অভিযুক্ত ছাঙ্গুর বাবা।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মান্তকরণ র্যাকেটের তদন্তে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মূল অভিযুক্ত জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবাকে বিপুল অর্থের যোগান দিয়েছিল মুসলিম দেশগুলি। টাকার অঙ্ক ছিল ৫০০ কোটি। এর মধ্যে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল ২০০ কোটি টাকা। বাকি ৩০০ কোটি টাকা আসে হাওয়ালার মাধ্যমে নেপাল হয়ে। ভারতের মাটিতে ধর্মান্তকরণ প্রক্রিয়া চালাতেই বিদেশ থেকে পাঠানো হয় এই টাকা।
তদন্তে এটিএস জানিয়েছে, নেপালের কাঠমান্ডু-সহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ১০০-র বেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। সেখানেই জমা করা হয় এই বিপুল পরিমাণ টাকা। এই অর্থ পাঠানো হয়েছিল, পাকিস্তান, দুবাই, সৌদি আরব, তুরস্কের মতো মুসলিম দেশ থেকে। নেপালের ব্যাঙ্কে সেই টাকা পাঠানোর পর সেখান থেকে এজেন্টের মাধ্যমে টাকা পৌঁছন হয় ভারতে। এজেন্টরা এখান থেকে ৪-৫ শতাংশ কমিশন নিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টাকা ডিপোজিট মেশিনের মাধ্যমে জমা করা হত। তদন্তে জানা যাচ্ছে, টাকা ভারতে পৌঁছনোর পর উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর, শ্রাবস্তী, বহরাইচ, লখিমপুরের মতো জেলাগুলিতে এজেন্ট ধরে ফরেন এক্সচেঞ্জ করা হত। উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি বিহারের বহু জেলায় ছড়িয়েছিল এই চক্রের সদস্যরা।
এটিএসের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিপুল টাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা পাঠানো হয়েছে অযোধ্যায়। এখানেই সবচেয়ে বেশি হিন্দু মহিলাদের ধর্মান্তর করা হয়েছে। এই চক্রের অন্যতম মাথা ছিলেন এই ছাঙ্গুর বাবা। এই ধর্মগুরু ও তাঁর সহযোগীদের অন্তত ৪০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে নবীন রোহরার ৬টি অ্যাকাউন্টে ৩৪.২২ কোটি টাকা ও নসরীনের অ্যাকাউন্টে ১৩.৯০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দুবাই, আরব আমিরশাহী-সহ একাধিক জায়গায় এই ছাঙ্গুর বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কতোয়ালির উতরৌলায় মধপুরে অবস্থিত জালালউদ্দিনের বাড়ি বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। বাড়িটি নিতু নবীন রোহরা ওরফে নাসরিনের স্ত্রী নবীন রোহরার নামে নথিভুক্ত। সরকারের দাবি, জালালউদ্দিন এই বাড়ি নির্মাণের অর্থ দিয়েছিলেন। প্রশাসনের দাবি, সরকারি জমিতে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই বাড়ি থেকে অবৈধ ধর্মান্তকরণের র্যাকেট শুরু করেন জালালউদ্দিন। লখনউ থেকে মুম্বই পর্যন্ত সক্রিয় ছিল এই চক্র। জালালউদ্দিনের লোকেরা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে, টোপ দিয়ে, তো কখনও কখনও ভয় দেখিয়ে মুসলিম ধর্মে আনা হত। এই কাজের মাধ্যমে চলত বিপুল টাকার লেনদেন। জালালউদ্দিনের ফাঁদে পড়ে কিছু মানুষ মুসলিম হওয়ার পর ফের হিন্দু ধর্মে ফিরে আসেন, এরপরই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা। এরপরই শুরু হয় ধড়পাকড়। গোটা ঘটনার তদন্তে নামে এটিএস। জালালউদ্দিনের সঙ্গীদের মাধ্যমে এই গ্যাংয়ের বাকিদের গ্রেপ্তার করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.