বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ক্ষমতায় এলে বিহারে পিছিয়ে পড়া জনজাতির জন্য ১০ দফা উন্নয়নমূলক কমর্সূচির কথা ঘোষণা করল কংগ্রেস। বুধবার পাটনায় দলের শীর্ষ নীতি নির্ধারক কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে পঞ্চায়েত ও পুরসভায় পিছিয়ে পড়া জনজাতির জন্য সংরক্ষণ ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা, প্রতিটি বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে নির্বাচনের প্রচারে ‘ভোটচুরি’ নিয়ে আরও বেশি করে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রয়োজনে বিজেপি বিরোধী সমস্ত দলকে একজোট করে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত হয়।
ঠিক ভোটের মুখে ৮৫ বছর পর বুধবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হল বিহারে। এর আগে জাতীয় কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক এই কমিটি বিহারে বৈঠকে বসেছিল ১৯৪০ সালে অবিভক্ত বিহারের রামগড়ে। সেবার বৈঠকের পৌরোহিত্য করেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। বৈঠকের লক্ষ্য ছিল, স্বাধীন ভারতের জন্য সংবিধান প্রণয়নের একটি সংবিধান পরিষদ গঠন করা। আর এবার সেই সংবিধান রক্ষার জন্য বিজেপি-জেডিইউ জোটকে পরাস্ত করতে ভোটের ময়দানে নামতে চলেছে দেশের প্রাচীনতম দল। কংগ্রেসের এই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বিহারের পাটনায় করা নিয়ে স্বভাবতই চাঁচাছোলা আক্রমণ করেছে বিজেপি। ছিপে কামড় দেওয়ার ঢঙে তারা বলেছে, ইন্ডিয়া জোটে এখনও আসন সমঝোতাই হয়নি। তা নিয়ে চিড় ধরেছে ঐক্যে। বিশেষত কংগ্রেস এখনও বিহার ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদে লালুপ্রসাদ যাদব-পুত্র তেজস্বী যাদবের নামই ঘোষণা করেনি।
অন্যদিকে, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এদিন আলোচনার বিষয় ছিল, বিহারে ভোট কৌশল নিরূপণ এবং রাহুল গান্ধীর আনা ভোটচুরির অভিযোগ নিয়ে বিজেপি সরকারকে চেপে ধরা। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এদিন পাটনায় কংগ্রেস নেতাদের চাঁদের হাট বসেছিল। ওয়ার্কিং কমিটির স্থায়ী ও আমন্ত্রিত সদস্য ছাড়াও দলের মুখ্যমন্ত্রীরা, প্রদেশ সভাপতি ও বিধান পরিষদীয় নেতানেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। বিহার বিধানসভা ভোটের পালে হাওয়া দিয়ে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের মস্তিষ্ক বিভ্রম ঘটে গিয়েছে। বিজেপি তাঁকে এখন ঘাড়ের বোঝা মনে করে। তিনি এও বলেন, বিহারের ভোটই হল মোদি সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনের বিদায়ঘণ্টা। ভাষণে দলের সভাপতি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ভোটচুরি, আর্থিক শ্লথগতি, বেকারি, সামাজিক মেরুকরণ এবং সংবিধানকে অপমান করার অভিযোগ তোলেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন ৮৫ বছর আগে এখানেই প্রথম সংবিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব পেশ হয়েছিল। সেখানেই এক ব্যক্তি, এক ভোটের অধিকার প্রস্তাব গৃহীত হয়।
কংগ্রেসের এইসব অভিযোগের জবাবে বিজেপি নেতা রবিশংকর প্রসাদ বলেন, এই বৈঠক আসলে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য। কংগ্রেস কোনও দিনই বিহারকে গুরুত্ব দেয়নি। জগজীবন রামকে ওরা রাজনীতি করে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। জয়প্রকাশ নারায়ণকে জেলে পুরে তাঁকে কিডনির অসুখে মেরে ফেলেছে। আরেক বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বলেন, কংগ্রেস বিহারের মানুষকে অপমানিত করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনওদিন ওদের বিহারের কথা মনে পড়েনি। আর এখন তেজস্বী যাদবের মুখ্যমন্ত্রী না হতে পারার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকতে চলে এসেছে। ওরা তো এখনও তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী মুখই ঘোষণা করেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.