Advertisement
Advertisement
Karnataka

‘বহু ধর্ষিতার দেহ কবর দিয়েছি’, ২৫ বছর পর কর্নাটকের মন্দিরের কুকীর্তি ফাঁস দলিত সাফাইকর্মীর

১৯৯৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে একাধিক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছিল কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ধর্মস্থলায়।

After 25 years, Dalit sanitation worker exposes the infamy of a temple in Karnataka
Published by: Gopi Krishna Samanta
  • Posted:July 7, 2025 11:20 am
  • Updated:July 7, 2025 11:20 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে একের পর এক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছিল কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ধর্মস্থলায়। নাবালিকা, স্কুলছাত্রী, তরুণী, কিশোরীদের অপহরণ করে যৌন নির্যাতনের পর খুন করা হত। তারপর দেহগুলি মাটি চাপা বা আগুনে পুড়িয়ে গায়েব করে দেওয়া হত। নিখোঁজ কন্যাদের পরিবারের কেউ কেউ থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারেনি।

Advertisement

“ধর্মস্থলা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি-কর্মীরাই তাঁদের যৌন লালসা চরিতার্থ করতে স্কুল ছাত্রী, তরুণীদের তুলে আনত। আর সেই সব দেহ সৎকার করতে হত আমাকে। ২০১০ সালে ১২-১৫ বছর বয়সি একটা মেয়েকে মাটি চাপা দিতে হয়। তার ঊর্ধ্বাঙ্গে স্কুলের ইউনিফর্ম ছিল। নিচের স্কার্ট ও অন্তর্বাস ছিল না।” এমনই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি কর্নাটকের জনপ্রিয় ওই শিবমন্দিরের প্রাক্তন সাফাইকর্মীর। সম্প্রতি ধর্মস্থলা থানায় গিয়ে গোটা ঘটনার বিবরণ, ছবি-সহ প্রমাণ জমা দিয়েছেন ওই দলিত সাফাইকর্মী। তাঁর আর্জি, যে সব জায়গায় তিনি ধর্ষিতা-মৃতাদের কবর দিয়েছিলেন সেই সব জায়গায় গিয়ে পুলিশ যেন দেহাবশেষ তুলে এনে তদন্ত শুরু করে। ওই ব্যক্তি বলেন, “১১ বছর আগে আমার পরিবারের এক নাবালিকার উপরেও অত্যাচারের চেষ্টা করেছিল মন্দিরের লোকজন। এর পরই আমি পড়শি রাজ্যে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাই। সেখানে পরিচয় বদলে, বারবার বাড়ি বদলে থাকতাম। মনে হত, যে কোনও সময় ওই লোকগুলো এসে আমাদের খুন করতে পারে। যারা ওদের কথা শুনত না, তাঁদের খতম করে দিত। আমার নিচু জাতের পরিবারে জন্ম। ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ধর্মস্থলা মন্দির ও নেত্রাবতী নদীর আশপাশ পরিষ্কার করার কাজ করেছি।”

মন্দিরের উচ্চপদস্থ কর্মীরা ডেকে তাঁকে দেহগুলি গোপনে সৎকারের নির্দেশ দিতেন। এক-একটা চেহারা বীভৎস হয়ে থাকত। ভয়াবহ সেই স্মৃতি প্রসঙ্গে অভিযোগকারীর বক্তব্য, “প্রথমে আমি ভাবতাম আত্মহত্যা করে বা জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে মেয়েগুলির। বেশিরভাগ দেহেই কোনও পোশাক থাকত না। কয়েকজনের দেহে যৌন নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যেত। গলা টিপে মেরে ফেলার প্রমাণও দেখতে পেতাম। ২০ বছর বয়সি এক মহিলার মুখে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে দেহটি খবরের কাগজে মুড়ে ফেলে দিয়েছিল।”

এমন জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার আত্মগ্লানি বইতে না পেরে, অবশেষে অভিযোগকারী বিচার ব্যবস্থার দ্বারস্থ হলেন। থানায় জানানোর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কে ভি ধনঞ্জয়কে তাঁর অভিযোগের একটি প্রতিলিপিও দিয়েছেন। অভিযোগকারীর আশঙ্কা, মূল অভিযুক্তদের নাম তিনি প্রকাশ করার পর তিনি খুন হতে পারেন বা নিখোঁজ হয়ে যেতে পারেন। দক্ষিণ কন্নড়ের পুলিশ সুপার এস পি অরুণ জানান, গত ৩ জুলাই ওই ব্যক্তির অভিযোগ পেয়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২১১ (এ) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁর পরিচয় প্রকাশ না করার আবেদন জানিয়েছেন অভিযোগকারী।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement