সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ফের বাংলার বিরোধিতার নিদর্শন দেখাল কেন্দ্র! দরিদ্রদের রোজগারের জন্য সরকারি প্রকল্প ১০০ দিনের কাজ চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এনিয়ে দুর্নীতির যেসব অভিযোগ উঠেছিল, তাতে যথেষ্ট ভর্ৎসনা করেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, আমজনতার কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দিতে হবে, আগস্ট থেকেই চালু করতে হবে ১০০ দিনের কাজ। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। এই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নতুন নয়। গত তিনবছর ধরেই মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ কর্ম প্রকল্পের অধীনে দিনমজুরির কাজের অর্থ পাচ্ছে না বাংলা। বকেয়ার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এনিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বরাবর সোচ্চার হয়েছে। শ্রমিকদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে বহু প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। এমনকী দিল্লির দরবারে গিয়েও দাবি পেশ করেছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু জনমুখী প্রকল্প চালু রাখার স্বার্থে তৃণমূলের যাবতীয় প্রচেষ্টা কার্যত ব্যর্থ করেছে কেন্দ্রের একগুঁয়েমি। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের পালটা অভিযোগ, বিভিন্ন জেলায় এই কাজের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। তাই টাকা আপাতত বন্ধ।
এনিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্য সরকারের একটি মামলার ভিত্তিতে মাস দুই আগে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, দুর্নীতি রুখতে রাজ্য সরকারকে যে কোনও শর্ত দিতে পারবে কেন্দ্র। তবে ১০০ দিনের কাজ আবার শুরু করতে হবে। সমগ্র প্রকল্প কোনওভাবেই অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করে রাখা যাবে না। এই কাজের মাধ্যমেই দারিদ্রসীমার নিচে থাকা বহু মানুষের রোজগার হয়। জনস্বার্থে এই কাজ চালু রাখা জরুরি। আগস্টের ১ তারিখ থেকে সেই কাজ চালুর নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। কিন্তু মাসের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কাজ চালু হয়নি। উপরন্তু সোমবার হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র।
এনিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ”ওরা চায় না বাংলা ১০০ দিনের টাকা পাক, গরিব মানুষ টাকা পাক। তাই তো আমরা বলি, বিজেপি বাংলা বিরোধী, জনবিরোধী।” এখন দেখার, শীর্ষ আদালতে এই বিষয়টি নিয়ে শুনানিতে কী উঠে আসে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.