Advertisement
Advertisement
AITC

‘বাংলা’কে ‘বাংলাদেশি’ ভাষার তকমা! দিল্লি পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে সরব তৃণমূল

বাংলা বলায় ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে ঘাসফুল শিবির।

AITC Rise Voice Against Delhi Police introduce Bengali language as Bangaladeshi Language
Published by: Gopi Krishna Samanta
  • Posted:August 3, 2025 3:51 pm
  • Updated:August 3, 2025 7:43 pm  

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ‘বাংলা’ ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ ভাষার তকমা! ফের কাঠগড়ায় দিল্লি পুলিশ। বঙ্গভবনে পাঠানো একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে উল্লেখ করেছে দিল্লি পুলিশ। আর এই বিষয়টিকে নিয়েই এবার সরব হল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।

Advertisement

এক্স হ্যান্ডেলে দিল্লি পুলিশের সেই বিতর্কিত চিঠিটি পোস্ট করেছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু কী রয়েছে সেই চিঠিতে। তৃণমূলের তরফে পোস্ট করা চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলা ট্রান্সসেলেটর দরকার দিল্লি পুলিশের। কেননা কয়েকদিন আগে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথিগুলি বাংলা ভাষায় লেখা। আর সেই সব নথির তথ্য যাচাইয়ের জন্যই একজন ট্রান্সসেলেটর দরকার। আর সেই চিঠিতেই বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষার তকমা দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি পুলিশের সেই চিঠিকেই হাতিয়ার করে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে চিঠির ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘বিজেপি বাংলা বিদ্বেষের সকল সীমা পার করে ফেলছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের পর এবার অমিত শাহের দিল্লি পুলিশ সব সীমা অতিক্রম করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশি ভাষা বলে দাগিয়ে দিল।’

তৃণমূলের অভিযোগ, ‘এটি কোনও ভুল নয়। এটি একটি ইচ্ছাকৃত অপমান, পরিকল্পিত চক্রান্ত, যেখানে সংবিধানে স্বীকৃত এবং ধ্রুপদী ভাষার মধ্যে অন্যতম একটি ভাষাকে পরিচয়হীন করে দেওয়া হচ্ছে এবং কোটি কোটি বাংলা ভাষাভাষী ভারতবাসীকে নিজেদের দেশেই বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চলছে। বাংলা ভাষায় সারা বিশ্বে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ কথা বলেন। এটি ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি। সেই ভাষাকে বাংলাদেশি বলা কেবলই একটি ঘৃণ্য অপমান নয়,  ভাষাটিকে ভারতীয় পরিচয় থেকে মুছে দেওয়ার, তার বৈধতা খারিজ করার, এবং বাংলাভাষী মানুষদের বহিরাগত প্রমাণ করার নির্লজ্জ চেষ্টা।’ এটা যদি ভুল করে হয়ে থাকে তাহলে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনার সঙ্গে যে সব আধিকারিক জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ ও এই চিঠির সংশোধন করার দাবি জানানো হয়েছে।

এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘সংবিধানের ৩৪৩ অনুচ্ছেদ এবং অষ্টম তফসিলের সরাসরি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বাংলাদেশি বলে কোনও ভাষা নেই। বাংলাকে বিদেশী ভাষা বলা শুধু অপমান নয়, আমাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং আত্মীয়তার উপর আক্রমণ করা হয়েছে। বাঙালিরা তাঁদের নিজস্ব মাতৃভূমিতে বহিরাগত নয়। এই কারণেই আমরা বিজেপিকে বাংলা বিরোধী এবং জমিদার বলি। তারা ভারতের বৈচিত্র্যকে সম্মান করে না।

উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরেই বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর বিভিন্ন রাজ্যে অত্যাচারিত হওয়ার অভিযোগ উঠছে। বাংলা ভাষায় কথা বলায় তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে অত্যাচার করা হচ্ছে বলেই অভিযোগ। কখনও মারধর, কখনও তাঁদের উপর হামলা, লুটপাট, উপার্জন কেড়ে নেওয়া, কখনও আবার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ শোনা গিয়েছে। তারই প্রতিবাদে পথে নেমে আন্দোলনে শামিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে দু’টি মিছিল করেছেন তিনি। এবার জঙ্গলমহলে পথে নেমে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement