সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভায় অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনায় বিরোধীদের ‘লুজ’ বলে একের পর এক ছয় হাঁকালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর ভাষণে উঠে এল ২০০৮ সালে বাটলা হাউস এনকাউন্টারে কংগ্রেসে নেতাদের নরম মনোভাব ও সোনিয়া গান্ধীর কান্নার কথা। শাহের অভিযোগ, সেই সময় জঙ্গিদের মৃত্যুতে কেঁদে ভাসিয়েছিলেন সোনিয়া। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদের বক্তব্য সামনে আনেন শাহ। বলেন, চাইলে সেই সময়ে খুরশিদের সেই বক্তব্য সংসদ হলে চালাতেও পারেন তিনি।
মঙ্গলবার সংসদে বক্তব্য রাখার শুরুতেই পহেলগাঁও সন্ত্রাসীদের খতম করায় সেনার সাফল্য তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর পরই কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, “আমরা তিন মাসের মধ্যে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিদের তিন মাসের মধ্যে খুঁজে বের করে হত্যা করেছি। কংগ্রেস তাদের সময়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিয়েছিল?” একইসুরে বলেন, “গতকাল পর্যন্ত বিরোধীরা জিজ্ঞেস করছিল পহেলগাঁও অপরাধীরা কোথায় গেল? আমাদের উত্তর, ‘হামারি সেনা ঠোক দি’ (আমাদের সেনা মেরে ফেলেছে)। আপনাদের সময়ে যারা লুকিয়ে ছিল তাদেরও খোঁজ চলছে।”
এরপরই কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়ে ২০০৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাটলা হাউস এনকাউন্টারের কথা মনে করিয়ে দেন অমিত শাহ। সলমন খুরশিদের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, সেই সময় জঙ্গিদের মৃত্যুতে কেঁদে ভাসিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। শাহের কথায়, “সেদিন সকালে আমি সকালের খাবার খাচ্ছিলাম। তখন দেখলাম সলমন খুরশিদকে কাঁদছেন। আমার মনে হয়েছিল গুরুতর কিছু ঘটেছে। অথচ তিনি বলেন, সোনিয়া গান্ধী বটলা হাউসে জঙ্গিদের মৃত্যুতে কেঁদেছিলেন। যদি তাঁকে কাঁদতেই হত, তাহলে শহিদ মোহন শর্মার জন্য কাঁদা উচিৎ ছিল, জঙ্গিদের জন্য নয়।” শাহ আরও বলেন, “আমি সেই ভিডিও ফোনে রেখে দিয়েছি আপনারা চাইলে ভিডিওটি এখানে দেখাতেও পারি।”
সংসদে এদিন অমিত শাহের ভাষণের পর তাঁর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে শাহের প্রশংসা করে তিনি লেখেন, ‘লোকসভায় অসাধারণ ভাষণে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজি অপারেশন সিঁদুর এবং অপারেশন মহাদেব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন। এইসব অভিযান ভারতের মাটি থেকে জঙ্গিদের নিকেশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর ভাষণ সন্ত্রাসমুক্ত ভারতের লক্ষ্যে আমাদের সরকারের প্রচেষ্টার উপরও আলোকপাত করা করেছে।’
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে পাঁচটি ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ৩০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে। বিস্ফোরণের এক সপ্তাহ পর, এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট মোহন চাঁদ শর্মার নেতৃত্বে দিল্লি পুলিশের একটি দল দক্ষিণ দিল্লির বাটলা হাউসের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। সেখানেই লুকিয়ে ছিল জঙ্গিরা। পুলিশের গুলির লড়াইয়ে দুই জঙ্গি, আতিফ আমিন এবং মহম্মদ সাজিদের মৃত্যু হয়। শহিদ হন মোহন শর্মাও। সেই ঘটনা তুলেই মঙ্গলবার সংসদে আক্রমণ শানালেন শাহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.