ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল। নয়া ‘আয়কর বিল ২০২৫’ লোকসভা থেকে প্রত্যাহার করে নিল মোদি সরকার। ১৯৬১ সালের পুরনো আয়কর আইন বদলে তা আরও সহজ করে তুলতে আনা হচ্ছিল বিলটি। তবে বিরোধীদের আপত্তির জেরে সিদ্ধান্ত বদল করল সরকার। বিলে বেশ কিছু বদল ঘটিয়ে ১১ আগস্ট নতুন করে লোকসভায় পেশ হবে বিলটি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে লোকসভায় পেশ হয়েছিল এই বিলটি। তবে শুরু থেকেই এই বিলের কিছু অংশ নিয়ে আপত্তি জানানো হয় বিরোধীদের তরফে। সংসদ ওয়াকআউট করে বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি, আরএসপির সাংসদ এনকে প্রেমচন্দন জানান, নতুন এই বিল পুরনো বিলের তুলনায় আরও বেশি জটিল। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বিলটিকে ‘যান্ত্রিক’ বলে তোপ দাগেন। এই অবস্থায় বিলটিকে পাঠানো হয় সিলেক্ট কমিটিতে। সেখানে বিজেপি নেতা বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বে এই কমিটি বিলটিতে বেশকিছু সংস্করণ করার পর আগামী ১১ আগস্ট বিলটি পেশ করা হবে সংসদে।
জানা যাচ্ছে, নয়া আয়কর বিলে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে এর কর স্ল্যাব নিয়ে। আয়কর বিভাগ জানিয়েছে, নয়া বিলে কোনও কর স্ল্যাব পরিবর্তনের কোনও প্রস্তাব নেই। এর উদ্দেশ্য ভাষা সরল করা, অপ্রয়োজনীয় বিধানগুলি সরানো ও কর দাতাদের স্বস্তি দেওয়া। প্রস্তাবিত ‘আয়কর আইন ২০২৫’-এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল, ১) নতুন আয়কর বিলে আনা হচ্ছে ‘আয়কর বছরে’র পদ্ধতি। এর ফলে ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’ এবং ‘প্রিভিয়াস ইয়ারে’র সমস্যা থেকে মুক্তি হবেন গ্রাহকরা।
২) অর্থবর্ষে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। অর্থবর্ষ শুরু হয় ১ এপ্রিল এবং শেষ হয় ৩১ মার্চ।
৩) নতুন বিলে বেশ কিছু ‘সেকশন’-এর নম্বরে পরিবর্তন আসতে চলেছে। যেমন, বর্তমান আয়কর আইন অনুযায়ী ‘আয়কর ট্যাক্স রিটার্ন ফাইলিং’ সেকশন ১৩৯-এর অন্তর্গত। নয়া কর কাঠামো ১১৫বিএসি সেকশনের মধ্যে পড়ে। বদল আসতে পারে এই সেকশন নম্বরগুলিতে।
৪) নয়া আয়কর বিলে ‘রেসিডেন্সি ল’-তে পরিবর্তন আসছে না। আগের মতোই থাকছে ‘রেসিডেন্সি ল’।
৫) আয়কর আইনকে সহজ করতে বেশ কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি আয়কর আইন যেখানে ৫৩৬টি সেকশন, ১৬টি শিডিউল নিয়ে ৬০০-রও বেশি পাতার ‘মহাভারত’। নয়া আইন সেখানে ২৯৮ সেকশন এবং ১৪ শিডিউলের বলে জানা গিয়েছে।
৬) আয়কর দাতাদের আইন বোঝা ও ব্যাখ্যার সুবিধার জন্য নতুন সংস্করণে দীর্ঘসূত্রিতা বর্জন করা হচ্ছে। একই কারণে ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’ এবং ‘প্রিভিয়াস ইয়ারে’র জায়গায় ‘ট্যাক্স ইয়ারে’র ভাবনা আনা হচ্ছে।
৭) টিডিএস সংক্রান্ত যাবতীয় সেকশনগুলিকে একজোট করে একটিমাত্র ক্লজের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আয়কর ব্যবস্থাকে সহজ করতেই এই প্রস্তাব করা হয়েছে।
৮) ‘আইটিআর ফাইলিং ডেডলাইন’, ‘ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাবস’ এবং ‘ক্যাপিটাল গেইনসে’র মধ্যে কোনও পরিবর্তন আসছে না।
৯) আয়কর বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি সূত্রে খবর, ১ এপ্রিল, ২০২৬ থেকে নতুন আয়কর আইন কার্যকর হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.