সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসুস্থ প্রতিবেশীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই ছিল ‘অপরাধ’। এর জেরে ১৩ মাস জেল খাটতে হল মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এক যুবককে। সম্প্রতি জেলমুক্ত হয়েছেন তিনি। জীবনের মতোই ভাঙাচোরা ঘরে ফিরে কপাল চাপড়াচ্ছেন যুবক। প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনার পর অসহায় সহনাগরিককে সাহায্য করতে কেন এগিয়ে যাবেন কেউ?
ভোপালের আদর্শনগরের বস্তির বাসিন্দা রাজেশ বিশ্বকর্মা। যাঁর জীবনের ৩৯৫টি দিন লৌহকপাটের অন্তরাল কেটেছে সহনাগরিক সাহায্য করার দোষে। ঘটনাটি ২০২৪ সালের ১৬ জুনের। পাশের বাড়ির এক মহিলা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি নিজেই সাহায্য চান রাজেশের কাছে, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিতে বলেন। সেইটুকুই করেছিলেন যুবক। মহিলাকে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়ে নিজের কাজে চলে যান।
সন্ধেবেলা মানবিকতার খাতিরে অসুস্থ প্রতিবেশিনীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজেশ। ওমনি ইউটার্ন ঘটনায়। হাসপাতালে পৌঁছতেই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কেন? যেহেতু প্রতিবেশিনীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, রাজেশই তাকে খুন করেছেন। গোটা বিষয়টা বলার চেষ্টা করলেও আইনরক্ষকরা যুবকের কথা শুনতে চায়নি। আইনজীবী দূর অস্ত, তাঁর খোঁজ নেয়নি পরিবারের কেউ। আসলে যুবকের মা-বাবা নেই। বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বস্তিতে একাই থাকতেন। ফলে লকআপ থেকে আদালত, সেখান থেকে কারাবাস হয় রাজেশের ভবিতব্য।
ভগবানের উপর ভরসা করেই গারদের ভিতরে ৩৯৫ দিন কাটিয়ে দেন ভোপালের শহরের বস্তিবাসী যুবক। গারদের ভিতরে আশায় আশায় ছিলেন, একদিন নিশ্চয়ই নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। সম্প্রতি ভাগ্যের ফেরে বেকসুর খালাস পান রাজেশ! তাঁর বোনের অভিযোগ, দাদার আধার কার্ড, মোবাইল ফেরত নিতে গেলে তার কাছে ৫০০ টাকা চায় পুলিশ। তেরো মাস জেল খাটা রাজেশের প্রশ্ন, “আমি তো শুধু অসুস্থ একজনকে সাহায্যই করেছিলাম। তার জন্য এত বড় শাস্তি?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.