সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলাই লামার উত্তরসূরি বাছা নিয়ে বিতর্ক চলছেই। ভারতের মন্তব্যের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল চিন। তাঁকে এবার পালটা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। জানিয়ে দিলেন, দলাই লামাই ঠিক করবেন তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন। প্রয়াণের পরে তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন তা নিয়ে বুধবারই মুখ খুলেছিলেন তিব্বতি ধর্মগুরু। বিতর্কের সূত্রপাত তখন থেকেই। তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিন জানিয়েছিল পঞ্চদশ দলাই লামার মনোনয়নের জন্য তাদের অনুমোদন লাগবে। কিন্তু এই দাবি নস্যাৎ করে দেয় নয়াদিল্লি। কেন্দ্রের সাফ কথা, নির্ধারিত ট্রাস্ট ছাড়া অন্য কারও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই। এহেন মন্তব্যের পরই এবার পালটা আক্রমণ করে বেজিং। তাদের দাবি, নয়াদিল্লি যেন চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলায়। এতে দুই দেশের সম্পর্কেই প্রভাব পড়বে। এবার ফের চিনকে পালটা দিল ভারত।
দলাই লামা জানিয়েছিলেন, তাঁর উত্তরসূরি কে হবে সেটা নির্ধারিত করবে ট্রাস্ট। চিনের দাবির জবাবে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ”পরবর্তী দলাই লামার মনোনয়নের দায়িত্ব গাহদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের হাতে। এই প্রক্রিয়ায় বাইরের কাউকেই হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না।” বৃহস্পতিবার সেই কথারই অনুরণন দেখা যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর মন্তব্যে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ”যাঁরা দলাই লামার অনুসারী তাঁরা সকলেই জানেন, নির্ধারিত সংগঠনই তাঁর উত্তরসূরি বাছবেন। তিনি এবং সেই ট্রাস্ট ছাড়া অন্য আর কারও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই।”
এই পরিস্থিতিতে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ”শব্দ ব্যবহার ও প্রতিটি পদক্ষেপের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত ভারতের। চিনের অভ্যন্তরণী বিষয়ে নাক গলালে তার প্রভাব ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও পড়বে।”
কিন্তু এহেন মন্তব্যে পালটা দিলেন কিরেন রিজিজু। তিনি বলেন, ”দলাই লামা ইস্যুতে কোনও সংশয়ের জায়গাই নেই। সারা পৃথিবীর মানুষ যাঁরা বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাস করেন এবং দলাই লামাকে অনুসরণ করেন তাঁরাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমার কিংবা সরকারের এই নিয়ে কিছু বলার কোনও দরকারই নেই। কে হবনে পরবর্তী দলাই লামা তা উনি নিজেই বাছবেন।” এরই পাশাপাশি চিনের মন্তব্য নিয়ে রিজিজুর প্রতিক্রিয়া, ”আমি চিনের মন্তব্যে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না। আমি যা বলছি তা ভক্ত হিসেবে। আমার দলাই লামার প্রতি বিশ্বাস রয়েছে। যাঁরা ওঁকে অনুসরণ করেন তাঁরা চান উনিই নিজের উত্তরসূরি বেছে নিন।”
১৯৫৯ সালে চিনা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে তিব্বত থেকে দলবল সমেত পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বর্তমান দলাই লামা। তারপর থেকেই তাঁকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে মনে করে বেজিং। দলাই লামা বহুবার ভারতের সাহায্য নিয়ে চিনের হাত থেকে তিব্বতকে স্বাধীন করার চেষ্টা করেছেন। সেই নেহরুর আমল থেকেই তাঁকে নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিনের কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলেছে। সেই টানাপোড়েনের মাত্রা যে এতটুকু কমেনি তা ফের প্রমাণ হল বর্তমান পরিস্থিতিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.