ফাইল ছবি।
নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির পর এবার সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটি (জেপিসি)তে প্রতিনিধি পাঠাবে না বলে জানিয়ে দিল আম আদমি পার্টি। রবিবার এক ভিডিও বার্তায় কেন্দ্রের এই বিলের তীব্র সমালোচনা করে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং জানিয়ে দিলেন, তাঁদের কোনও প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকছে না। একের পর এক বিরোধী দল এই কমিটি থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ায় করায় স্বাভাবিকভাবেই চাপে কমিটির অন্যতম সদস্য কংগ্রেস।
রবিবার সংবিধান সংশোধনী বিলের তীব্র বিরোধিতা করে এক ভিডিও বার্তায় সঞ্জয় সিং বলেন, “মোদি সরকার এক অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বিল নিয়ে এসেছে। এই বিলের লক্ষ্য হল অবিজেপি রাজ্য সরকারগুলিকে ভেঙে দেওয়া ও সরকার কেনা, বিরোধী নেতাদের জেলে পোরা এবং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করতে বিল আনা হয়েছে। ফলে আম আদমি পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই বিলের জন্য যে সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটিতে আমাদের কোনও সদস্য থাকবেন না। দুর্নীতি দূর করতে এই বিল নয়, কারণ দুর্নীতির সঙ্গে বিজেপির রোমিও-জুলিয়েটের মতোই সম্পর্ক। দেশের সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা বিজেপিতে। দেশের সম্পত্তি ওরা আদানির হাতে তুলে দিচ্ছে। দুর্নীতি ওদের মজ্জায়। ফলে এই বিলের উদ্দেশ্য দুর্নীতি ধ্বংস করা নয়, দেশের গণতন্ত্রকে নষ্ট করা।”
এর আগে এই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। শনিবার তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটিতে তাদের কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না। কারণ এটা একটা নাটক বলেই তাঁরা মনে করছেন। এ প্রসঙ্গে ডেরেক লিখেছেন, ‘মোদি-শাহ জেপিসিকে প্রহসনে পরিণত করেছে। সমস্ত জেপিসিতেই শাসক দলের সাংসদদের সংখ্যার আধিক্যর জেরে চেয়ারম্যান পদে বিজেপিরই কাউকে বসানো হয় এবং কমিটির যে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয় তা সর্বসম্মতিক্রমে নয় বরং বিরোধীদের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীও ভোটাভুটির মাধ্যমে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। চূড়ান্ত রিপোর্টে বিরোধীদের ডিসেন্ট নোট জুড়ে দেওয়া ছাড়া তাদের মতামতের কোনও প্রতিফলনই সেখানে থাকে না।
मोदी जी का बिल भ्रष्टाचार के ख़िलाफ़ नही।
ये बिल सरकारों को गिराने और ख़रीद फ़रोख़्त करने के मक़सद से लाया जा रहा है।
मोदी और भ्रष्टाचारियों का प्यार
लैला-मजनूँ हीर-राँझा और रोमियो-जूलिएट की तरह पूरी दुनिया में मशहूर है।— Sanjay Singh AAP (@SanjayAzadSln)
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংসদে তিনটি বিল পেশ করেছে কেন্দ্র- ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনিক সংশোধনী বিল এবং জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, ২০২৫। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রবা রাজ্যের মন্ত্রীরা যদি একটানা ৩০ দিন জেলে থাকেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডযোগ্য শাস্তির অভিযোগ থাকে, তবে ৩১তম দিন থেকেই তাঁরা পদ হারাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বুধবার লোকসভায় এই বিল পেশ করতেই বিরোধীরা এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করে সংসদে কপি ছিড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কংগ্রেস ও আরজেডি-র দাবি, এই বিল সাংবিধানিক নীতি ভঙ্গ করছে, নিরপরাধ না প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত দোষী নয়, এই ন্যায়বোধকে অগ্রাহ্য করছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে এর অপব্যবহার হতে পারে। এই অবস্থায় বিলটিকে ৩১ সদস্যের সংসদীয় যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির পর এবার সেই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল আপ। কংগ্রেস এখনও এই কমিটিতে থাকলেও, একের পর এক বিরোধী দল কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করায় চাপ বাড়ছে হাত শিবিরের উপরেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.