Advertisement
Advertisement
America

শুল্ক বাড়তেই বিপত্তি, বিপদের মুখে ভারতের হাজার হাজার কোটির ব্যবসা

আমেরিকাকে শিক্ষা দিতে সে দেশের পণ্য ভারতে বয়কটের ডাক ব্যবসায়ীদের।

Business of 1700 yo be hit after America increased tariff protest in Rajasthan
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:August 12, 2025 6:16 pm
  • Updated:August 12, 2025 6:16 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া থেকে তেল কেনার জের।ভারতের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। নয়া এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় পণ্যের উপর একধাক্কায় এবার ৫০ শতাংশ শুল্ক বসেছে। আর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার পথে নেমে বিক্ষোভ দেখালেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। ভারতের উপর যেভাবে শুল্ক চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার বিরুদ্ধেই আজ মঙ্গলবার জয়পুরে রাজা পার্ক মেন স্কোয়ারে বিক্ষোভ দেখান ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, অবিলম্বে মার্কিন পণ্য বয়কটের ডাকও দেন তাঁরা। ট্রাম্পের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। পাশাপাশি মার্কিন পণ্য এবং ডলারে আগুন জ্বালিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

মার্কিন শুল্ক নীতির কারণে বড়সড় ধাক্কা জয়পুরের রপ্তানিকারীদের। বিশেষ করে গয়নাশিল্প, হস্তশিল্প এবং পোশাক সেক্টরে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। জয়পুর থেকে ব্যাপক পরিমাণে এই সমস্ত পণ্য আমেরিকায় রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু শুল্ক নীতির কারণে এতে বড় প্রভাব পড়েছে। রাজা পার্ক ব্যাপার মণ্ডলের সভাপতি রবি নায়ার বলেন, ”যেভাবে আমেরিকা দুই ধাপে ২৫ শতাংশ করে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে তা অনৈতিক। এহেন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া প্রয়োজন।” ব্যবসায়িক সংগঠনের তরফে মার্কিন পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়েছে। আর সেটাই আমেরিকাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলে দাবি রবির।

নতুন বাজার খুঁজতে সময় লাগবে। আর এই সময়ের মধ্যে ঝুঁকির মুখে পড়বে ৭ লক্ষ শিল্পী ও কর্মী যাঁরা আমেরিকার রপ্তানি বিভাগে কাজ করে। তাই আপাতত সরকারের দ্বারস্থ তাঁরা। রাজস্থান এক্সপোর্টার্স জয়েন্ট ফোরামের কোঅর্ডিনেটর নবনীত ঝালানি জানিয়েছেন, মার্কিন ক্রেতা ও স্থানীয় রপ্তানিকারীরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ”আমাদের হাতে মাত্র ২১ দিন আছে। হাতে সময় আছে মাত্র ২৮ অগস্ট। ২৫ শতাংশ পেনাল্টি ছাড়া রপ্তানি করা যাবে।” 

যোধপুরের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারী, যিনি মূলত কাঠের বিভিন্ন ফার্নিচার এবং মেটাল হ্যান্ডক্র্যাফট আমেরিকায় রপ্তানি করে থাকেন। বছরে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার পণ্য আমেরিকায় রপ্তানি করে থাকেন। কিন্তু মার্কিন নীতির কারণে রপ্তানি একধাক্কায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। তাঁর দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ধাক্কায় প্রায় এক লাখ শিল্পী এবং শ্রমিক কার্যত বিপদের মুখে। যোধপুর হ্যান্ডক্রাফট এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভারত দীনেশ বলেন, কেন্দ্রের উচিত অবিলম্বে এমএসএমই সেক্টরকে বাঁচানো এবং আমেরিকার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলা। এখানেই শেষ নয়, আমেরিকার কারণে বিপদে বিকানেরের উল ব্যবসাও।

সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এমন ২৫০টি ইউনিট প্রত্যেকদিন এক-দেড় কেজি উল তৈরি করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসা যে মন্দ তা মেনে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত কার্পেট তৈরির ক্ষেত্রে এই উল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই কাজের সঙ্গে এক লাখের মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত। ফলে এই বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

উদয়পুর এর কোয়ার্টজ ইন্ডাস্ট্রি রাজস্থানের অন্তত ৪০-৪৫ শতাংশ রপ্তানি করে আমেরিকায়। তাঁদের আশঙ্কা ভিয়েতনাম বা তুরস্কের মতো দেশের কাছ থেকে সস্তায় কিনবে ক্রেতারা। মার্বেল রপ্তানিও ধাক্কা খেতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। ১০০ কোটির রফতানি এখন অনিশ্চয়তার মুখে।

এখানেই শেষ নয়, আমেরিকার শুল্কবৃদ্ধিতে ধাক্কা খেতে পারে কোটার পাথর ও বালু পাথরের ব্যবসাও। বর্তমানে এই ব্যবসায় ২০০ কোটি টাকার রপ্তানি হয় বছরে। সে ক্ষেত্রেও আমেরিকায় ক্রেতা হারাতে পারে রাজস্থান। এছাড়া হাদতি এলাকা থেকে রপ্তানি হয় তেল ছাড়া কেক, দুগ্ধজাত বন্যা ও রাসায়নিক। বছরে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ফেডারেশন অফ রাজস্থান এক্সপোর্টারের সভাপতি রাজীব অরোরা কেন্দ্রর কাছে প্রোডাকশন ইনসেনটিভ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে অর্থনীতি। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ