সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশটা ভারত, তবে তার ভেতরেই ঢুকে ছিল ‘পাক পাক গন্ধ’! স্বাধীনতার ৭৯ বছরে অবশেষে সেই গন্ধ কাটিয়ে ঝাড়া হাত-পা হল গুজরাট। বহু দশক পর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন গুজরাটের পাকিস্তান মহল্লার নাম বদলে হল হিন্দুস্থানি মহল্লা। সুরাট পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদির হাত ধরে মহল্লার সামনে বসল নয়া সাইনবোর্ড।
সালটা ১৯৪৭। দেশভাগের পর তখন আলাদা স্বীকৃতি পেয়েছে পাকিস্তান। তবে সাম্প্রদায়িক হিংসা তখন চরম আকার নিয়েছে। সেই সময় সিন্ধি অঞ্চল (বর্তমানে পাকিস্তান) থেকে বহু হিন্দু শরণার্থী ভারতে চলে আসেন। সেই সময় থেকে গুজরাটের সুরাটের অন্তর্গত রামনগর এলাকায় কলোনি তৈরি করে বসবাস করছেন সিন্ধির শরণার্থীরা। তাঁরা আসার পর রাতারাতি ওই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় ‘পাকিস্তান মহল্লা’। লোকমুখেই ছড়িয়ে পড়ে এই নাম। এরপর অবশ্য সময় গড়িয়েছে। কংগ্রেস জমানা পেরিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে গুজরাটের ক্ষমতার রাশ হাতে নিয়েছে বিজেপি। তবে দেশজুড়ে নাম বদলের হিড়িকেও পাকিস্তান মহল্লার নাম বদল হয়নি।
অবশেষে স্থানীয় বিধায়কের উদ্যোগে স্বাধীনতার ৭৯ তম বছরে পাকিস্তানের নাম মুছে হিন্দুস্থানি মহল্লা হল এই অঞ্চল। প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, প্রায় ৬০০ পরিবারের বাস এই মহল্লার। কিন্তু অঞ্চলের নাম পাকিস্তান মহল্লা হওয়ায় নানা ভাবে অস্বস্তিতে পড়তে হত এখানকার বাসিন্দাদের। সেই নাম অবশেষে মুছে যাওয়ায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। নাম বদলের ফলে এখানকার মানুষের আধার, ভোটার, রেশন কার্ডের মতো নথির নামও বদলের প্রয়োজন হবে। মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য ওই এলাকায় সরকারের তরফে ক্যাম্প বসানো হবে। সেখানেই স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের প্রয়োজনীয় নথির ঠিকানা থেকে ‘পাকিস্তানী মহল্লা’ নাম বদলে ‘হিন্দুস্থানি মহল্লা’ করবেন।
অবশ্য এই নাম বদলের প্রক্রিয়া এই প্রথমবার নয়, অতীতেও একবার এই অঞ্চলের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা হয়েছিল। সিন্ধি স্বাধীনতা সংগ্রামীর সম্মানে এই অঞ্চলের নাম হেমু কলোনি চক রাখার চেষ্টা হয়। তবে সার্বজনীনভাবে সে নাম গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। অবশেষে স্বাধীনতার ৭৯ বছরে পাকিস্তান মুছে হিন্দুস্থানি হলেন গুজরাটের এই এলাকার সিন্ধি শরণার্থীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.