সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজপথের ধারে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িচালক। পথচারীদের সেদিকে হুঁশ নেই। প্রায় ১২ ঘণ্টা ওইভাবে কার্যত সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে। নরেন্দ্র কুমারকে সাহায্য দূরের কথা, যা ছিল সব কেড়ে নিলেন কেউ কেউ। নরেন্দ্রর সঙ্গে ছিল মোবাইল, একটি ব্যাগ এবং মাত্র ১২ টাকা। সেটাও ছাড়ল না লোলুপ সমাজ। অমানবিকতার চূড়ান্ত সাক্ষী থাকল নয়াদিল্লির কাশ্মীরি বাস টার্মিনাল এলাকা।
নরেন্দ্র কুমার আদতে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরের বাসিন্দা। পেশায় তিনি বাসচালক। গত মঙ্গলবার তিনি জয়পুর থেকে গাড়ি নিয়ে ফিরছিলেন। বিকেল পাঁচটা নাগাদ নয়াদিল্লির কাশ্মীরী গেট বাস টার্মিনালে ক্রসিংয়ের কাছে তিনি গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। অভিযোগ এই সময় তাঁকে অজ্ঞাতপরিচয় একটি গাড়ি ধাক্কা মেরে উধাও হয়ে যায়। ৩৫ বছরের নরেন্দ্রর গলা, পা এবং মেরুদণ্ডে জোরাল আঘাত লাগে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। প্রায় ১২ ধণ্টা ওই অবস্থায় ছিলেন। এরপরের ঘটনা শিউরে ওঠার মতো। নরেন্দ্রর ভাই রাজকুমার জানান, গাড়ি ধাক্কায় দাদা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। ওঠার মতো ক্ষমতা ছিল না। প্রায় সারারাত রাস্তের ধারে পড়ে ছিলেন। এইসময় বহু পথচলতি মানুষ তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পেলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। রাজকুমারের অভিযোগ, সাহায্য দূরের কথা নরেন্দ্রর মোবাইলটিও কেড়ে নেওয়া হয়। সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগও উধাও হয়ে যায়। নরেন্দ্রর পকেটে ছিল মাত্র ১২ টাকা। দুষ্কৃতীরা সেই সামান্য অর্থও ছাড়েনি।
বুধবার সকালে পুলিশের কাছে খবর আসে। তারপরই নরেন্দ্রকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় একটি ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা বেগতিক বুঝে আহত ট্রাক চালককে নিয়ে যাওয়া হয় সফরদরজঙ্গ হাসপাতালে। পুলিশ এই ঘটনায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং চুরির মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্তরা হয়তো ধরা পড়বে। কিন্তু এই অমানবিকতার কী প্রকৃত শাস্তি মিলবে। আক্ষেপ নিয়ে এই প্রশ্ন তুলেছে হতভাগ্যর পরিবার।
ছবি: প্রতীকী
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.