সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বিতর্ক অব্যাহত। নাগরিকত্ব প্রমাণে ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আমজনতা থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই আবহে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার (ইউআইডিএআই) প্রধান (সিইও) ভূবনেশ কুমার জানিয়ে দিলেন, নাগরিকত্ব প্রমাণে “আধার কখনই প্রাথমিক পরিচয়পত্র নয়”।
ইউআইডিএআই ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ‘আধার’ তৈরি করে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংস্থার প্রধান দাবি করেন, জাল ‘আধার কার্ড’ পরীক্ষা করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি উল্লেখ করেন, কিউআর কোডের মাধ্যমে সুরক্ষিত আধার কার্ড। ভূবনেশ জানান, ফোটোশপ ব্যবহার করে আধার কার্ড নকল করা হয়েছে, এমন ঘটনা সামনে এসেছে। আরও জানান, কিছুদিনের মধ্যেই আধার অ্যাপ তৈরি হয়ে যাবে। বলেন, “ইতিমধ্যে ‘ডেমো রান’ সফল হয়েছে।… এই অ্যাপটি আধার নম্বরধারীর সম্মতিতে ডিজিটালভাবে পরিচয়পত্র সংরক্ষণ করবে।” এর ফলে সব ক্ষেত্রে আধার কার্ডের ‘হার্ড কপি’র প্রয়োজন হবে না। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে ভূবনেশের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, আধার কখনই নাগরিকের “প্রাথমিক পরিচয়পত্র নয়”।
বছর শেষেই বিহারে ভোট। তার আগে সে রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধনের নির্দেশিকা জারি করেছে কমিশন। বলা হয়েছে, ভোটার তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। প্রামাণ্য নথি হিসেবে আধার কার্ড বা রেশন কার্ড গৃহীত হবে না। শুধুমাত্র বয়সের শংসাপত্র, বোর্ডের অ্যাডমিটের মতো নথিই গ্রহণযোগ্য। কমিশনের যুক্তি, দেশজুড়ে আধার জালিয়াতির জেরেই এই নির্দেশিকা। কমিশনের এই নির্দেশের জেরে বহু যোগ্য ভোটারের নাম বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলি।
অন্যদিকে আধার ও ভোটার কার্ড নিয়ে পুরনো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যদি আধার বা ভোটার কার্ড প্রাথমিক পরিচয়পত্র না হয় তবে ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কোনটি? তা কি জন্মের শংসাপত্র? সেক্ষেত্রে একজন নাগরিকের অন্যতম অধিকার ভোটদানে ভোটার কার্ড কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়? পাশাপাশি রাষ্ট্রের দেওয়া খাদ্যপণ্য পেতেও (রেশন ব্যবস্থা) রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্ত করতে হচ্ছে। আধার যদি প্রাথমিক পরিচয়পত্র না-ই হয়, তবে এর পিছনে যুক্তিই বা কী? আধার ও ভোটার যদি নাগরিকের প্রাথমিক পরিচয়পত্রের মধ্যে না পড়ে, তবে ভোটার কার্ড-আধার কার্ড সংযুক্তকরণের প্রয়োজনটাই বা কী? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এই বিভ্রান্তি দূর করতে পারেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। মাঝখান থেকে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.