বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: আজ, শনিবার কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ। বুথ ফেরত সমীক্ষায় কর্ণাটকের ফলাফল ত্রিশঙ্কু হতে পারে বলে আভাস মিলতেই রাজনৈতিক শিবিরে তৎপরতা তুঙ্গে। মসনদ দখলের লক্ষ্যে কংগ্রেস, বিজেপি দু’পক্ষই নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে।
এর মধ্যেই ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার দল জেডিএস। ফের তাঁরাই কিং-মেকারের ভূমিকা পালন করবেন বলে দাবি করেছেন দলের সভাপতি দেবগৌড়া-পুত্র এইচ ডি কুমারস্বামী। এদিকে, আজ উত্তরপ্রদেশ পুরভোটেরও ফল প্রকাশিত হবে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় তথা চূড়ান্ত পর্বের ভোটগ্রহণ হয় গৌতম বুদ্ধ নগর, মেরঠ, গাজিয়াবাদ, শাহজাহানপুর, বরেলি, আলিগড়, কানপুর এবং অযোধ্যার ৩৮টি জেলায়। ৪ মে প্রথম দফার ভোট হয়েছিল। বিভিন্ন মেয়র, কর্পোরেটর, নগর পঞ্চায়েত, নগরপালিকা পারিষদ ও চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হবেন। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে মূল যুযুধান দু’পক্ষ বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির কাছে এই ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হলেও প্রকৃত ছবিটা পেতে রাত হয়ে যেতে পারে।
অতীতে তিনবার রাজ্যে কিং-মেকারের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে জেডিএস-কে। দু’বার কংগ্রেস, একবার বিজেপির সঙ্গে থেকে সরকার তৈরিতে সাহায্য করেছে তারা। মুখ্যমন্ত্রীর পদও লাভ করেছেন কুমারস্বামী। ফল প্রকাশের আগেই কুমারস্বামী দাবি করেছেন, কংগ্রেস-বিজেপি দু’পক্ষই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পাশাপাশি, তাঁরা কাদের সঙ্গে যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন কুমারস্বামী। তাঁর বক্তব্য, সময়মতো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। যদিও পারিবারিক বিবাদে জর্জরিত কুমারস্বামীর দল এবার কতটা ভাল ফল করবে, তা নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে কার্যত ভর্ৎসিত হল কংগ্রেস। কর্ণাটকের ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবহার করা হয়েছে বলে কংগ্রেস দাবি করেছিল। ৮ মে এই মর্মে চিঠি দেওয়া হয় কমিশনকে। দাবি খারিজ করে এর সপক্ষে কী প্রমাণ রয়েছে, তা প্রকাশ্যে জানানোর ‘অনুরোধ’ করেছে কমিশন। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাকে পালটা চিঠিতে কর্ণাটকে নয়া ইভিএম ব্যবহার হয়েছে বলে জানানো হয়।
২২৪ আসন সম্বলিত কর্ণাটক বিধানসভার ভোটে বিজেপির পক্ষে ম্যাজিক ফিগার, ১১৩ পার করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলেই অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষায় উঠে এসেছে। অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু তারা যদি ম্যাজিক ফিগার পার করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা দখলের রাস্তা কঠিন হয়ে পড়বে। ৯০টি আসন পেলে তারাই সরকার গঠন করবে এবং জেডিএস তাদের পাশে থাকবে বলেই ঘনিষ্ঠমহলে দাবি করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কর্ণাটকে এবার নিজেদের ক্ষমতায় ম্যাজিক ফিগার পেরনো কঠিন, সেই হিসাব আগে থেকেই করে ফেলেছে বিজেপি। সেইমতো নির্বাচনের আগে থেকেই জেডিএসের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নির্বাচনে তাদের নানাভাবে সাহায্য করার কাজও সেরে রেখেছে তারা। আবার দলের যে সমস্ত বিধায়ক টিকিট না পেয়ে কংগ্রেস বা নির্দল হিসাবে লড়াই করেছেন, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে বিজেপি। সেই তুলনায় কর্ণাটকে কংগ্রেস এবার অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী। ম্যাজিক ফিগারের থেকেও বেশি সংখ্যক আসন মিলবে বলেই কংগ্রেস শিবিরের দাবি। ভোটের ফল প্রকাশের পর দক্ষিণের এই রাজ্যে নতুন করে কোনও খেলা শুরু হতে চলেছে কি না, সেদিকে নজর থাকবে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.