Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jagdeep Dhankar

সংবিধানে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দে বিতর্ক, সংঘের সুরে সুর মেলালেন উপরাষ্ট্রপতি!

'এই পাপ করা হয়েছিল এমার্জেন্সির সময়', তোপ ধনকড়ের

Jagdeep Dhankar backs call to drop secular, socialist from Preamble
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:June 28, 2025 8:27 pm
  • Updated:June 28, 2025 8:27 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিবরাজ, হিমন্ত, আরএসএসের পর এবার খোদ দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের গলায় সংবিধান বদলের সুর! শনিবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ধনকড়। তাঁর দাবি, “ভারতের সংবিধান ছাড়া অন্য কোনও সংবিধানের প্রস্তাবনা কখনও পরিবর্তন হয়নি। কারণ সংবিধানের প্রস্তাবনা অপরিবর্তনযোগ্য। অথচ তা পরিবর্তনের পাপ করা হয়েছিল এমার্জেন্সির সময়।”

ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ধনকড় বলেন, “প্রস্তাবনা হল সংবিধানের প্রাণ। আমাদের সংবিধান প্রণেতারা এখানে যে শব্দগুলি প্রয়োগ করেছিলেন তা ভেবেচিন্তেই করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশবাসীর মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তখনই সংবিধানের প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয় ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘অখণ্ডতা’ এর মতো শব্দগুলি।” এই ঘটনাকে দেশের সংবিধানের একটি ক্ষত বলে উল্লেখ করে ধনকড় বলেন, “বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশে এমনটা ঘটেনি। ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে এটা হয়েছিল। জনগণের সম্মতি ছাড়া, কোনও আলোচনা ছাড়া সংবিধানের আত্মাকে বদলে দেওয়া হয়েছিল।”

ধনকড় আরও বলেন, “১৯৭৫ সাল ভারতের গণতন্ত্রে এক অন্ধকার সময়। সেই সংবিধানের প্রস্তাবনায় থাকা ‘আমরা ভারতের জনগণ’ ছিল জেলবন্দি। তাহলে ভেবে দেখুন এই প্রস্তাবনা বদল কত বড় প্রতারণা। সংসদ তখন হয়ে উঠেছিল কাঠের পুতুল, নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বিচারবিভাগ। এই অবস্থায় সংবিধান সংশোধন ছিল অবৈধ আচরণের মতো।” উল্লেখ্য, ধনকড়ের এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি আরএসএস সংবিধানের প্রস্তাবনা বদলের দাবিতে সরব হয়েছে। আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে জানিয়েছেন, ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দু’টি যুক্ত করা হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। যে সময় দেশে জরুরি অবস্থা জারি ছিল। ওই শব্দ দু’টি আম্বেদকর লিখিত সংবিধানে ছিল না। তাই এবার সেগুলি বাদ দেওয়া হোক। এই পরিস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতির এহেন মন্তব্য আরএসএসকে সমর্থন তো বটেই সংবিধান বদলের পক্ষে জোরালো দাবি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের আনা সংশোধনীর ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় যুক্ত হয়েছিল দু’টি শব্দ। যার ফলে ভারত ‘সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’ থেকে ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’-এ পরিণত হয়। এর আগের বছর দেশব্যাপী জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা। সেই সময় নির্বাচনে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এবং ছয় বছরের জন্য তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করেছিল। এরপরই জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সাংবিধানিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতা স্থগিত হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা শুরু হয়। এবছর ৫০ বছর পূর্ণ করল এমার্জেন্সি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায়’ বলে এমার্জেন্সির সমালোচনা করে কংগ্রেসকে তোপ দেগেছিলেন। প্রতি বছর এই দিনটা ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে বিজেপি।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement