বুলডোজারে ভাঙা হচ্ছে মুসলিম ধর্মগুরুর বাড়ি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম নির্দেশকে কাঁচকলা দেখিয়ে বুলডোজারের রক্তচক্ষু অব্যাহত যোগীরাজ্যে। এবার অবৈধ ধর্মান্তকরণের অভিযোগ তুলে উত্তরপ্রদেশের এক মুসলিম ধর্মগুরুর বিলাসবহুল বাংলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হল বুলডোজারে। অভিযুক্ত ওই ধর্মগুরুর নাম জালালউদ্দিন ওরফে ঝাঙ্গুর বাবা। বাড়ি ভাঙার বিষয়ে এবারও চেনা অঙ্কে যোগীর প্রশাসনের দাবি, ওই বাংলো অবৈধ উপায়ে নির্মাণ করা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কতোয়ালির উতরৌলায় মধপুরে অবস্থিত জালালউদ্দিনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। বাড়িটি নিতু নবীন রোহরা ওরফে নাসরিনের স্ত্রী নবীন রোহরার নামে নথিভুক্ত। সরকারের দাবি, জালালউদ্দিন এই বাড়ি নির্মাণের অর্থ দিয়েছিলেন। প্রশাসনের দাবি, সরকারি জমিতে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। বাড়ি খালি করার জন্য এর আগে ৩ বার তাঁকে নোটিসও দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। জালালউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিতু, নবীন ও তাঁর মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেন। এরপর তাঁরা মধপুরে এসে বসবাস শুরু করে। জালালউদ্দিন তাঁদের জন্য এই বাড়ি তৈরি করে দেন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই জালালউদ্দিন, তাঁর পুত্র মেহবুব, নিতু ও নবীনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি রাজস্ব বিভাগের তরফে জালালউদ্দিনের সম্পত্তির তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এই সম্পত্তি হামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডিও। সেই মামলার তদন্তে নেমেই এই পদক্ষেপ।
প্রশাসনের দাবি, এই বাড়ি থেকে অবৈধ ধর্মান্তকরণের র্যাকেট শুরু করেন জালালউদ্দিন। লখনউ থেকে মুম্বই পর্যন্ত সক্রিয় ছিল এই চক্র। জালালউদ্দিনের লোকেরা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে, টোপ দিয়ে, তো কখনও কখনও ভয় দেখিয়ে মুসলিম ধর্মে আনা হত। এই কাজের মাধ্যমে চলত বিপুল টাকার লেনদেন। জালালউদ্দিনের ফাঁদে পড়ে কিছু মানুষ মুসলিম হওয়ার পর ফের হিন্দু ধর্মে ফিরে আসেন, এরপরই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা। এরপরই শুরু হয় ধড়পাকড়। গোটা ঘটনার তদন্তে নামে এটিএস। জালালউদ্দিনের সঙ্গীদের মাধ্যমে এই গ্যাংয়ের বাকিদের গ্রেপ্তার করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুলিশ।
যদিও শীর্ষ আদালতের একের পর এক কড়া নির্দেশের পরও এই বুলডোজার অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দেশজুড়ে একের পর এক বুলডোজার অভিযানের জেরে শীর্ষ আদালতের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগাম নির্দেশিকা ছাড়া কোনওভাবেই বুলডোজার অভিযান চালানো যাবে না। যে নির্মাণকে অবৈধ বলে ভাঙা হচ্ছে তার মালিককে আদালতে যাওয়ার সময়টুকু দিতে হবে। রাষ্ট্রের কোপে পড়লেই ইচ্ছেমতো কোনও কিছু ভেঙে ফেলা যায় না। তবে এখানে শীর্ষ আদালতের সেই সব নির্দেশ পালন করা হয়েছিল কিনা তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.