Advertisement
Advertisement
Delhi

‘দুবাইয়ের এক শেখের যৌন সঙ্গী চাই…’, প্রকাশ্যে ছাত্রীকে করা অশ্লীল হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট দিল্লির ‘বাবা’র

রবিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ আগ্রার এক হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Delhi baba's sleazy chats surface
Published by: Subhodeep Mullick
  • Posted:October 1, 2025 1:57 pm
  • Updated:October 1, 2025 2:07 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছে দিল্লির স্বঘোষিত ধর্মগুরু স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী। ক্রমেই তার একাধিক কাণ্ড প্রকাশ্যে আসছে। এবার প্রকাশ্যে এল এক ছাত্রীকে করা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।

Advertisement

কী লিখেছিল চৈতন্যানন্দ? জানা গিয়েছে, ওই তরুণীকে পাঠানো চ্যাটে চৈতন্যানন্দ লেখে, ‘দুবাইয়ের এক শেখ যৌন সঙ্গী খুঁজছে। তোমার জানা কোনও বন্ধু রয়েছে? যে তাঁর যৌন সঙ্গী হতে পারে?’ উত্তরে ছাত্রী জানান, ‘না, এরকম কেউ নেই।’ চৈতন্যানন্দ লেখে, ‘এটা কীভাবে সম্ভব? তোমার কোনও সহপাঠী বা জুনিয়র?’ আবার অপর এক ছাত্রীকে পাঠানো মেসেজে চৈতন্যানন্দ লেখে, ‘বেবি গুড মর্নিং, কোথায় আছো? তুমি কি আমার উপর রাগ করেছ?’

রবিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ আগ্রার এক হোটেল থেকে ধরা পড়েছে দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকার শ্রী শারদা ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট নামে আশ্রমের ওই স্বঘোষিত ‘বাবা’। গত কয়েকদিন ধরেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী ওরফে স্বামী পার্থসারথি।

চৈতন্যানন্দ ওরফে পার্থসারথীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রথম হয়েছিল ২০০৯ সালে। সেবার তাঁর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ এবং প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে। পরে ২০১৬ সালেও এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছিল। এবার ফের অভিযোগ, এবং তা অনেক বড় আকারে। একে একে ১৭ মহিলা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই যে আশ্রমের সঙ্গে ওই ‘বাবা’ যুক্ত সেই শ্রী শ্রীঙ্গেরি মঠও বাবার সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেছে।

আশ্রমের পক্ষে পেশ করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী, যিনি স্বামী পার্থসারথী নামেও পরিচিত, তিনি এমন কিছু কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন যা বেআইনি, অনুচিত। আর সেই কারণেই পীঠের তরফে তাঁর সঙ্গে সমস্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।’ প্রথমে বাবা আদালতে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করে। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তারপর থেকেই সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অবশেষে রবিবার ভোর সাড়ে ৩টেয় ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইতিমধ্যেই তার ভলভো গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, গাড়িতে নকল নম্বর প্লেট লাগানো ছিল।

জানা গিয়েছে, ছাত্রীদের পাঠানো চৈতন্যানন্দের একাধিক মেসেজ পুলিশের হাতে এসেছে। আর সেগুলি দেখেই চমকে গিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এক ছাত্রীর দাবি, চৈতন্যানন্দ তরুণীদের বিভিন্ন আপত্তিকর প্রশ্ন করত। জিজ্ঞাসা করত, তাঁদের কতজন প্রেমিক রয়েছে? সঙ্গমের সময় তরুণীরা কি কন্ডোম ব্যবহার করেন? তরুণীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চৈতন্যানন্দ ‘বেবি’ বলে সম্মোধন করত বলে জানা গিয়েছে। স্বঘোষিত এই ‘বাবা’র বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে। সে প্রত্যেক ছাত্রীদের স্নানের সময় জানতে চাইত। এমনকী মহিলাদের শৌচালয়ে গোপন ক্যামেরাও লাগিয়ে রাখত বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর এক ছাত্রীর দাবি, চৈতন্যানন্দ বেশিরভাগ সময়ই মহিলাদের দেহের গড়ন, তাঁদের পোশাক এবং চুলের প্রশংসা করত। এরপরই তাঁদের দিকে ছুঁড়ে দিত কু-ইঙ্গিত। আরও এক ছাত্রী দাবি করেছেন, হোলির সময়ে চৈতন্যানন্দ প্রতিটি ছাত্রীর গালে, মুখে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে রঙ লাগাত। নির্দেশ ছিল, ছাত্রীদের মুখে সে-ই প্রথম রঙ লাগাবে। আর কেউ নয়। এখানেই শেষ নয়। নানা অছিলায় রাতে ছাত্রীদের নিজের কোয়ার্টারে ডেকে পাঠাত ওই ‘বাবা’। তারপর সে তাঁদের অশালীনভাবে স্পর্শ করত বলেও অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। আরও অভিযোগ, রাত বাড়লেই ছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা শুরু করত চৈতন্যানন্দ। সেখানে তরুণীদের একের পর এক কু-মন্তব্য করত দিল্লির ‘বাবা’। এই অভিযোগগুলি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ওই ‘বাবা’ পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ