Advertisement
Advertisement
Ayodhya

ভক্তদের ‘জয় শ্রীরাম’ শব্দব্রহ্মে চাপা পড়ছে ‘ওদের’ যন্ত্রণা

কার সাধ্য জিজ্ঞেস করে, 'রাজা তোর কাপড় কোথায়?'

Euphoric dose at Ayodhya nowadays suppress the agony। Sangbad Pratidin

ছবি: পিটিআই।

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:January 19, 2024 6:28 pm
  • Updated:January 19, 2024 6:38 pm  

সুলয়া সিংহ, অযোধ্যা: ‘রাস্তাজুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। শঙ্খ ঘোষের কবিতার কিছু শব্দ বর্তমান অযোধ্যায় অতিবাস্তব। সত্যিই ধুলো পড়া অযোধ্যাকে ধুয়েমুছে সাফ করার কাজ চলছে জোরকদমে। দোকানপাট রঙিন করে দেওয়া থেকে পরিবেশবান্ধব ফেরি, যান পরিষেবা- সর্বত্রই অভিনবত্বের ছোঁয়া। রামলালার ‘ঘর পাওয়া’র আনন্দে উন্নয়নও ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু ওই যে কথায় বলে, কিছু পেলে কিছু হারাতেও হয়। তেমনই শহরের উন্নয়নের স্বার্থে মুখে আঙুল দিতে হয়েছে ওঁদের। প্রশাসনের খড়্গহস্তের সামনে ওঁরা নতজানু। ওঁরা মানে যাঁরা রামকে অযোধ্যা ফেরাতে জলের দরে নিজেদের ভিটেমাটি বিকোলেন।

Advertisement

শহর আর রামমন্দির ঘুরে দেখার জন্য যে গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল, তার চালক কথা বলার মাঝে মাঝেই গেয়ে উঠছেন, ‘এক হি নাড়া, এক হি নাম, জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম।’ তার পরই বিড়বিড় করে অনেক মন্ত্র বলছেন। তবে এ ছবি শুধু ওই গাড়ির নয়, গোটা অযোধ্যা জুড়েই। রাম নামে মগ্ন ভক্তরা। রামলালার অদ্ভুত এক ঘোর গ্রাস করেছে গোটা শহরকে। আর এই শব্দব্রহ্মেই চাপা পড়ছে তাঁদের গলা। যাঁরা জানুরা, গাঞ্জা, নন্দনপুর, ফিরোজপুর, সারেথির মতো এলাকায় খানিকটা সস্তায় জমি কিনেছিলেন। কেউ কেউ বাড়িও তৈরি করে ফেলেছিলেন। কিন্তু যে মুহূর্তে ঘোষণা হয়, এই এলাকাতেই তৈরি হবে বিমানবন্দর, তখনই সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন তাঁরা। আর বাস্তবে হলও তেমনটা।

[আরও পড়ুন: ২৫ জানুয়ারি দেশজুড়ে পালিত হবে জাতীয় ভোটার দিবস, জানেন দিনটির গুরুত্ব?]

৮২১ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে অযোধ্যার (Ayodhya) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অযোধ্যা জেলার মোট ৮টি গ্রামকে এর জন্য খালি করা হয়। সেখানকার বাসিন্দা এবং জমির মালিকদের থেকে জমি কিনে নেয় সরকার। কিন্তু ন্যায্যমূল্যে নয়। অন্তত এমনটাই দাবি করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানালেন, “ওই এলাকায় রাস্তার ধারেই ছিল আমার জমি। ফলে যাদের একটু ভিতর দিকে জমি, তাদের থেকে আমার জমির বাজার দর অনেকটাই বেশি ছিল। এমনিতে যেটা বিক্রি করলে পেতাম ১৪-১৫ লাখ টাকা, সেখানে ১ লক্ষ ২০ হাজার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।”

সরকার জমি কিনে নেওয়ার পরই অযোধ্যা উন্নয়ন পরিষদের কাছে আড়াইশোরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল। সঠিক ক্ষতিপূরণ যাতে মেলে, তার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন স্থানান্তরিত হওয়া বাসিন্দারা। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। ফলে অনেককেই দূরের কোনও ছোট গ্রামে গিয়ে নতুন করে সংসার পাততে হয়েছে। নতুন করে শুরু হয়েছে পেট চালানোর লড়াই। তাহলে বিক্ষোভ দেখালেন না কেন? সঙ্গে সঙ্গে উত্তর এল, “কোনও লাভ হবে? এখানে থেকেই তো রোজগার করতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললে যদি জেলে যেতে হয়। মামলা-মকদ্দমা করব, জেল খাটব, নাকি সংসার টানব!” সত্যিই তো, যেখানে রাম নামেই সব সমস্যা দূর হবে, সেখানে কার সাধ্য জিজ্ঞেস করে, ”রাজা তোর কাপড় কোথায়?”

[আরও পড়ুন: বিচারপতি মামলা: সংশোধিত নয়, অভিষেককে নতুন করে আবেদনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement