সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের (Iran-Israel Conflict) জেরে ভারতের আকাশে সিঁদুরে মেঘ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই যুদ্ধ যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে সেক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানির অন্যতম পথ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। যদি তেমনটা হয় তাহলে ভারতের জন্য সমূহ বিপদের আশঙ্কা। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি সে পথে না গড়ালেও সূত্রের খবর, বিপদের আঁচ পেয়ে বিকল্প খোঁজা শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে ভারতের নজর দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলির দিকে।
ভারত সরাসরি ইরান থেকে খুব বেশি তেল আমদানি না করলেও, ভারতকে নিজের চাহিদার ৮৫ শতাংশের বেশি তেল বাইরে থেকে কিনতে হয়। এই আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশ হরমুজ প্রণালী (বাণিজ্য পথ) দিয়ে আসে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ বাণিজ্য এই পথ দিয়ে হয়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই যুদ্ধের প্রভাব যদি কোনওভাবে হরমুজ প্রণালীর উপর পড়ে সেক্ষেত্রে ভারতের বাণিজ্য বিরাট বাধার সম্মুখীন হবে। ইরাক, সৌদি আরব, আরব আমিরশাহী থেকে আসা তেলের সাপ্লাই বাধাপ্রাপ্ত হবে। ইরান আগেই এই বাণিজ্যপথ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যদি তেমনটা হয় সেক্ষেত্রে পেট্রোল, ডিজেল-সহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম মারাত্মকভাবে বাড়বে। সরাসরি এর প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। যেহেতু ইরান এই রুট নিয়ন্ত্রণ করে, সেক্ষেত্রে এই পথ বন্ধ হলে ভারতের ৪০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল ও ৫৪ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ প্রভাবিত হবে।
জানা যাচ্ছে, ভারতের মোট আমদানিকৃত তেলের ৩৫ শতাংশ রুশ থেকে কেনে। এবং ৪০ শতাংশের বেশি তেল আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে হরমুজ প্রণালী হয়ে। বাকি তেল আসে আফ্রিকা, আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশগুলি থেকে। গত এপ্রিল মাসে ১২ শতাংশ তেল আমদানি করা হয়েছিল আফ্রিকার দেশগুলি থেকে। মে মাসে সেটা কমিয়ে আনা হয় ৫ শতাংশে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনওভাবে যদি হরমুজ প্রণালী ইরান বন্ধ করে সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলি থেকে তেল কেনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ভারত। যদিও তাতে ভারতের তেলের ঘাটতি পূরণ হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। ইকোনমিক্স টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনওভাবে ইরান এই পথ বন্ধ করে গোটা বিশ্ব তেল ও জ্বালানি গ্যাসের সমস্যায় পড়বে। যতই বিকল্প প্রস্তুতি নেওয়া হোক না কেন। তেলের আমদানিতে ঘাটতি দেখা দিলে তেলের দামও ব্যাপক বাড়বে। গোটা বিশ্বের অর্থনিতি ধাক্কা খাবে।
দেশের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের মতে, বর্তমানে দেশের ৭৪ দিনের মতো তেল মজুত রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও একটি ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে তেল মজুত রয়েছে ৯.৫ দিনের। যদিও এই যুদ্ধ যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে সেক্ষেত্রে আমদানি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে যা বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.