Advertisement
Advertisement
Fuel Control Switch

৭ বছর পর বোধোদয়! সমস্ত বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল খতিয়ে দেখার নির্দেশ DGCA-র, গলদ কি সুইচেই?

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা প্রাণ কাড়ে ২৬০ জনের।

Aviation Regulator Orders Fuel Control Switch Inspection Of Boeing, Other Planes
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:July 14, 2025 7:37 pm
  • Updated:July 14, 2025 7:40 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগেই আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে ভারতের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা ‘এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’(এএআইবি)। তদন্তে বারবার প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা অস্বীকার করা হলেও তদন্তকারীরা বিমানের ‘ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ’টি খতিয়ে দেখছেন। এই পরিস্থিতিতে এবার বোয়িং-সহ ভারতে চলাচলকারী সকল বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল দেশের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)। তাহলে কি যত গলদ ওই সুইচেই?

Advertisement

গত ১২ জুন আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বিজে মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনের উপর ভেঙে পড়ে এআই ১৭১ বিমানটি। দুর্ঘটনা নিয়ে ১৫ পাতার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেয় ডিজিসিএ। সেখানে জানানো হয়, বিমানবন্দর থেকে ওড়ার এক সেকেন্ডের মধ্য়েই জ্বালানির দুটি সুইচই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে এই বিষয়টির উপর বিশেষ নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। এর মাঝেই এবার ডিজিসিএ নির্দেশ দিয়েছে বোয়িং-সহ সকল বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি ডিজিসিএ সাই জানিয়েছে, এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক এবং ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। জানা গিয়েছে, যেসব বিমানের মডেলগুলো পরীক্ষা করা হবে তার মধ্যে রয়েছে ৭৩৭, ৭৪৭, ৭৫৭, ৭৬৭, ৭৭৭ এবং ৭৮৭ এর মতো বোয়িং বিমান, ৭১৭ এবং ৭২৭ এর মতো পুরানো মডেলও। তালিকায় রয়েছে কিছু ম্যাকডোনেল ডগলাস বিমান (MD-11 এবং MD-90 সিরিজ)। অনেক ভারতীয় ক্যারিয়ার এই বিমানগুলো পরিচালনা করে।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। আমেরিকাতেও প্রশ্ন উঠেছে। বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ নিয়ে ২০১৮ সালে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) সতর্ক করেছিল। ৭ বছর আগে FFA জানায়, কিছু বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলোর ‘লকিং ফিচার’ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ইনস্টল করা হয়েছে। যা বিপজ্জনক হতে পারে। তবে FFA সে সময় স্রেফ আশঙ্কার কথা বলেছিল। ওই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলোকে ‘অসুরিক্ষত’ বলে দেগে দেওয়া হয়নি। ফলে কোনওরকম পদক্ষেপও করা হয়নি। এই একই ডিজাইনের সুইচই ব্যবহার করা হয়।

এই প্রেক্ষিতে ডিজিসিএ জানিয়েছে, ভারত এবং বিদেশের বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা ইতিমধ্যেই এই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের পরীক্ষা শুরু করেছে। ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোকে এখন তাদের পরীক্ষা পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। এবং পরবর্তীতে বিমান কর্তৃপক্ষ এবং তাদের সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসগুলোতেও একটি সর্বশেষ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ডিজিসিএ কর্মকর্তারা সাফ বলে দিয়েছেন যে, বিমান ওড়ার ছাড়পত্র নিশ্চিত করার জন্য ২১ জুলাইয়ের সময়সীমা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

কিন্তু কী এই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ? উড়ানের সময় কোনও বিমানের ইঞ্জিন চালু করতে কিংবা অবতরণের পর ইঞ্জিন বন্ধ করতে এই সুইচটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মাঝআকাশেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসলে যে কোনও ড্রিমলাইনার বিমানেরই দুটি ইঞ্জিন থাকে। মাঝআকাশে কোনও কারণে একটি ইঞ্জিন অকেজ হয়ে পড়লেও দ্বিতীয় ইঞ্জিনটির সাহায্যে খুব সহজেই বিমানটি আকাশে উড়তে পারে। যদি আচমকা কোনও বিমানের একটি ইঞ্জিনে বিভ্রাট দেখা যায়, তাহলে পাইলট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মেনে ওই ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন। ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচয়ের মাধ্যমেই এই কাজটি করা হয়। তবে সেক্ষেত্রে বিমানের উচ্চতা ৪০০ ফুটের উপর থাকা দরকার। সেই উচ্চতায় যাওয়ার আগেই যদি পাইলট ভুলবশত ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচটি বন্ধ করে দেন, তাহলে দুর্ঘটনা অবশ্যম্ভাবী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানটি ৪০০ ফুটের নিচে ছিল। তাহলে পাইলটের ভুলের কারণেই কি আহমেদাবাদের দুর্ঘটনা? এই প্রশ্নটিই এখন উঠতে শুরু করেছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement