বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: নেই বিদ্যুৎ। টেলিফোন পরিষেবা। ধসে অবরুদ্ধ চলাচলের রাস্তা। বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, সেতু। উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার লাচেন, চাটেনে এই ছবি দেখা যাচ্ছে। সিকিম সরকার সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। উত্তর সিকিমকে ‘বিপর্যয় কবলিত’ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। হড়পা বান ও ভূমিধসজনিত কারণে উদ্ভুত ওই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এখনও নিখোঁজ ছয় সেনা। আটকে থাকা পর্যটক ও সেনার পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে এদিন হেলিকপ্টারে নামিয়ে আনা হয়েছে। আরও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। নতুন করে আরও একাধিক জায়গায় ভূমিধস নেমেছে বলে খবর। তিস্তায় লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। এদিনও বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে খরস্রোতা তিস্তা।
মঙ্গলবার সকালে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে বাগডোগরা বায়ুসেনা ছাউনি থেকে দুটি হেলিকপ্টার সিকিমের পকিয়ং বিমানবন্দরে নামে। প্রাথমিকভাবে ডিজাস্টার রেস্পন্স ফোর্সের সদস্যরা বিধ্বস্ত চাটেন সেনা ছাউনি থেকে নিখোঁজ ছয় সেনার খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাবে। পাশাপাশি চাটেন থেকে লাচেনে হেঁটে যাতায়াতের পথ বের করবে। এদিন ভূমিধসে বিধ্বস্ত চাটেন থেকে ৩৪ জনকে উদ্ধার করে পাকিয়ং বিমানবন্দরে নামানো হয়। উদ্ধার করা লোকজনের মধ্যে জখম সেনা, তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং এলাকায় আটকে পড়া পর্যটকরা রয়েছে। টেলিফোন এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হেলিকপ্টারে ভারত সঞ্চার নিগম এবং বিদ্যুৎদপ্তরের কর্মীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী-সহ নামানো হয়েছে লাচেনে। সেখানে আটকে রয়েছে ১১৫ জন পর্যটক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লাচেন থেকে চাতেন পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধার সম্ভব নয়। চাতেনে নামিয়ে তাঁদের পকিয়ং বিমানবন্দরে উড়িয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে লাচুংয়ে ১,৩৫০ জন পর্যটককে সোমবার গ্যাংটকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
মঙ্গলবার সামান্য হলেও আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে বলে খবর। তবে আরও বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি কী হবে? সেই নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজদের মধ্যে আছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রীতপল সাধু, তার স্ত্রী বায়ু সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার আরতি বি সাধু, মেয়ে আমাইরা সাধু, সুবেদার ধরমবীর, সিপাই সাইনুদ্দিন পিকে এবং সুনীলাল মোচারি। ইতিমধ্যে ধস বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল মীনাওয়ালা এবং ত্রিশক্তি কর্পসের জেনারেল অফিসার। সিকিম সরকারের মুখ্যসচিব আর তেলাঙ্গ উত্তর সিকিমের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা ভূমিধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। মঙ্গন থেকে গ্যাংটক হয়ে ফোডং রোডে যানবাহন চলাচল সামান্য শুরু হয়েছে। মঙ্গন-চুংথাং হয়ে টুং নাগা নতুন রাস্তা অবরুদ্ধ। মঙ্গন থেকে চুংথাং হয়ে সঙ্কলং রোড বন্ধ। চুংথাং থেকে লাচেন একাধিক জায়গায় অবরুদ্ধ। লাচেন থেকে থাঙ্গু রোড জিমায় অবরুদ্ধ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে লাচেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.