেশ জারি হয়। আটকে যায় দেড়শো কোটি টাকারও বেশি দামের অর্থডক্স চা। সেই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে বলেও খবর।

Advertisement

এরপর যুদ্ধবিরতি হলেও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে এখনও থমকে আছে বাণিজ্য। পুজোর আগে ইরানে চা রপ্তানি সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন চা বণিকসভার কর্তারা। এদিকে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় উত্তরবঙ্গ এবং অসমের চা শিল্প অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়েছে। তার খারাপ প্রভাব আগামী পুজো বোনাসেও পড়তে পারে বলেও বণিকসভাগুলোর দাবি।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান সতীশ মিত্রুকা বলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি হলেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এক্সপোর্ট অফিসগুলো খোলেনি। এখনও ভারত থেকে ইরানে চা রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। পুজোর আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও মনে হচ্ছে না। এরপরও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে দাম কতটা মিলবে, সেটা নিয়েও সংশয় থেকে যাবে।” ইন্ডিয়ান টি প্ল্যানটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব রামঅবতার শর্মা জানান, মধ্য প্রাচ্যের যুদ্ধের যে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে তরাই, ডুয়ার্স-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা শিল্পে সেটা কাটতে অনেক সময় লাগবে।

উত্তরবঙ্গ ও অসমের অর্থডক্স চায়ের বিরাট বাজার রয়েছে ইরান ও সংলগ্ন দেশগুলোতে। সেখানে চা রপ্তানি স্বাভাবিক না হলে দাম স্থিতিশীল জায়গায় আসবে না। চা বণিকসভাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের অর্থডক্স চা ইরান ছাড়াও আজারবাইজান, কাজাখস্তানে রপ্তানি হয়। প্রায় ২৬২ মিলিয়ন কেজি চা সেখানে যায়। ওই চায়ের বেশিরভাগ উৎপাদন হয় অসমে। যুদ্ধের কারণে ফার্স্ট ফ্লাশের চা রপ্তানি মারাত্মকভাবে মার খেয়েছে। জুলাই মাস থেকে বর্ষার চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ হলেও চায়ের বুকিং আসছে না। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণেই সেখানকার ব্যবসায়ীরা চা কিনতে সাহস পাচ্ছেন না। চা উৎপাদকরাও বুঝতে পারছেন না পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে। ইতিমধ্যে চা নিলাম কেন্দ্রগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে চা সরবরাহকারী সংস্থা না থাকায় অর্থডক্স চায়ের চাহিদা ও দাম দুটোই কমছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেকেই অর্থডক্স চা উৎপাদন বন্ধ করে সিটিসি চা উৎপাদনে চলে গিয়েছেন। কিন্তু সেটাতেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “একা ইরান ২০ মিলিয়ন কেজির বেশি অর্থডক্স চা কিনে থাকে। যুদ্ধবিরতি হলেও সেখানে চা রপ্তানি এখনও বন্ধ আছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিমানবন্দরগুলো এখন যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবেই ইরান সংলগ্ন দেশগুলোতেও চা রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। আশা করা যাচ্ছে, পুজোর পর কিছুটা চা রপ্তানি শুরু হতে পারে।” চা বণিকসভাগুলোর শঙ্কা, মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় উত্তরবঙ্গ এবং অসমের চা শিল্প যে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়েছে, সেটা সামলে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তার খারাপ প্রভাব আগামী পুজো বোনাসে পড়তে বাধ্য।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement