Advertisement
Advertisement
Modi-Trump

‘দোস্ত দোস্ত না রাহা’, ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বে চিড়? মোদি বললেন ‘আমাকে খেসারত দিতে হবে’

২০১৯-এ টেক্সাসে ‘হাউডি মোদি’ সভায় ‘অব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান দিয়েছিলেন মোদি।

End of Friendship of President Donald Trump and PM Narendra Modi
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:August 7, 2025 2:01 pm
  • Updated:August 7, 2025 2:52 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাশাপাশি হাতে হাত ধরে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দু’জন। বক্তৃতায় ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন পরস্পরকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মৈত্রীর এমন ‘নির্দশন’ দেখা গিয়েছে অনেক বার। অতীতে ভোটে হেরে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও মোদিকে প্রশংসায় ভরান ট্রাম্প। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেও বলেছিলেন, ক্ষমতায় ফিরবে ‘আমার বন্ধু’ মোদিই। সেই বন্ধুত্বে কি এবার চিড় ধরল? কংগ্রেসের খোঁচা নয়, বাস্তবেই ‘দোস্ত, দোস্ত না রাহা? কেন ট্রাম্পের শুল্কবোমার পালটা বক্তব্যে ‘কৃষক-স্বার্থে’র পাশাপাশি ‘ব্যক্তিগত ক্ষতি’র কথা উল্লেও করলেন মোদি?

Advertisement

একদিকে ট্রাম্পের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি করে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন মোদি, অন্যদিকে কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বার মার্কিন রাষ্ট্রপতি হয়েছেন ট্রাম্প। ভারত, আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের মনে হয়েছিল আন্তর্জাতিক কূটনীতির দুনিয়ার দুই ‘মাচো হিরো’র বন্ধুত্ব জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র জয়-বিরুর বন্ধুত্বের মতোই দীর্ঘস্থায়ী হবে। এবং সুবিধা পাবে ভারত। বাস্তবে একাধিক যুদ্ধে বিধ্বস্ত বিশ্ব সম্পূর্ণ ভিন্নচিত্র দেখল। বিশ্ব বাণিজ্য এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, দুই ক্ষেত্রেই আমেরিকার প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে ভারতকে বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলা। বলা বাহুল্য, সেই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। অস্বস্তি বাড়ছিলই ‘বন্ধু’ মোদির।

পহেলাগাঁও হামলার পর অপরেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারত। বাণিজ্য চুক্তির শর্তে তৃতীয়পক্ষ হিসাবে ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন বলে বারবার দাবি করছেন ট্রাম্প। যা ভারতের দ্বিপাক্ষিক নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী অবস্থান। যতবার ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ করেছে দিল্লি, ততবার নতুন করে এশিয়ার দুই শক্তির যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ধনকুবের মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এখানেই না থেমে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ দুই দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে মোদির ‘বন্ধু’র মন্তব্য, ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভারত বর্তমানে রুশ তেল আমদানি করছে। তাই আমার মনে হয় ভারতের উপর আরও বেশি শুল্ক চাপানো দরকার।’

এরপরেই ‘বন্ধু’র সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খোলেন মোদি। তিনি বলেন, “কৃষকদের স্বার্থ আমাদের অগ্রাধিকার। ভারত কখনোই তার কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে মোদি আরও বলেন, “আমি জানি যে এর জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবেও বিরাট মূল্য চোকাতে হবে, কিন্তু আমি প্রস্তুত আছি।” যেহেতু দেশের স্বার্থ জড়িত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “ব্যক্তিগত মূল্য চোকানো” বলতে ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কথাই বোঝাতে চেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের হিউস্টনে ‘হাউডি মোদি’ সভায় প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়ের সামনে কূটনীতির বেড়া টপকে ‘অব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২০-র গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সফরে এসে গুজরাটের আমদাবাদে পুনর্নির্মিত মোতেরা ক্রিকেট স্টেডিয়াম (সর্দার পটেল স্টেডিয়াম) উদ্বোধনে গিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতে মোদি দাবি করেছিলেন, তিনি এবং ট্রাম্প মিলে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবেন। সেখানে শোনা গিয়েছিল ‘নমস্তে ট্রাম্প’ স্লোগানও। অবশেষে ‘জয়’ ও ‘বিরু’র সেই বন্ধুত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে চিড় ধরল!

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ