ফাইল ছবি
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এবার লোকসভার অন্দরে কড়া প্রশ্নের মুখে বিজেপি। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে চারটি প্রশ্ন করেছেন। বাণিজ্য চুক্তি কোন পর্যায়ে রয়েছে এবং এর ভবিষ্যতের পাশাপাশি শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে প্রশ্ন রেখেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে। কেন্দ্র একপ্রকার মেনে নিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কের ঠিক কী প্রভাব ভারতের উপর পড়বে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মোট বাণিজ্যের প্রায় ৫৫ শতাংশের উপর অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে।
কেন্দ্রের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রশ্ন ছিল, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি কতদিনের মধ্যে সাক্ষরিত হতে পারে? তিনি প্রশ্ন করেন, “ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির বর্তমান অবস্থা কী এবং কবে এই চুক্তি সম্পূর্ণ হবে?” এই প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই সংক্রান্ত আলচনা শুরু হয়েছে। মোট পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে দুদেশের। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ১৪ থেকে ১৮ জুলাই ওয়াশিংটনে পঞ্চম দফার আলোচনা হয়েছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, দেশের বাণিজ্যের উপর, বিশেষত টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিকাল এবং ইলেক্ট্রনিক ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ শুল্কের প্রভাব কতটা পড়বে তার মূল্যায়ন করা হয়েছে কিনা? পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন করেন, শুল্ক অনিশ্চয়তা এবং বাণিজ্য বাধা সংক্রান্ত বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা? এই প্রশ্নের জবাবে জিতিন প্রসাদ জানিয়েছেন, গত ৭ আগস্ট থেকে কিছু কিছু পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আমেরিকায় রপ্তানি করা মোট পণ্যের ৫৫ শতাংশ এই শুল্কের আওতায় আসবে। ২৭ আগস্ট থেকে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর দাবি, ফার্মাসিউটিকালস এবং ইলেক্ট্রনিক ক্ষেত্রের উপর কোনও অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হয়নি। ফলে ওই ক্ষেত্রগুলি বিশেষ প্রভাবিত হবে না।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ জানিয়েছেন, টেক্সটাইল-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে শুল্কের প্রভাব আরও বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করবে। এর মধ্যে রয়েছে চাহিদা, পণ্যের মান-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জিতিন প্রসাদের বক্তব্য, রপ্তানিকারক, এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার শুল্ক ইস্যুতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি দাবি করেছেন, এটি কূটনৈতিক ব্যর্থতা। তিনি দাবি করেছেন, ভারতকে এর কড়া জবাব দিতে হবে। আইটি, ফার্মাসিউটিকাল এবং ইলেক্ট্রনিক ক্ষেত্রের উপর এর প্রভাব হবে গভীর। ট্রাম্পের পাশাপাশি মোদি সরকারের সমালচনা করে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে ভারতের অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানি কমবে এবং চাকরির উপরে এর প্রভাব পড়বে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.