দুর্গম এলাকায় যাচ্ছেন সেনা জওয়ানরা।
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পর্যটকদের উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছিল। উত্তর সিকিমের ভূমিধস বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। সিকিম পর্যটন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সিএস রাও জানান, উত্তর সিকিমে আটকে পড়া ১৭০০ জনের বেশি পর্যটককে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। মঙ্গনের জেলাশাসক অনন্ত জৈন জানান, বিচ্ছিন্ন লাচেন ও চাটেনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। নিখোঁজ সেনা জওয়ানদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে। শনিবার সকালে প্রায় দেড় হাজার কেজি ত্রাণ সামগ্রী এবং শুকনো খাবার নিয়ে পাকিয়ং গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর থেকে উড়েছে বায়ু সেনাবাহিনীর এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। ফেরার সময় ওই হেলিকপ্টারে চাটেন সেনা ছাউনি থেকে কিছু জওয়ানকে ত্রাণ ও পুনরুদ্ধার কাজে সাহায্যের জন্য পাঠানো হয়।
শনিবার সকালে পকিয়ং গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দর থেকে বায়ু সেনাবাহিনীর তিনটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার উড়ে চাটেন সেনা ছাউনিতে নামে। হেলিকপ্টারগুলোতে ১৩০০ কেজি ত্রাণ সামগ্রী এবং শুকনো খাবার, ওষুধ, পানীয় জল পাঠানো হয়। ফেরার সময় ৭৬ জন সেনা জওয়ান উড়িয়ে পকিয়ং গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দরে নামানো হয়। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর সিকিমে ভূমিধস এবং ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলিতে পৌঁছতে বায়ু সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
মঙ্গনের জেলাশাসক অনন্ত জৈন জানান, পর্যটকদের সরিয়ে আনার কাজ সফলভাবে শেষ। কিন্তু চাটেন সেনাছাউনিতে ভয়াবহ ভূমিধসের পর ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। ওই এলাকার সামরিক ছাউনিগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেনাছাউনি কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সামরিক বাহিনীর প্রচুর গাড়ি দুমড়ে মাটি ও পাথরে তলিয়েছে। সেগুলো উদ্ধারের পাশাপাশি নিখোঁজ জওয়ানদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।” সিকিম প্রশাসনের কর্তারা জানান, শুক্রবার পর্যন্ত আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করে আনাই মূল লক্ষ্য ছিল। এখন ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের কাজ চলছে। শুক্রবার অভিযানে ১৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা-সহ ৪৪ জন পর্যটককে একাধিক হেলিকপ্টারে চাটেন থেকে উড়িয়ে আনার পর উদ্ধার অভিযানপর্ব শেষ হয়।
সিকিম রাজ্য পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী টিটি ভুটিয়ালে জানান, বর্ষার উত্তর সিকিমে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উত্তর সিকিম ছাড়া রাজ্যের অন্য অংশেও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ চলছে। পর্যটন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সিএস রাও জানান, সিকিমের ২০০টি পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২৫-৩০টি উত্তর সিকিমে রয়েছে। পশ্চিম সিকিমের ইউকসোম এবং গেইজিংয়ের মতো জনপ্রিয় জায়গাগুলোতে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। এদিকে লাচুং থেকে ইউমথাং, জিরো পয়েন্ট যোগাযোগ কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। লাচেনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে সেনাবাহিনী এবং বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। বিশেষ করে ডেডকোলা এবং চুংথাংয়ের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনুমান, গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলি সম্পূর্ণভাবে চালু হতে আরও দু’তিনদিন সময় লাগতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.