বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রীর প্রশংসা কসবা আইন কলেজের ঘটনায় বিজেপির তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্যের মুখে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন, এই ধরনের প্রকল্প যে রাজ্যে চলছে সেখানে আরজি কর বা কসবা আইন কলেজের ঘটনা ঘটে কী করে?
কসবার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে মঙ্গলবার রিপোর্ট জমা দেন সত্যপাল সিং, বিপ্লব দেবরা। পালটা তোপ দাগেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতারা মিথ্যাচার করছেন। কীসের তদন্তের কথা বলছেন? ইতিমধ্যেই তো অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে। পুণে, উন্নাওয়ের সময় কোথায় থাকেন এনারা? বাংলা মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপদ।” পাশাপাশি কমিটির সদস্য বিপ্লব দেবকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, “বিপ্লব দেব কোন মুখে কথা বলছেন? উনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সেখানে কী হয়েছিল? ওনার তো কথা বলার অধিকার নেই। এখানে ফাঁসির সাজা পুলিশ করায়।”
কসবা আইন কলেজ গণধর্ষণকাণ্ডে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। নির্যাতিতার এফআইআরের বয়ান ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বদলে দিয়েছে পুলিশ’-এমনই দাবি করে তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপি সাংসদ তথা মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার সত্যপাল সিং। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, কোনও বর্তমান বিচারপতির নজরদারিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করালে তবেই সত্য সামনে আসবে। সত্যপাল সিং বলেন, “এই প্রথম দেখলাম, এফআইআরে নির্যাতিতার তরফে অভিযুক্তদের যে নাম লেখা হয়েছিল, তা কেটে দিয়ে শুধু এম বা জে লেখা হয়েছে। পুলিশ নিজের মতো করে অভিযোগপত্র বদলে দিয়েছে। যেখানে অভিযোগই পালটে দেওয়া হয়, সেখানে ন্যায়বিচার কীভাবে আশা করা যায়।”
গত ২৫ জুন কসবার আইন কলেজ চত্বরে কলেজের এক ছাত্রীর উপর দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নাম জড়ায় টিএমসিপি নেতা মনোজিৎ মিশ্র-সহ তিনজনের। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে চারজনকে গ্রেপ্তারও করে। কিন্তু এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে ৩০ জুন কলকাতায় এসে পৌঁছয় বিজেপির চার সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই প্রতিনিধি দল। সেখানেই বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সত্যপাল বলেন, “বাংলায় আইনের শাসন নেই। সমাজবিরোধীরা শাসকদলের ছত্রছায়ায় রয়েছে। তাই পুলিশও তাঁদের বিরুদ্ধে নড়াচড়া করতে ভয় পায়। এ রাজ্যে মেয়েরা সুরক্ষিত নন। কসবার ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তা বর্তমান শাসকের আমলে বেড়ে চলা অপরাধের নমুনা।” প্রতিনিধিদলের অপর সদস্য ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের অভিযোগ আরও বিস্ফোরক।
তিনি বলেন, “মনোজিৎ মিশ্রর নামে আগেও পুলিশ মারধর, কলেজ চত্বরে অশান্তি-এমন একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ, তাঁর পেছনে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা কলেজ পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান অশোক দেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.